মো. সানোয়ার হোসেন, মির্জাপুর (টাঙ্গাইল)

  ২৭ অক্টোবর, ২০২১

পোস্ট অফিসের দরজায় কড়া নাড়ছেন শত শত গ্রাহক!

পোস্ট অফিসে নিজেদের গচ্ছিত এ্যাকাউন্টে রাখা টাকা উত্তোলন করতে পারছেন না শত শত গ্রাহক। এনিয়ে যতো দিন পার হচ্ছে গ্রাহকদের মধ্যে টাকা না পাওয়ার হতাশা দিন দিন বেড়েই চলছে। টাকার জন্য দিনের পর দিন পোস্ট অফিসের দরজায় কড়া নাড়ছেন অনেকেই, ভোগান্তির শিকার হয়ে হতাশা নিয়ে বাড়ি ফিরছেন বয়স্ক থেকে শুরু করে মধ্যবয়সী নারী-পুরুষ।

যদিও পোস্ট অফিসের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা বলছেন এটি সাময়িক সমস্যা, পোস্ট অফিসের সকল কার্যক্রম অনলাইনে প্রক্রিয়াধীন থাকায় এ ধরণের সমস্যা হচ্ছে। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর পোস্টঅফিসে গিয়ে গ্রাহকদের ভোগান্তির এমন চিত্র দেখা গেছে।

অফিস সূত্রে জানা যায়, টাঙ্গাইল জেলায় মাসে বরাদ্দ প্রায় ১শ থেকে ২শ কোটি টাকা। কিন্তু উপজেলা পর্যায়ে অনলাইনে কার্যক্রম চালু না হওয়ায় টাকা জমা নেওয়া বন্ধ থাকায় চাহিদা বেড়ে দাড়িয়েছে ৪০০-৫০০ কোটি টাকা। এই ঘাটতির কারণেই গ্রাহকসেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে পোস্ট অফিস কর্মকর্তাদের। আবার এর কারণে প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকারও হচ্ছেন শত শত গ্রাহক। এদিকে পোস্ট অফিসে সঞ্চয়পত্রের টাকা আছে ১২ কোটি। যে কারণে প্রতিদিন ১ কোটি করে এর দায় বাড়ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, শতাধিক নারী-পুরুষ তাদের গচ্ছিত টাকা উত্তোলন করতে পোস্ট অফিসে ভিড় জমায়। কিন্তু চাহিদানুযায়ী টাকা না থাকায় সকল গ্রাহকদের টাকা দিতে পারছেন না পোস্ট অফিস কর্তৃপক্ষ। এতে অনেকেই উপজেলা পোস্ট অফিসের কর্মকর্তাদের দোষারোপ করলেও কর্মকর্তারা বলছেন- তাদের কিছুই করার নেই। কিন্তু অনেক গ্রাহকই তাদের গচ্ছিত টাকা উত্তোলন করতে না পারায় বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখিন হচ্ছে বলে জানান একাধিক ব্যক্তি।

ভাওড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা সুইটি আক্তার প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, মেয়ের বিয়ের টাকার জন্য ৫ মাস ধরে ঘুরছি। কিন্তু তারা শুধু বলেন, সামনের সপ্তাহে আসেন। একদিন পর আসেন এভাবে দিনের পর দিন ঘুরাচ্ছে, চিন্তায় আর পারছিনা। দ্রুত এর প্রতিকার চাই। পাশ্ববর্তী ফতেপুর ইউনিয়নের থলপাড়া গ্রামের আরেক গ্রাহক পাপ্পু সিকদার বলেন, বিগত ৩ মাস যাবৎ টাকার জন্য আসতেছি। দেই, দিবো, কাল আসেন বলে তারা টাকা দিচ্ছেনা। এভাবে আর কতোদিন?

এ ব্যাপারে উপজেলা পোস্ট মাস্টার আব্দুর রাজ্জাক প্রতিদিনের সংবাদকে জানান, পোস্ট অফিসের সকল কাজ অনলাইনে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য গত জুন মাস থেকে গ্রাহকদের কাছ থেকে সরাসরি টাকা জমা বন্ধ হওয়ায় এই প্রথম এ ধরণের সমস্যা হচ্ছে। টাকা জমা নেওয়া বন্ধ থাকলেও গ্রাহকসেবা দেওয়ার কারণে চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছেনা। যে কারণে গ্রাহকরা অফিসে ভিড় জমাচ্ছেন। আমরা আমাদের চাহিদার কথা উল্লেখ করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি। টাকার বরাদ্দ বেশি দিলে ও অনলাইনে কার্যক্রম চালু হলে দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করছি।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
মির্জাপুর,টাঙ্গাইল
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close