আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি

  ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১

আমতলীতে নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে জনদুর্ভোগ

বরগুনার আমতলী উপজেলাসহ দক্ষিণাঞ্চলজুড়ে চাল, ডাল, ভোজ্য তেল, চিনিসহ বেশিরভাগ নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষ খুব কষ্টে আছেন। গত দেড় বছরে করোনা মহামারি সংকটে সমাজের নিম্নবিত্ত নিম্ন-মধ্যবিত্তের মত মধ্যবিত্তের আয় কমেছে। সাথে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি কষ্টের মাত্রা আরো বাড়িয়ে তুলেছে। তবে এর মধ্যেও রাষ্ট্রীয় বাণিজ্য সংস্থা টিসিবির সীমিত উদ্যোগ পণ্যমূল্য বৃদ্ধি রোধে আশানুরূপ ভূমিকা রাখতে পারছে না।

দেশি পেঁয়াজের দাম গত এক সপ্তাহে আরো টাকা বেড়ে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৪৮ টাকায়। গ্রামে-গঞ্জের বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। স্থানীয় খুচরা ব্যবসায়ীদের দাবি, আমদানি করা কোন পেঁয়াজ বাজারে না আসায় প্রতি সপ্তাহেই দাম বাড়ছে। দেশি আদা বাজারে নেই। চীনা আদা বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা কেজি দরে।

চিনি এতোদিন ৭০-৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও গত সপ্তাহ থেকে তা ৮০/৮২ টাকায় উঠেছে। গ্রামে-গঞ্জে তা ৮৫ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে। সয়াবিন পাম তেলসহ সব ধরনের ভোজ্য তেলের দামও ঊর্ধ্বমুখী। গত সপ্তাহেই সয়াবিন পাম তেলের দাম লিটার প্রতি আরো -১০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে ১৫৫ ১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্যাকেটজাত সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা লিটারে। মসুর ডালের দামও টাকা বেড়ে ১২৫ টাকায় উঠেছে। মুগ ডাল বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৩৫ টাকা কেজি।

এদিকে চালের বাজার দফায় দফায় বেড়ে জুলাই আগস্টে স্থিতিশীল থাকলেও গত কয়েকদিনে কেজি প্রতি থেকে টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। মিনিকেট চালের কেজিও ৬০ থেকে ৬২ টাকায় উঠেছে। ভাদ্র মাসের শেষ সপ্তাহের মধ্যে আউশ ধান কাটা শেষ হবার পরে চালের দাম আরো একধাপ বৃদ্ধির প্রবণতা থাকে। আশ্বিনের শেষ ভাগ পর্যন্ত মাঠে কোন ফসল না থাকার পাশাপাশি আমতলীসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিপুল সংখ্যক কৃষি শ্রমিক বেকার হয়ে পড়ে। সাথে চালের মূল্য বৃদ্ধিতে মানুষের কষ্ট বেড়ে গেছে।

এবার আগে থেকেই চালের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে ওঠার সাথে নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধিতে মানুষের দুর্ভোগের মাত্রা আরো বেড়েছে। মাছ, মুরগি গরু-খাসির গোশতের মূল্যও গত একমাসে বেড়েছে। ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৬০-১৬৫ টাকা, গরুর গোশত ৫ শ ৫০ টাকা, খাসির গোশত ৭ শ টাকা কেজি। কাচাঁবাজারে প্রতি কেজি ঝিঙা, চিচিঙ্গা, ধুন্দল বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, কচুর লতি ৬০ থেকে ৭০ টাকায়, টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়, কাকরোল আকার ভেদে ৪০ থেকে ৫৫ টাকায়, বরবটি ৭০ থেকে ৮০ টাকায়, কচুর ছড়া ৮০ থেকে ৭০ টাকায়, ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, পটল ৩০ থেকে ৪৫ টাকায়, পেঁপে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, দেশি শসা ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, হাইব্রিড শসা ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, আলু ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

নুতন বাজার এলাকার একজন ক্রেতা জানিয়েছেন, বাজারে সবজি কিনতে গিয়ে দাম শুনে চমকে গিয়েছি। বয়লার মুরগি কিনেছি ১২০ টাকা দিয়ে অথচ বরবটি কিনতে হয়েছে ৮০ টাকায়। আগের সপ্তাহে ৪০ টাকা করে কিনে খেয়েছি। সপ্তাহে সকল সবজির দামও চড়া। দুই প্রকার সবজি কিনতে টাকা শেষ। ১০০ টাকার কাঁচাবাজারে একদিন চলে না। এদিকে পৌরশহরের পুরান বাজার, বাঁধঘাট এলাকার কাচঁবাজারে একই চিত্র লক্ষ করা গেছে। লাউ ৬০ থেকে ৭০ টাকা, চাল কুমড়া ৬০ টাকা, কাঁচকলা হালি ৪০ টাকা, লাল শাঁক বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়, ডাটা শাঁক ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.কাওসার হোসেন মুঠোফোনে বলেন, ক্রেতাদের কাছে অতিরিক্ত দামে পণ্য বিক্রয়কারীদের বিরুদ্ধে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পিডিএসও/ জিজাক

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
জনদুর্ভোগ,নিত্যপণ্যের মূল্য,আমতলী
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close