ঢাকার কেরানীগঞ্জে ছাদের দেয়াল ভেঙে পরে ৯মাসের শিশু আবরার আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার (২২ নভেম্বর) রাজধানীর আলী আজগর হাসপাতালে মারা যায়।

কেরানীগঞ্জের আব্দুল্লাহপুরের কলাকান্দি এলাকায় আবরার নানা বাড়িতে দেয়াল ধসের ঘটনা ঘটে। তবে আবরারের দাদা আয়নাল আহমেদের দাবি এটি পরিকল্পিত হত্যা।

আবরারের চাচাতো মামা রবিন জানায়, আবরারের বাবার নাম মো. পারভেজ ও মায়ের নাম সুপ্তি বেগম। আবরারের দাদার বাড়ি ঢাকার দক্ষিণ দনিয়া কুদার বাজার আদর্শ সড়ক কদমতলী, ঢাকা, এলাকায়। আবরারের বাবা বিদেশ কাতার থাকার কারণে গত তিনমাস ধরে আবরারের নানা বাড়ি দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের আব্দুল্লাহপুরে কদমপুর কলাকান্দী মা সুপ্তি বেগম সাথে বসবাস করছিলো।

গত রবিবার বিকাল ৫ টার দিকে, আবরারকে নিয়ে ছোট খালা বাড়ির (২য় তলা) ছাদে যায়। এ সময় আবরারের মা ঘরে ছিলো। ছাদে উঠে আবরারকে ছাদের আড়াই ফিট উচু বাউন্ডারি করা ওয়ালে বসালে আবরার দেয়াল থেকে পড়ে যায়। আবরার পড়ার সাথে সাথে দেয়াল ওধসে তার শরীরে পড়ে যায়, দেয়াল ধসে পড়া ইটের নিচে পড়ে চাপা খেয়ে শিশুটি গুরুতর আহত হয়।

সাথে সাথে নিচে এসে খবর দিলে আমরা ওকে দ্রুত উদ্ধার করে, পুরান ঢাকার আলী আজগর হাসপাতালে নিয়ে যাই। হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় ২২ নভেম্বর দুপুর ১২ টার দিকে ও মারা যায়। দেয়ালটি অনেক পুরাতন ছিল বলে টেম্পার ছিলো না, তাই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।

এদিকে আবরারের দাদা আয়নাল আহমেদ জানান, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যা। আড়াই ফুট দেয়াল থেকে পড়ে কেউ মারা যাওয়ার কথা নয়। আবরারের দাদা আরও জানান, আমার ছেলে পারভেজের সাথে সুপ্তির বিয়ে হয় বছর দুয়েক আগে। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই ওদের বনিবনা হচ্ছিল না। আমার ছেলে ৮ মাস আগে কাতার চলে যায়। পরে ছেলের বউ ওর বাবার বাড়িতে চলে যায়। ছেলের সাথে ঝগড়ার কারণে ও আমাদের বাসায় থাকতে চাইতো না। সম্পর্ক ছাড়াছাড়ির পর্যায়ে চলে গিয়েছিলো। পরে বিষয়টি মিমাংশা করার জন্য এবং ও যেন আমাদের বাসায় আসে এ জন্য আগামী ২/৩ দিন পর এলাকার মাদবরসহ কয়েকজনকে নিয়ে বসার কথা ছিলো। এর আগেই ওরা এমন ঘটনা টি ঘটালো। আমি এর সুষ্ঠ বিচার চাই। আমার নাতিকে মেরে ফেলছে ওরা। দেয়াল থেকে পড়ার নাটক সাজিয়েছে।

আবরারের দাদীর আয়শা বেগম বলেন, আমার আদরের ধন দাদু ভাইকে ওরা হত্যা করে নাটক সাজিয়ে দেয়াল থেকে পড়ার কাহিনী বানিয়েছে। আমি আমার দাদু আবরার হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।

এ বিষয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার এসআই সজিব জানান, আজ দুপুরে আজগর আলী হাসপাতাল থেকে মৃত্যুর খবর পেয়ে আমি হাসপাতালে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়না তদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করি। রিপোর্ট হাতে পাবার পরে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোন মামলা দায়ের হয়নি।

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ জানান, এ ঘটনার বিষয় আমি শুনেছি আবরার এর দাদী আয়শা বেগম একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।