সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

  ১৪ অক্টোবর, ২০২১

ভূমিহীন দাবি করে ৪৩৯ একর জমি ও ঘের দখল

ভূমিহীন দাবি করে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার খলিশাখালিতে ১ হাজার ৩২০ বিঘা (৪৩৯.২০ একর) জমি ও মৎস্য ঘের দখল করেছে একদল দুর্বৃত্ত। সম্পত্তি উদ্ধার করতে প্রকৃত রেকর্ডীয় মালিকরা প্রশাসনের কর্তাদের কাছে গিয়েও কোনো ফল হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন।

তাদের দাবি, ভূমিদস্যুরা ওই সম্পত্তি খাস বলে দাবি করে ফিল্ম স্টাইলে অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে দখলে নিয়েছে।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের কর্তা-ব্যক্তিরা অবশ্য বলছেন, ওই সম্পত্তি সম্পূর্ণ ব্যক্তি মালিকানাধীন এবং এখানে কোন খাস জমি নেই।

সরেজমিনে দেখা যায়, রাস্তায় উপর বাঁশ ফেলে রাস্তা বন্ধ করে দেয় নামধারী ওইসব ভূমিহীনরা। নিজেদের রক্ষা করতে এসব নামধারী ধূর্ত ভূমিদস্যুরা ইতোমধ্যে ওই স্থানকে ‘শেখ মুজিবনগর খলিশাখালী আবাসন কেন্দ্র’ নাম ঘোষণা করে সেখানে লাল পতাকা তুলে দিযেছে।

জমির মালিক আইডিয়াল পরিচালক ডা. মো. নজরুল ইসলাম, কাজী গোলাম মোরশেদ ও মো. আনছার আলীসহ কয়েকজন জানান, খলিশাখালিতে রেকর্ডীয় ও লীজকৃত ৩০টি খণ্ডে বিভক্ত বিস্তীর্ণ মৎস্য ঘের ও জমি দখলে নিয়েছে স্থানীয় কিছু ভূমিদস্যু।

তাদের অভিযোগ, ওইসব ভূমিদস্যু জেলা ও জেলার বাইরের বিভিন্ন এলাকা থেকে কিছু লোককে জড়ো করে তাদের ভূমিহীন দাবি করে তাদের জমি ও ঘের দখলে নিয়েছে।

তারা বলেন, গত ১০ সেপ্টেম্বর রাত আনুমানিক ২টার দিকে মৎস্য ঘেরের কর্মচারীদের মারধর করে অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত ওইসব ভূমি দস্যু ঘের ও জমি দখলে নিয়ে সেখানে তারা অবস্থান করছে। দখলের পর তারা মৎস্য ঘের থেকে প্রায় ৪ কোটি টাকার মাছ লুট এবং ঘেরের বাসাবাড়ি ভাংচুর করেছে।

ক্ষতিগ্রস্তরা অভিযোগ করেন, তাৎক্ষণিক প্রতিকার চেয়ে দেবহাটা থানা পুলিশকে অবহিত করলেও তারা কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। নিরুপায় হয়ে প্রকৃত জমির মালিকরা গত ১২ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরা কোর্টে মামলা করলে আদালত মামলা গ্রহণ করে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন।

এদিকে ঘের ও জমি দখলে রাখা হাসিনা বেগম, মাজেদা বেগম, আনোয়ারা বেগম, শাহিনা পারভীনসহ অনেকেই জানান, এই সম্পত্তি পুরাটাই খাস জমি। তাদের কোনও জায়গা জমি না থাকায় তারা এই খাস জমি দখল করে সেখানে বসবাস করছেন।

সাতক্ষীরা জেলা ভূমিহীন সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ জানান, ইতোমধ্যে খলিশাখালীতে জমি দখলে নেতৃত্বদানকারী নামধারী ভূমিহীনদের ভূমিহীন সমিতি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তিনি এ সময় তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ন কবির জানান, খলিশাখালীতে ৪ শতাধিক একর জমি জবর দখলের খবর আমাদের নজরে এসেছে। এক পক্ষ আবেদনও করেছেন। আমরা নথি ও কাগজ পত্র যাচাই বাছাই করে দেখলাম এই সম্পত্তি পুরোটাই ব্যক্তি মালিকানাধীন। তবে, ৪ শতাধিক একর এর মধ্যে ১০/১২ একর জমি খাস রয়েছে সেটি খালের মধ্যে, আর বাকীটা সম্পূর্ণই ব্যক্তি মালিকানাধীন।

তিনি আরো জানান, বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে দ্রুতই উভয় পক্ষকে নিয়ে বসা হবে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ভূমিহীন,ভূমিদস্যু
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close