মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

  ২২ নভেম্বর, ২০২১

বড়লেখায় হত্যা মামলার প্রধান আসামির যাবজ্জীবন

মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন আলম হত্যা মামলার প্রধান আসামি কাজল মিয়াকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

সোমবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহরিয়ার কবির এ রায় দেন। এ সময় বিচারক শাহরিয়ার কবির উপস্থিত আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এদিকে এই রায়ে সন্তুষ্ট নন বলে জানিয়েছেন নিহত আলমের মামাতো ভাই জাফর আহমদ।

তিনি সোমবার (২২ নভেম্বর) বিকেলে জানান, কাজল প্রকাশ্য দিবালোকে আমার ভাইকে ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে। কাজল আদালতে ১৬৪ ধারায় হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দীও দিয়েছেন। মামলার সব স্বাক্ষীরা আদালতে এসে আসামির বিরুদ্ধে স্বাক্ষ্য প্রদান করেছেন। আমরা আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড আশা করেছিলাম। এই রায়ে আমরা সন্তুষ্ট নই। পূর্ণাঙ্গ রায়ের অনুলিপি হাতে পাওয়ার পর আমরা হাইকোর্টে আসামির মৃত্যুদণ্ডের জন্য আপিল করবো।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদী পক্ষের আইনজীবী খন্দকার সাইফুর রহমান রানা ও আইনজীবী ইমরান আহমদ জানান, আদালত সংশ্লিষ্ট সাক্ষ্য প্রমাণ বিবেচনা করে আলম আলম হত্যা মামলার প্রধান আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। রায়ের সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর সকালে ইউপি সদস্য মাসুক আহমদকে সঙ্গে মোটরসাইকেলযোগে আলীমপুর গ্রামে একটি জানাযার নামাজে অংশগ্রহণের জন্য রওয়ানা দেন উত্তর শাহবাজপুর ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান আবুল হোসেন আলম। বিজিবি ক্যাম্পের কাছে পৌঁছালে আগে থেকে সেখানে ওতপেতে থাকা কাজল মিয়া চলন্ত মোটরসাইকেলের পেছনে বসা আবুল হোসেন আলমের বাম হাতে কোপ দিয়ে মোটরসাইকেলসহ তাকে রাস্তায় ফেলে উপর্যুপরি কুপিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।

স্থানীয়রা আলমকে দ্রুত উদ্ধার করে বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত আবুল হোসেন আলম সায়পুর গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে।

এ ঘটনায় নিহত আলমের বাবা খলিলুর রহমান বাদী হয়ে কাজল মিয়াকে প্রধান এবং আরো কয়েক জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে বড়লেখা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্তের পর তদন্তকারী কর্মকর্তা ২০১৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রধান আসামী কাজল মিয়াসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

পরবর্তীতে মামলাটি মৌলভীবাজার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়। সম্প্রতি এই মামলায় মোট ২৮ জনের স্বাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। গত ২৫ অক্টোবর সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে আলম হত্যা মামলার আসামি কাজল মিয়াকে ৩৪২ ধারায় পরীক্ষা করেন। পরে বাদীপক্ষের আইনজীবী আসামি কাজলের জামিন বাতিলের জন্য আদালতে আবেদন করেন। শুনানী শেষে বিচারক কাজল মিয়ার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বড়লেখা,যাবজ্জীবন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close