জেলেদের মারধর ও মোবাইল কেড়ে নেয় মিয়ানমার নৌবাহিনী
সেন্টমার্টিনের অদূরে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার সময় বাংলাদেশের ৪ ট্রলারসহ ২২ জেলেকে মিয়ানমার নৌবাহিনী ধরে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর ও মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে ২ ট্রলারের জেলেদের বেশি মারধর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ট্রলারের মালিক নরুল আমিন ও মোহাম্মদ হোসাইন। তবে আরেকটি ট্রলারের মালিক মো. আজিম জানিয়েছেন তার জেলেদের কম মারধর করলেও ৬টি মোবাইল কেড়ে নেয়।
রবিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে ট্রলারের মালিক নুরুল আমিন জানান, আমার ট্রলারের ৪ জন স্টাফকে অনেক বেশি মারধর করেছে মিয়ানমার নৌবাহিনী। এসময় তাদের প্রত্যেকের হাতে থাকা মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। আহত জেলেরা এখনো হাসপাতালে রয়েছে।
ট্রলারমালিক মো. আজিম বলেন- আমার ট্রলারের জেলেরা জানায়, মিয়ানমার নৌবাহিনী সদস্যরা তাদেরকে ডাকার সঙ্গে সঙ্গে কথামতো নির্দেশ পালন করায় বেশি আঘাত বা মারধর করেনি। জনপ্রতি দুয়েক বেত বেত্রাঘাত করে মোবাইলগুলো কেড়ে নিয়ে তাদের বড় জাহাজে তুলে ফেলে।
তিনি আরও বলেন, দুটি ট্রলারের জেলেরা কথামতো সাড়া না দিয়ে পালিয়ে আসার চেষ্টা করলে তাদের ধাওয়া করে ধরে বেধড়ক মারধর করার খবর জানতে পারি।
এর আগে, শনিবার (২০ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় মিয়ানমার নৌবাহিনীর বেশ কয়েকজন সদস্য স্পিডবোটে এসে এসব জেলে ও ট্রলারগুলো বেঁধে নিয়ে যায়। পরে দীর্ঘ ১৩ ঘণ্টা আটকে রাখার পর শর্ত দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়। কোস্টগার্ডের প্রচেষ্টায় ট্রলার ও জেলেদের ছাড়িয়ে আনা হয়।
জানা যায়, বাংলাদেশ জলসীমা পার হয়ে মিয়ানমারের জলসীমায় গিয়ে মাছ শিকারের অপরাধে তাদের আটক করে নিয়ে যায় ওই দেশের নৌবাহিনীর সদস্যরা। পরে সেদেশের দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। উভয় পক্ষের দীর্ঘক্ষণ আলোচনা চলে। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের কার্যক্রম শেষে তাদের ফেরত আনা হয় বলে কোস্টগার্ড জানায়।
সেন্টমার্টিনের ইউপি চেয়ারম্যান নুর আহমদ বলেন, দীর্ঘ ১৩ ঘণ্টা আটকে রাখার পর দুয়েকটি ট্রলারের মাঝিমাল্লাদের ব্যাপক মারধর করে মিয়ানমার নৌবাহিনীর সদস্যরা। তাদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তবে ভাগ্য ভালো বলে কারো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু এভাবে অসহায় জেলেদের মারধর করে তাদের মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ন্যক্কারজনক কাজ করেছে তারা। এ ব্যাপারে আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।