কক্সবাজার প্রতিনিধি

  ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১

আদালতে ১৫ আসামি

সিনহা হত্যা মামলার চতুর্থ দফা সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার চতুর্থ দফা সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে কারাভ্যানে করে ১৫ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। সাক্ষ্যগ্রহণ চলবে বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত।

এর আগে তৃতীয় ধাপে সাক্ষ্যগ্রহণের শেষ দিনে সাক্ষ্য দিয়েছেন সার্জেন্ট আয়ুব আলী, সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. মোহাম্মদ শাহীন আব্দুর রহমান চৌধুরী ও হাফেজ সালেহ আহমেদ।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলাটির রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম।

গত ৫ সেপ্টেম্বর থেকে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত টানা চারদিন দ্বিতীয় দফা ও ২০ সেপ্টেম্বর থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত টানা তিনদিন তৃতীয় দফায় সাক্ষ্যগ্রহণ হয়।

এর আগে প্রথম দফায় ২৩ থেকে ২৫ আগস্ট মামলার ১নং সাক্ষী ও বাদি শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস এবং ২নং সাক্ষী ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সাহেদুল ইসলাম সিফাতের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করেন কক্সবাজার জেলা দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মাদ ইসমাঈলের আদালত।

এনিয়ে তিন ধাপে মামলার বাদী ও সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌসহ এ মামলায় ৮৩ সাক্ষীর মধ্যে তিন দফায় আদালতে মোট ১৪ জন সাক্ষ্য দিলেন। তাদের জেরাও শেষ করেছে। আসামি পক্ষের আইনজীবীরা।

পিপি ফরিদুল আলম জানান, ‘আজ মঙ্গলবার ভিকটিম সাক্ষী তথা ওসি প্রদীপ গংয়ের অত্যচার-নির্যাতনে যারা ভুক্তভোগী ছিল তাদের জবানবন্দির মাধ্যমে চতুর্থ দফা সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হচ্ছে এবং কিছুক্ষণের মধ্যে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাঈলের আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ চলবে।

তিনি আরও জানান, তৃতীয় দফা সাক্ষগ্রহণ শেষে বিচারক মোহাম্মদ ইসমাঈল চলতি মাসের ২৮ এবং ২৯ তারিখ মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছিলেন। ধার্য তারিখ অনুযায়ী আজ চতুর্থ ধাপে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গতবছর ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর মেরিনড্রাইভ চেক পোস্টে গুলি করে হত‌্যা করা হয় সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে।

এ ঘটনায় সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস ৫ অগাস্ট ওসি প্রদীপ, পরিদর্শক লিয়াকতসহ ৯ জন পুলিশ সদস্যকে আসামি করে আদালতে মামলা করলে আদালত মামলার তদন্তভার দেন র‌্যাবকে।

তাদের মধ্যে ৭ জন পরদিন কক্সবাজারের আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। সিনহা হত্যার ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলার ৩ জন সাক্ষী এবং শামলাপুর চেকপোস্টের দায়িত্বরত আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ানের (এপিবিএন) ৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। টেকনাফ থানার সাবেক কনস্টেবল রুবেল শর্মাকেও গ্রেপ্তার করা হয়।

এ মামলায় ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা র‌্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. খায়রুল ইসলাম।

মামলায় গ্রেপ্তার ১৪ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। তাদের মধ্যে ওসি প্রদীপ ও কনস্টেবল রুবেল ছাড়া ১২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

এই ১৪ জনের বাইরে টেকনাফ থানার সাবেক এএসআই সাগর দেবকে অভিযোগপত্রে আসামি করা হয়। গত ২৪ জুন দুপুরে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে তিনিও আত্মসমর্পণ করেন।

এদিকে সিনহা হত্যা মামলাটি বেআইনি ও অবৈধ দাবি করে ৪ অক্টোবর মামলার প্রধান আসামি লিয়াকতের আইনজীবী মাসুদ সালাহ উদ্দিন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। কিন্তু ওই মামলার বিশেষ কোনো অগ্রগতি এখনও পর্যন্ত লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
কক্সবাজার,মেজর সিনহা,হত্যা মামলা,চতুর্থ দফা সাক্ষ্যগ্রহণ,আদালত,১৫ আসামি
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close