বেনাপোল প্রতিনিধি

  ১২ অক্টোবর, ২০২১

বাবার স্বপ্ন পূরণে মসজিদের ছাদ করে দিলেন পান বিক্রেতা

যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার শংকরপুর গ্রামের পান ব্যবসায়ী ইউনুস আলী গাজী। মৃত বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে দীর্ঘ ৩ বছর পান বিক্রির টাকা সঞ্চয় করে ও স্ত্রীর গহণা বিক্রি করে ৮ লাখ টাকা দান করলেন মসজিদের ছাদ নির্মাণ কাজে। ইউনুস আলী গাজীর এই মহৎ দান নিয়ে খুশি তার পরিবারের লোকজনসহ এলাকাবাসী।

সোমবার (১১ অক্টোবর) সকালে মসজিদের ছাদ ঢালাইয়ের কাজ শুরু করে সন্ধ্যায় শেষ হয়।

জানা যায়, ঝিকরগাছা উপজেলার শংকরপুর ইউনিয়নের দক্ষিণপাড়ার রাস্তার পাশে একটি পুকুর ছিল। সেটি এলাকাবাসীর উদ্যোগে ও জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় ভরাট করে প্রথমে টিনের চাল ও টিনের বেড়া দিয়ে মসজিদ তৈরি করে এলাকাবাসী।

পরে এলাকাবাসীর সার্বিক সহযোগিতায় পাকা মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর করা হয়। কিন্তু মসজিদের ছাদ নির্মাণ করা যাচ্ছিল না। এ খবর জানতে পেরে মৃত বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে শংকরপুর দক্ষিণপাড়ার মৃত কাশেম গাজীর ছেলে ইউসুস আলী গাজী এগিয়ে আসেন। তার আয়ের একাংশের টাকা সঞ্চয় করে রেখে দীর্ঘ ৩ বছর পরে জামে মসজিদের নির্মাণ কাজের চার হাজার স্কয়ার ফিটের পুরা ছাদ ঢালাইয়ের খরচ নগদ ৮ লাখ টাকা দান করেন তিনি।

পান বিক্রেতা ইউনুস আলী গাজী জানান, আমি একজন সাধারণ পান বিক্রেতা। মাঠে কিছু জমি চাষাবাদও করি। আমার ব্যবসা ও জমির ধান বিক্রি করে ৩ বছর জমিয়ে ৮ লাখ টাকা মসজিদের ছাদের জন্য অনুদান দিয়েছি। এটা আমার পিতার রুহের মাগফিরাতের জন্য। এ অনুদানে আমিসহ আমার পরিবারের সবাই খুশি।

ইউনুস আলী গাজীর স্ত্রী হামিদা খাতুন বলেন, আমার স্বামী মসজিদের জন্য যে অনুদান দিয়েছেন এতে আমরা আনন্দিত ও খুশি। আমার স্বামী আমার শশুরের মৃত্যুর পর যে নিয়ত করেছিলেন সেটা পূরণ হয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ। এই কাজে আমার সন্তানেরাও খুশি।

মসজিদ কমিটির সভাপতি মোহাম্মাদ আলী জানান, এখানে একটি পুকুর ছিল স্থানীয় লোকজনের উদ্যোগে মাটি ভরাট করে মসজিদ নির্মাণ করা হয়। মসজিদের ছাদ ঢালাইয়ের জন্য ৮ লাখ টাকা ব্যয়ভার ইউনুস আলী গাজি ও তার পরিবার গ্রহণ করেছেন। তার পিতা ও পরিবারের যারা মারা গেছেন তাদের রুহের মাগফিরাতের জন্য এই অনুদান তিনি দিয়েছেন। তার হাত দিয়েই আজ ছাদের ঢালাইয়ের কাজ উদ্বোধন করা হয়।

স্থানীয় সংবাদকর্মী মিজানুর রহমান জানান, একজন সাধারণ দিন মজুর, পান বিক্রেতা ইউনুস আলী গাজি টাকা জমিয়ে ও নিজের স্ত্রীর গহনা বিক্রি করে এই করোনাকালীন সময়ে ৮ লাখ টাকা দিয়ে মসজিদের ছাদ ঢালাই দিয়েছেন। এলাকার মানুষের কাছে এ ঘটনা বিস্ময়কর সৃস্টি করেছে। ঢালাই কাজের মোনাজাতের সময় তিনি কেঁদে ফেলেছেন। তার পরিবারের সবাই এই মহৎ কাজে অনেক খুশি।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বেনাপোল,যশোর,ঝিকরগাছা
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close