ঢাকার ধামরাইয়ে স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে নিপা আক্তার (২৪) নামে এক সন্তানের মা নিজ ঘরে ফ্যানের সঙ্গে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় ধামরাই থানার পুলিশ স্বামী ও তার শ্বশুরকে আটক করেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ধামরাই থানার ওসি আতিকুর রহমান।

শনিবার (২০ নভেম্বর) দিনগত রাতে ধামরাই পৌরসভার আমবাগান এলাকার মৃত আবুল হাসিমের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত নিপা আক্তার ও তার স্বামী, শ্বশুর হাসিমের বাড়ির ভাড়াটিয়া ছিলেন। নিহত নিপা আক্তারের বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় থানার পাইপাড়া গ্রামের সবজাল মির্জার মেয়ে।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, বছর দুয়েক আগে মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় থানার শালজানা গ্রামের নজরুল ইসলাম খান স্ত্রী, ছেলে শরীফুল ইসলাম খান শরীফ পুত্রবধূ নিপা আক্তারসহ সপরিবারে ঢাকা জেলার ধামরাই পৌর শহরের কুমড়াইল আমবাগান মহল্লার মৃত আবুল হাসেম আলীর বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করে। মাঝে মধ্যেই মোটা অংকের যৌতুকের জন্য অমানুষিক জুলুম নির্যাতন চালানো হতো ওই গৃহবধূর উপর। এরই জেরে শনিবার রাতে অতিষ্ঠ হয়ে ওই গৃহবধূ আত্মহত্যা করেন।

নিহত নিপার বাবা সবজাল মির্জা বলেন, আমার মেয়ের স্বামী শরীফ খানসহ পরিবারের সবাই মোটা অংকের যৌতুকের জন্য আমার মেয়ের ওপর প্রায়শই অমানুষিক জুলম নির্যাতন চালাত। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে আমি দু’দফায় ৭ লাখ টাকা দিয়েছি ওদেরকে। আবার নতুন করে আরও দুই লক্ষ টাকার জন্য আমার মেয়ের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। আমি ওই টাকা দিতে অপারগতা শিকার করলে আমার মেয়ের ওপর ফের আগের মতো অমানুষিক জুলুম নির্যাতন শুরু করে তারা। পরে আমার মেয়ে এত জুলুম নির্যাতন সইতে না পেরে শেষমেষ আত্মহত্যা করে। কিভাবে আত্মহত্যা করেছে তাও স্পষ্ট নয়। ময়না তদন্তের পর আমার মেয়ের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। আমি খবর পেয়ে এসে দেখি আমার মেয়ের মরদেহ মেঝেতে পড়ে আছে। স্থানীয়রা বলেন, অহরহ ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকতো এ যৌতুকের জন্য।

ধামরাই থানার উপ-পরিদর্শক মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে নিহত ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছি। ছুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে ময়না তদন্তের জন্য রাজধানীর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে স্বামী-শ্বশুরসহ দু’জনকে আটক করা হয়েছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।