মো. সিরাজুল ইসলাম, গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী)
জীবিকার তাগিদে মৃত্যুভয় ভুলে ছুটছেন তারা
কঠোর বিধিনিষেধে ৬ষ্ঠ দিন আজ। প্রতিদিন মৃত্যুর নতুন নতুন রেকর্ড হচ্ছে। আপনজন হারানোর আর্তনাত দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। তবুও মানুষের ছুটে চলা থামছে না। প্রশাসনের কঠোর নজরদারি, যাত্রা পথে তিনগুণ থেকে চারগুণ ভাড়া বেশি আর আক্রান্তের সম্ভবনা সব পিছুনে ফেলে জীবিকার তাগিদে ছুটছে মানুষ।
করোনা সংক্রমণ রোধে সর্বাত্মক লকডাউন চলছে। অন্যদিকে ঝুঁকি নিয়ে জীবিকার তাগিদে বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌ-পথের উভয় প্রান্ত দিয়ে ফেরিতে নদী পার হচ্ছে নিম্নবিত্ত, কর্মজীবী মানুষ ও ব্যাক্তিগত যান।
সরেজমিনে বুধবার বেলা ১১ টার দিকে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, দূরপাল্লার যানবাহন বন্ধ থাকায় দক্ষিণ- পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে জীবিকার তাগিদে নিম্ন ও মধ্য আয়ের কর্মজীবী মানুষ বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে ব্যক্তিগত গাড়ি, অটোরিক্সা, থ্রীহুইলার, মোটরসাইকেল যোগে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে দৌলতদিয়া ঘাটে এসে স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করে গাদাগাদি করে ফেরিতে নদী পার হচ্ছে।
এসব বাহনের পাশাপাশি পায়ে হেঁটেও ঘাটে আসছে মানুষ। নিম্নবিত্ত ও কর্মজীবীরা বলছেন এভাবে সর্বাত্মক কঠোর বিধিনিষেধ ঘোষণায় আমাদের আয় রোজগার বন্ধ করে দিলে আমরা তো না খেয়ে মরব। আমাদের কাজকর্ম করার সুযোগ দিতে হবে। কাজের সুযোগ না দিলে আমাদের জীবনযাপন করা দুরূহ হয়ে পড়ছে।
সকালে দুই সন্তান আর স্ত্রী নিয়ে ফেরিঘাটে আসছেন জসিমউদদীন। বললেন রাত তিনটায় অটোরিকশা রিজার্ভ করে আসছেন মাগুরার মোহাম্মদপুর থেকে, বললেন চাকরি করি বেসরকারি একটা ফার্মে ইতিমধ্যে কর্মি ছাটাই শুরু হয়েছে অফিস থেকে বলা হয়েছে কর্মস্থানে থাকতে। এখন বলেন চাকরি না থাকলে কোথায় গিয়ে দাড়াবো, কি করবো। এখন এই অসময়ে কোথায় চাকরি খুজবো। ভাইরে আমার সন্তানটার প্রতিদিন দুধ কিনে খাওয়াতে হয় বলতে বলতে স্ত্রী, সন্তানদের নিয়ে ফেরিতে উঠলেন।
অপরদিকে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ, লকডাউন বাস্তবায়ন ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে মহাসড়কে টহলের পাশাপাশি জিজ্ঞাসাবাদ করছেন আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।দৌলতদিয়া কার্যালয়ের
ব্যবস্থাপক (বানিজ্য) মো. জামাল হোসেন বলেন, বর্তমানে এ নৌরুটে ছোট বড় ৯টি ফেরি চলাচল করছে। জরুরী সেবার যানবাহন পারাপারের সুযোগে সাধারণ যাত্রী ও মটরসাইকেল ফেরিতে উঠে যাচ্ছে, ব্যক্তিগত গাড়ির ক্ষেত্রে যথাযথ কারণ ও প্রমান ছাড়া ফেরির টিকেট দেয়া হচ্ছে না।
পিডিএসও/এসএম শামীম