বেনাপোল প্রতিনিধি

  ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১

ফলক এক জায়গার রাস্তা নির্মাণ অন্য জায়গায়

যশোরের শার্শা উপজেলার তেবাড়িয়া গ্রামের গ্রামীণ একটি কাঁচা রাস্তা পাকা করা নিয়ে ব্যাপক জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। বরাদ্দকৃত অর্থ দিয়ে যে রাস্তাটি পাকা হওয়ার কথা সেটি না হয়ে অন্য একটি রাস্তা পাকা করায় জনদুর্ভোগসহ নানান জটিলতা দেখা দিয়েছে।

জেলা পরিষদের অর্থায়নে এবং ডিহি ইউপি চেয়ারম্যানের সার্বিক তদারকিতে রাস্তাটি পাকা হলেও বরাদ্দকৃত রাস্তাটি কাঁচা থেকে যায়। ফলে কিভাবে রাস্তাটি পাকা কাজ উলোটপালোট হলো সে বিষয়ে কারোরই জানা নেই বলে জানান এলাকাবাসী। এ কারণে ডিহি ইউপি চেয়ারম্যানের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন ভুক্তভোগী গ্রামবাসী। কেউ কেউ বলেন এলাকার মেম্বার ও চেয়ারম্যান মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে রাস্তা পাকাকরণে কাজে অনিয়ম করেছে।

সরেজমিনে তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের বরাদ্দকৃত তেবাড়িয়া গ্রামের সালামের বাড়ি হতে আমজাদের বাড়ি পর্যন্ত ৩ শ ৫০ ফুট কাঁচা রাস্তা পাকাকরণের জন্য বরাদ্দ পায় উপজেলার ডিহি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হোসেন আলী। কিন্তু ওই রাস্তাটি পাকাকরণের কাজ না করে একই গ্রামের পলাশের বাড়ি থেকে রাকিবের বাড়ি পর্যন্ত মাত্র ১ শ ফুট রাস্তা করে কাজটি শেষ করেন ইউপি চেয়ারম্যান।

পাশাপাশি বরাদ্দকৃত অর্থের সবটুকুই প্রাক্কলিত ব্যয় দেখান তিনি। রাস্তাটির প্রবেশ মুখে একটি নাম ফলক বসানো হয়েছে। যেখানে লেখা আছে সালামের বাড়ি হইতে আমজাদের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা ফ্লাট সলিংকরণ।

প্রকল্পের অর্থ বরাদ্দ বাবদ ব্যয় দেখানো হয়েছে এক লাখ টাকা। অথচ যে রাস্তাটি পাকাকরণ বা সলিং হওয়ার কথা ছিলো সেটি এই রাস্তা থেকে অনেক বেশি কদাকার এবং নাজুক অবস্থা।

এলাকাবাসী নিয়ামত, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মজিদ, মনোয়ারা বেগমসহ অনেকে জানান, এক জায়গার বরাদ্দকৃত সরকারি কাজ অন্য জায়গায় কেমন করে করা হলো? এক এলাকার নাম ফলক অন্য জায়গায় কিভাবে লাগানো যায়। চেয়ারম্যান হোসেন আলী তার নিজের স্বার্থের জন্য রাস্তা অদল বদল করেছেন। তারা বলেন আমরা রাস্তা পাকাকরণ চাই।

ডিহি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হোসেন আলী বলেন, সালামের বাড়ি হতে আমজাদের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তাটি নিয়ে একটি মামলা ছিলো। এজন্য জেলা পরিষদ আমাকে অন্য জায়গায় প্রকল্পের বরাদ্দকৃত অর্থ দিয়ে রাস্তা পাকাকরণ করার জন্য বলে। সে কারণে ওই রাস্তাটির পরিবর্তে এই রাস্তাটি করা হয়েছে।

তবে রাস্তাটির নাম ফলকে পরিবর্তন না করাটা ভুল হয়েছে। এবং এটি খুবই দৃষ্টিকটু। পরবর্তীতে ওই রাস্তাটির পাকাকরণ কাজের জন্য বরাদ্দ আসলে নাম ফলক পরিবর্তন করা হবে। এখন কিছুই করার নেই।

এদিকে চেয়ারম্যান মামলার কথা বললেও এলাকাবাসী বলছে ভিন্ন কথা। ২০১৭ সালে জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়ের জের ধরে বিজ্ঞ আদালতে একটি মামলা হয়। যেটি ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে খারিজ হয়ে যায়।

এ বিষয়ে শার্শা উপজেলা প্রকৌশলী এস এম মামুন হাসান বলেন, বরাদ্দকৃত রাস্তা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে করার কোন এখতিয়ার নেই। সেটি করতে হলে জেলা পরিষদের থেকে পরিবর্তন করে নিতে হবে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
রাস্তা নির্মাণ,ফলক
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close