মো. দুলাল মিয়া, নাঙ্গলকোট (কুমিল্লা)

  ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২১

ধানের জমিতে শসার আবাদ, ভালো ফলনে কৃষকের হাসি

চারদিকে আনমনের ধানের চারা রোপণ শেষ করেছেন কৃষক। আর ওই ধানের চারা উঁকি দিয়ে রূপ নিচ্ছে সবুজের সমারোহে। এরই মাঝখানে চাষ হচ্ছে শসা। পানির ওপর মাচায় হলুদ-সাদা ফুল কিংবা থরে থরে ঝুলছে শসা। এমনি চিত্র দেখা যায় কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায়। চলতি আমন মৌসুমে উপজেলার ধানের জমিতে শসার আবাদ হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়ায় ফলনও হয়েছে ভালো। এতে হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে।

বর্তমানে পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই শসার উৎপাদন হয়। এটি সাধারণত গরমের সময় বেশি পাওয়া যায়। বেশ কয়েক জাতের শসা রয়েছে। বীজ রোপণের ৩০ থেকে ৩৫ দিনের মধ্যে গাছে ফল ধরা শুরু হয়। বিঘাপ্রতি খরচ হয় ১০ হাজার আর বিক্রি হয় ২০ হাজার টাকায়। লাভ বেশি হওয়ায় শসার চাষে আগ্রহী হচ্ছেন অনেকেই।

মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) পৌর সদরের বাতুপাড়া ও মৌকরা ইউপির গোমকোট গ্রামে ঘুরে দেখা যায়, কেউ কেউ শসার চারা রোপণ করছেন। আবার কেউ অধিক ফলনের আশায় শসা গাছে ভিটামিন ওষুধ ব্যবহার করছেন। ফেনী, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী চাঁদপুর ও কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে থেকে আসা পাইকারদের কাছে শসা বিক্রি নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন অনেক কৃষক। দূর-দূরান্ত থেকে আসা পাইকারদের কাছে প্রতি মণ শসা ১ হাজার থেকে ১১০০ টাকা বিক্রি করছেন।

এ ব্যাপারে গোমকোট গ্রামের মৃত. মোবারক হোসেনের ছেলে শসা চাষি খোরশেদ আলম বলেন, এ মৌসুমে ৩০ শতক জমিতে শসার আবাদ করেছেন। যা খরচ হয়েছে ৭০ হাজার টাকা। এতে বিক্রি উঠবে হবে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। ধান চাষ করলে এত টাকা আসত না। লোকসানও গুণতে হতো। এবার আবহাওয়া ভালো রয়েছে। বাজারে শসার ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে।

গোমকোট গ্রামের ডিপজল এলাকার আব্দুল মমিন ও এনামুল হক যৌথভাবে প্রায় দুই একর জমিতে শসার আবাদ করেন তারা। এতে প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়। প্রথম দিকে বৃষ্টি কম হওয়া বীজ বপন করলে চারা কম উঠে। আবার কিছু কিছু চারা গাছও মারা যায়। পরে পুনরায় আবার গাছ লাগাই। এখন একটু ভালো অবস্থায় রয়েছে। গত ১৫ দিন ধরে শসা বিক্রি শুরু করি। এভাবে আরো ৭-৮ বার শসা কাটলে ১ লাখ ৫০ টাকার মতোন ভাল হবে।

শসা চাষি কামাল হোসেন বলেন, ৬০ শতক জায়গা শসা চাষ করতেন তিনি। ফলনও অনেক ভালো হয়েছে। সোমবার পর্যন্ত শসা কাটি। যা খরচ হয়েছে তা উঠে এখন লাভে আছি। কৃষি অফিসার তদারকিতে ভালো ফলন পেয়েছি।

এ বিষয়ে পৌর সদর ব্লক উপ-সহকারী কৃষি অফিসার জুনায়েদ হোসেন বলেন, পৌর সদরের বাতুপাড়া গ্রামটি শসা চাষের বিচরণ ভূমি। আমরা কৃষকদের উদ্ভূত করি ভালো জাতের বীজ ব্যবহার করে সঠিক সময়ে শসা ফলানোর জন্য। সময় সয়ম শসার জমিনগুলো পরিদর্শন করি। কখন কি ওষুধ ব্যবহার করবে তার জন্য বলি।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার জাহিদুল ইসলাম জানান, এ মৌসুমে পুরো উপজেলায় ৪৫ হেক্টর জমিতে শসার আবাদ করা হয়। আবহাওয়া ভালো থাকায় বাজারে শসার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ভালো দামও পাচ্ছেন তারা। আর কৃষি অফিস থেকে নিয়মিত তদারকি করা হচ্ছে। যাতে আরো অধিক লাভবান হতে পারে শসা চাষিরা।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
নাঙ্গলকোট,কুমিল্লা
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close