উত্তম কুমার মোহন্তৃ, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
নিজের বাল্যবিয়ে ঠেকিয়ে সন্মাননা পেল মোনালিশা
করোনাকালীন কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে যখন বাল্যবিয়ের হিড়িক, তখন বড়লই উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী মোনালিশা আক্তার তার নিজের বাল্যবিয়ে নিজেই প্রতিরোধ করেছিলেন।
এমন সাহসিকতার পুরস্কার হিসেবে বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংবর্ধিত হলেন এই শিক্ষার্থী।
মোনালিশা চড়-বড়লই মৌজার আমছা বাজার এলাকার দিনমজুর মফিজুল হকের মেয়ে। মা মুক্তা বেগম একজন গৃহিনী।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর মোনালিশা স্কুল থেকে বাড়িতে গিয়ে দেখেন তাকে দেখতে অপেক্ষায় আছেন বরপক্ষের লোকজন। তখন সে বাল্যবিয়ের বিরোধিতা করে ১৮ বছর বয়সের আগে বিয়ে করবেনা বলে পরিবারকে জানান।
তারপরও তাকে জোর করে বরপক্ষের সামনে নিয়ে যায় পরিবারের সদস্যরা। সেখানেও সে ১৮ বছরের আগে বিয়ে করবে না বলে বরপক্ষকে জানিয়ে দেয়। পরের দিন স্কুলে এসে প্রাধান শিক্ষকে বিষয়টি জানালে শিক্ষকরা তার বাড়িতে গিয়ে বাবা-মাকে বাল্য বিয়ের কুফল জানান। তারপরই পরিবার বিয়েটি ভেঙে দেয়।
তার এই সাহসিকতার পুরস্কার হিসেবে তাকে সংবর্ধনা দিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন। ফুলবাড়ী উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে আজ বেলা ১১টায় ফুলবাড়ী বালিকা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের হলরুমে মোনালিশাকে সংবর্ধনা ও তার হাতে সম্মাননা স্মারক ক্রেস্ট তুলে দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুমন দাস।
এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম রব্বানী সরকার। তিনি ব্যক্তিগত তহবিল থেকে মোনালিশাকে প্রতিমাসে ১ হাজার টাকা করে পড়ালেখার খরচ প্রদানের আশ্বাস দেন।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন-উপজেলা আ'লীগের সভাপতি আতাউর রহমান শেখ, উপজেলা মাধ্যমিক অফিসার আব্দুল হাই,মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সোহেলী পারভীন, অফিসার ইনচার্জ রাজীব কুমার রায়, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মজিবর রহমান, জছিমিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবেদ আলী খন্দকার, বড়লই উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সোবহানী আঙ্গুর, ভাঙ্গামোড় দাখিল মাদ্রাসার সুপার ইসমাইল হোসেন সাংবাদিক আঃ আজিজ মজনু। এসময় উপস্থিত ছিলেন,ফুলবাড়ী উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি উওম কুমার মোহন্ত, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমসহ-আরো অনেকে।