পাবনা প্রতিনিধি

  ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১

১০ কোটি টাকা প্রতারণার মামলায় কারাগারে শিক্ষিকা 

হালাল উপার্জনের লোভ দেখিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে থেকে প্রায় ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে পাবনার এক স্কুল শিক্ষিকার বিরুদ্ধে।

বুধবার আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

জানা গেছে, প্রতারণার স্বীকার হওয়া ভুক্তভোগীরা ওই নারীর বাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ করলে পুলিশ মঙ্গলবার রাতে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। তার বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীদের দেওয়া অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে পরে মামলা দায়ের করা হয়।

অভিযুক্ত শিক্ষিকা পাবনা পৌর এলাকার পুলিশ লাইনস স্কুল এন্ড কলেজের প্রাথমিক শাখার শিক্ষিক সীমা আক্তার (৪০)। তিনি পৌর এলাকার আটুয়া হাউজ পাড়া মহল্লার মৃত হানিফুল ইসলামের স্ত্রী।

প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগীরা জানান, শিক্ষিকা সীমা আক্তার সাধারণ মানুষকে ইসলামী শরিয়া মোতাবেক গরুর খামার ও আরো নানা ধরনের হালাল উপার্জনের কথা বলে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগে উৎসাহিত করে তা হাতিয়ে নিয়েছেন। শুধু সাধারণ মানুষই নয়, বোকা বানানিয়েছেন নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একাধিক শিক্ষক ও পুলিশ লাইন্সের সদস্যদেরও।

ভুক্তভোগীরা জানান, মানুষ তার কথায় বিশ্বাস করে লাভের আশায় তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অর্থ বিনিয়োগ করেছে। লাভের অংক বেশি হওয়ার লোভে পরে অনেকেই সেখানে অর্থ বিনিয়োগে করতে আগ্রহী হয়। প্রথম পর্যায়ে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে তাদেরকে লাভের অর্থ প্রদানও করেন। কিন্তু পরবর্তীতে টাকার অংক বেড়ে গেলে তিনি সমস্ত টাকা আত্মসাত করে গা ঢাকা দেন।

এদিকে ঘটনার পর স্কুল কর্তৃপক্ষ ওই নারী প্রতারককে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

অভিযোগের বিষয়ে শিক্ষিকা সীমা আক্তার বলেন, আমার কোনো ব্যবসা নাই। এক জনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আরেক জনকে দিয়েছি। যারা টাকা দিয়েছে তাদেরকে সুদে অনেক লাভ দিয়েছি। আমি কারো টাকা আত্মসাত করিনি। মানুষ না জেনে না বুঝে আমাকে টাকা কেন দিয়েছে ? তাদেরকে প্রশ্ন করুন।

তিনি বলেন, যারা আমাকে টাকা দিয়েছে তাদের টাকার একটি হিসাব করেছি। সেখানে প্রায় তিন কোটি টাকার মত হবে। সেই সকল টাকা আমি দিয়ে দিবো। আর যারা সুদে লাভের টাকা নিয়েছে তাদেরটা দিবো না। আর আমাকে কেন স্কুল থেকে বহিষ্কার করেছে সেটি স্কুল কর্তৃপক্ষ জানে। আমি ব্যক্তিগত কাজে বাইরে ছিলাম। জেলা পুলিশ আমাকে আসতে বলেছে বলে আমি এসেছি।

পাবনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, এই ঘটনার বিষয়ে আমরা অবগত হয়েছি। তার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগের কারণে তাকে স্কুল থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তার প্রতারণার বিষয়ে আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ নিয়ে এসেছিল ভুক্তভোগীরা। আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছি। এ বিষয়ে মামলা হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
পাবনা,প্রতারণার মামলা,কারাগার,শিক্ষিকা
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close