চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

  ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১

স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াবুলসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

চকরিয়া পৌর নির্বাচন : সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট নিয়ে শঙ্কা

কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভা নির্বাচনকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে নির্বাচনী মাঠ। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট অনুষ্ঠান নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে সাধারণ ভোটারদের মাঝে।

মেয়র পদে সরকার দলীয় নৌকার প্রার্থী বর্তমান মেয়র আলমগীর চৌধুরীর প্রধান প্রতিদ্বন্ধি নাগরিক কমিটি মনোনীত স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী নারিকেল গাছ প্রতীকের জিয়াবুল হক ও তার ১৬ জন কর্মীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা রুজু হয়েছে।

সোমবার কর্মীর ওপর হামলার অভিযোগ এনে থানায় মামলাটি রুজু করেন নৌকার প্রার্থী বর্তমান মেয়র আলমগীর চৌধুরী। মামলার পর থেকে জিয়াবুল হকের কর্মী সমর্থকরা গ্রেপ্তার আতঙ্কে ভুগছেন। তবে তার পক্ষে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে প্রচারণা চালাচ্ছেন কর্মীরা।

মামলার এজাহারে বাদী আলমগীর চৌধুরী অভিযোগ এনেছেন, সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রাজধানী পাড়ায় নৌকার পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছিলেন তার তিন কর্মী যথাক্রমে- ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের আতাউল হক সবুজ, রমেশ খান ও রাজীব খান। এসময় স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াবুল হক সদলবলে তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে তারা আহত হন। এসময় তাদের কাছ থেকে নগদ টাকা ও মোবাইল লুট করেন আসামিরা।

মামলায় স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াবুল হক ছাড়াও আসামি হওয়া অন্য ১৬ কর্মী হলেন- মিজানুর রহমান, মো. রুবেল, দলিল, আবদুল কাইয়ুম, শিব্বির আহমদ, হুমায়ুন কবির, হাসান আল বশরী, মো. শোয়াইব, মিজানুর রহমান, আবদুল মজিদ, নুরুল আবচার, নুরুল হক, সাদ্দাম হোসেন, মিশুক মনির, মো. পারভেজ, আবদুল জলিল।

এদিকে সোমবারের ঘটনা পরবর্তী নৌকার প্রার্থী আলমগীর চৌধুরীর সমর্থকেরা লাঠিসোটা ও ঝাঁড়ু হাতে নিয়ে উপজেলা পরিষদ ও পৌরশহরের চিরিঙ্গায় বিক্ষোভ মিছিল বের করলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে সাধারণ মানুষের মাঝে।

অপরদিকে ওই ঘটনার জের ধরে নির্বাচনে প্রধান প্রতিদ্বন্ধি স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াবুল হক ও তার কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর থেকে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। যে কোন মুহূর্তে এসব ঘটনাকে কেন্দ্র করে বড় ধরণের সংঘাতময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে সচেতন লোকজন ধারণা করছেন।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াবুল হকের পক্ষে সাংবাদিক সম্মেলন করা হয়। জিয়াবুলের পরিবারের প্রতিনিধি হিসেবে মীরাক্কেল তারকা কমর উদ্দিন আরমান সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, ‘নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাত্র কয়েকদিন আগে সরকার দলের প্রার্থী মিথ্যা অভিযোগ এনে মামলা করায় গ্রেপ্তার আতঙ্ক বিরাজ করছে জিয়াবুল হকের কর্মীদের মাঝে। পুলিশ আসামি ধরার নামে জিয়াবুলের কর্মীদের বাড়িঘরে অভিযান চালাচ্ছে। এতে সাধারণ ভোটারদের মাঝেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে এখানে নির্বাচনের সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিকেহ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে নির্বাচনের সমান্তরাল মাঠ (লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড) বলতে আর কিছুই নেই। অবিলম্বে এই অপতৎপরতা বন্ধের জোর দাবি জানাচ্ছি।

চকরিয়া থানার ওসি শাকের মোহাম্মদ যুবায়ের বলেন, ‘নৌকার প্রার্থী বাদী হয়ে এজাহার দিলে তা মামলা হিসেবে রুজু করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে মামলার আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

এ ব্যাপারে পৌরসভা নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ শামসুল তাবরীজ বলেন, ‘সোমবারের ঘটনার পর একটু উত্তেজনা ছড়ালেও বর্তমানে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রয়েছে। নির্বাচনী প্রচারণার সময় কোথাও কোন আচরণবিধি লঙ্ঘন বা অঘটনা ঘটছে কী-না তা কঠোরভাবে নজরদারী করা হচ্ছে। দুইজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য পুরো পৌরসভায় টহল ব্যবস্থা জোরদার করেছে। ২০ সেপ্টেম্বর শান্তিপূর্ণ পরিবেশে শতভাগ সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেওয়ার জন্য প্রশাসন কাজ করছে।’

পিডিএসও/এসএমএস

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
চকরিয়া,কক্সবাজার
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close