নোয়াখালী প্রতিনিধি

  ২৩ অক্টোবর, ২০২১

বিভাগ বাস্তবায়নের দাবিতে উত্তাল নোয়াখালী!

নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়নের দাবিতে নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদী টাউনহল মোড়ে বিশাল মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে নোয়াখালীর বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী ও সামাজিক সংগঠন।

শনিবার (২৩ অক্টোবর) সকাল ১১টা থেকে ১ টা পর্যন্ত এই মানবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ নোয়াখালীর বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করে।

এ সময় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের প্রাচীন জেলার মধ্যে নোয়াখালী অন্যতম। ১৮২১ সালে সৃষ্ট এ জেলায় জন্মেছেন বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমীন, সাবেক স্পীকার মালেক উকিলসহ অসংখ্য গুণী মানুষ। রয়েছে আলাদা ভাষা, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য। জেলার দক্ষিণে বঙ্গোপাসাগরের কোল ঘেঁষে গড়ে উঠছে বাংলাদেশের মত আরেকটি ভূখণ্ড। তাই সবদিক বিবেচনা করে যেন প্রাচীন এই জেলাকে নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষীপুর, চাঁদপুর, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাডিয়াসহ নোয়াখালীকে ১০ম প্রশাসনিক বিভাগ হিসেবে বাস্তবায়ন করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে জোর দাবি জানান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন সামাজিক সংগঠক মিজান রহমান, মোরশেদ আলম, সাইফুর রহমান রাসেল, মিজান রহমান, মুনিম ফয়সাল, নোয়াখালী টিভির পরিচালক হামিদ রনি, পারভেজ মোল্লা, সাইফুর রহমান, তাহসান তুহিন, শাহাদাত শাকিল, আকলিমা খানম ঐশি, নুসরাত জাহান, সুমন চন্দ্র ভৌমিকসহ আরো অনেকে।

মানববন্ধনে বক্তারা প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ‘‘নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষীপুর, চাঁদপুর, কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া এই ছয় জেলার মানুষের সংস্কৃতি, কৃষি ও যাতায়াত সুবিধা বিবেচনা করে নোয়াখালী বিভাগ প্রতিষ্ঠা করলে অত্র অঞ্চলের প্রায় পৌনে দুই কোটি মানুষের চাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্য, প্রশাসনিক কার্যক্রম অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করতে সক্ষম হবে। আর এই ছয় জেলার মানুষের আঞ্চলিক ভাষা, কৃষ্টি-কালচারও প্রায় একই রকম বিধায় নোয়াখালী বিভাগ গঠন অত্যন্ত যুক্তিসংগত বলে অত্র অঞ্চলের বিজ্ঞজনেরা মনে করেন।

আর এতে নোয়াখালী বিভাগ গঠিত হলে এটি হবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বিভাগ। নোয়াখালীর ভাষাগত বৈশিষ্ট যার সীমানা বৃহত্তর নোয়াখালী অঞ্চল ছাড়িয়ে কুমিল্লা ও চাঁদপুর জেলার তিন ভাগের দুই ভাগ এলাকার লোকজন নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলে। এ জেলায় জন্মেছেন বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে শাহাদত বরণকারী সেনানী বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রহুল আমিন, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক স্পীকার ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মালেক উকিলসহ অনেক ব্যক্তিত্ব, যারা নিজ কর্মে কীর্তিমান।

নোয়াখালীর রয়েছে অনন্য ভাষাগত বৈশিষ্ট যার সীমানা বৃহত্তর নোয়াখালী অঞ্চল ছাড়িয়ে কুমিল্লা ও চাঁদপুর জেলার তিন ভাগের দুই ভাগ এলাকার লোকজন নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলে। তাছাড়া, নোয়াখালী জেলার সাথে বাকি পাঁচ জেলা অর্থাৎ ফেনী, লক্ষীপুর, চাঁদপুর, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সমূহের সাথে সড়ক ও রেলপথে চমৎকার যোগাযোগ ব্যবস্থা বিদ্যমান রয়েছে বিধায় ব্রিটিশ আমল হতে রয়েল জেলা নামে খ্যাত নোয়াখালীকে বিভাগ গঠন অত্যান্ত যুক্তিসংগত দাবি।

নোয়াখালীর দক্ষিণে রয়েছে নয়নাভিরাম সৌন্দর্য্যমণ্ডিত দ্বীপ নিঝুম দ্বীপ ও সাগরকন্যা হাতিয়া দ্বীপ। আর তাই নোয়াখালীকে বিভাগ করা হলে অত্র উপকূলীয় অঞ্চল কেন্দ্রিক অর্থনৈতিক জোন গড়ে উঠবে বলে নোয়াখালী বিভাগ গঠনের নানা যুক্তি তুলে ধরেন।

পরে মানববন্ধন শেষে র‌্যালি নিয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়কে প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে গিয়ে মানববন্ধনের সমাপ্তি ঘটে।

মানববন্ধন থেকে জানানো হয় দ্রুত নোয়াখালীকে বিভাগ ঘোষণা না করা হলো জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধনসহ কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা আসতে পারে।

নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে, নোয়াখালী ইয়ুথ ফোরাম, নোয়াখালী বিভাগ অনলাইন গ্রুপ, নিরাপদ নোয়াখালী চাই, আলোকিত মানবিক অর্গানাইজেশন, ষ্টুডেন্টস অব নোয়াখালী, হাতিয়া স্টুডেন্টস ফোরাম, সার্ভিস ফর হিউমান বিয়িং অর্গানাইজেশন, নোয়াখালী সাইবার ওয়ারিয়র্স।

উল্লেখ্য, নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়নের জন্য র্দীঘ ১৫ বছর ধরে নোয়াখালীর জনসাধারণ ঢাকা-চট্রগ্রামসহ জেলায় বহুবার আন্দোলন, সংগ্রাম, মানববন্ধন, স্মারকলিপি প্রদান, গণসাক্ষরসহ দেশে বিদেশে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বিভাগ,নোয়াখালী
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close