ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি
এতিমের চাল চুরি ঠেকালেন দিনমজুর
মাঝরাতে বিষণ্ন মনে হাঁটতে বেরিয়েছিলেন দিনমজুর মো. দেলোয়ার হোসেন (২৬) নামে এক যুবক। হাঁটতে গিয়েই তিনি দেখতে পান মাদ্রাসার এতিমদের জন্য গোডাউনে রাখা চাল সন্দেহজনক দুই যুবক নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছেন। দেলোয়ার ঠিক সেসময় নিজের টর্চ লাইট ধরে একাই ধাওয়া করেন তাদের। এতেই চুরির হাত থেকে বেঁচে যায় এতিমদের খাবার।
রবিবার রাত ১টার দিকে উপজেলার গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়নের হাতকোড়া জামিয়া মইনুল ইমলাম মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে।
যুবক দেলোয়ার হোসেন ধামরাইয়ের গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়নের হাতকোড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি দৈনিক ভিত্তিতে এলাকায় দিন মজুরের কাজ করেন।
জানা যায়, মাদ্রাসাটিতে প্রায় অর্ধ সহস্র শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যে পড়ালেখা ও খাবার সরবরাহ করা হয়। ওই খাবারের জন্য খাদ্যসামগ্রী (চাল) রাখা হয় মাদ্রাসার একটি কক্ষে। সেই কক্ষের দরজার খিল ভেঙে ঘরে ঢুকে কয়েক বস্তা চাল নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে ওই দুই যুবক। পরে দেলোয়ারের তাড়া খেয়ে চাল ফেলে পালায় তারা।
দেলোয়ার হোসেন বলেন, রাতের দিকে বাড়ির সামনের সড়কে হাঁটছিলাম। হঠাৎ দেখি মাদ্রাসার ভেতরে দুইটা ছেলে ঢুকছে। পরে আমি পাশ দিয়ে নেমে দেখতে থাকি তারা কি করে। একপর্যায়ে দেখতে পাই তারা ওই গোডাউনের দরজার খিল ভেঙে ঘরে ঢুকে চাল নিয়ে পালাচ্ছে। এমন সময় আমি হাতে থাকা টর্চ লাইট জ্বালিয়ে ধাওয়া দিলে তারা চাল ফেলে চলে যায়।
এদিকে দেলোয়ারের এ ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মাদ্রাসাটির শিক্ষক আব্দুল হামিদ। তিনি বলেন, আমিতো ছিলাম না। পরে আমি খবর শুনে মাদ্রসায় আসি। এসে শুনতে পাই চোরেরা কয়েক বস্তা চাল নিয়ে পালাচ্ছিলো। পরে দেলোয়ার এসে তাদেরকে ধাওয়া দিলে চোরেরা চাল ফেলে পালায়।
তিনি আরও বলেন, এই মাদ্রাসায় এতিম শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে খাওয়ানো, পড়ানো হয়। এখানে যে খরচ হয় সেটার সংকুলান, নানা জনের সহযোগিতায় এতিমদের খাবারের ব্যবস্থা করে থাকি। এখান থেকে একটা কিছু খোঁয়া যাওয়া মানে এতিমদের বিপাকে ফেলার সমান। ফলে চুরি যাওয়া থেকে চাল রক্ষা করে দেলোয়ার হোসেন অনেক এতিমের খাবার রক্ষা করলেন।
এ বিষয়ে ধামরাই থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আরাফাত উদ্দিন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চয়ই প্র্রশংসনীয়। আর চুরির বিষয়ে কোন লিখিত অভিযোগ আসলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পিডিএসও/ জিজাক