সবুজ হোসেন, নওগাঁ

  ২৮ জুলাই, ২০২১

ভাতাকার্ড করতে ৩-৫ হাজার টাকা নেন ইউপি সদস্য!

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

নওগাঁর মান্দায় বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেয়ার নামে টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে আমিন মোল্লা নামে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। তিনি উপজেলার ৯ নং তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের সদস্য। কার্ড করে দিচ্ছি দেবো বলে কয়েক বছর ধরে ঘুরানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন একাধিক ভুক্তভোগী।

দেশের বয়োজ্যেষ্ঠ দুস্থ ও স্বল্প উপার্জনক্ষম অথবা উপার্জনে অক্ষম বয়স্ক জনগোষ্ঠীর সামাজিক নিরাপত্তা বিধানে ও পরিবার ও সমাজে মর্যাদা বৃদ্ধি এবং বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা মহিলা ভাতা কর্মসূচি বাস্তবায়নে অধিকতর গতিশীলতা আনয়নের লক্ষ্যে সরকার বয়স্ক ও বিধবা ভাতা চালু করেছে সরকার। এসব ভাতার কার্ড করে দেয়ার নামে তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামের অসহায়দের নিকট থেকে ৩ হাজার ৮০০ টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত নেয়ার অভিযোগ উঠেছে মেম্বার আমিন মোল্লার বিরুদ্ধে।

নারায়ণপুর গ্রামের জেহের আলীর স্ত্রী আলেয়া বেগম বলেন, প্রায় চার বছর আগে হামার কাছে থ্যাকা আমিন মেম্বার বয়স্ক ভাতার কার্ড করা দিবে কইয়া ৩ হাজার ৮০ টেক্যা লিছে। এরপর চারডা বছর হামাক কার্ড করে দেয়ার কথা কইয়া খালি ঘুরাচ্ছে।

একই গ্রামের ফজের আলীর ছেলে জাইদুর ইসলাম বলেন, হামার মা হাজেরা বেগমকে বয়স্ক ভাতার কার্ড করা দেয়ার কথা কইয়া প্রায় ১ বছর আগে ৫ হাজার টেক্যা লিছে আমিন মেম্বার। টেক্যা লেওয়ার সময় মেম্বার কছলো যে কার্ডের জন্নি অফিসিয়াল মেলা কাম আছে তাই এ্যানা খরচপাতি হবে। এ জন্নি ৫ হাজার টেক্যা লাগবে। এরপর আর কোন খরচ হবে। খালি মাসে মাসে টেক্যা পাবিন। সেই কতা শুনা কষ্ট করা ৫ হাজার টেক্যা দিছি। হামি দিনমজুর। হামাকে সংসার মেলা কষ্ট করা চলে। পরে জানবার পারনু কার্ড করার জন্নি কোন টেক্যা লাগে না। ভোট দিয়া মেম্বার করনু হামরা। আর সেই মেম্বার হামাকে উপকার না এমন করা ঠকাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ইঙ্কা করা আরও ৫-৬ জনের কাছে থ্যাকা টেক্যা লিছে। হয়তো অনেকে ভয় বা ঝামেলা হয় নাকি তাই মুখ খুলিচ্ছে না। চেয়ারম্যান সাহেবোক আপনা বলিন তিনি এগুলা বিষয়ে জানে। অনেকেই তার কাছে মেম্বারের নামে অভিযোগ করিছে।

এ ব্যাপারে ৭নং ইউপি সদস্য (মেম্বার) আমিন মোল্লা বলেন, ওই টাকার বিষয় নিয়ে আমার সাথে একটু ঝামেলা হয়েছে। কার্ড করে দেয়া হয়নি। তবে এবার তাদের নাম তালিকায় দেয়া হয়েছে। আগামীতে হয়তো তারা টাকা পাবে।

বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দিলে অনেকে ইচ্ছে করে মিষ্টি খাওয়ার জন্য আমার বাড়ি গিয়ে টাকা দিয়ে আসে। আমি কারো কাছে থেকে জোর করে টাকা নেই না। খুশি হয়ে যা দেয় সেটাই নিই, এর বাইরে কিছু না। এ সময় তিনি ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা নেয়ার বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করেন।

এ ব্যাপারে তেঁতুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুস সাত্তার বলেন, কার্ড করে দেয়ার নামে আলেয়া বেগম ও হাজেরা বেগম এর কাছ থেকে টাকা নেয়ার কথা শুনেছি। ইতঃপূর্বে আমার কাছে অনেকেই বেশ কয়েকজন অভিযোগ নিয়ে এসেছিল। আমি ইউপি সদস্যদের সতর্ক করে টাকা নিয়ে থাকলে সেগুলো ফেরত দিতে বলেছি। যেহেতু বিষয়গুলো নিয়ে অনেকেই অভিযোগ করেছেন, আমি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

এ বিষয়ে মান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আবু বাক্কার সিদ্দিক জানান, আমি উপজেলায় নতুন যোগদান করেছি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পিডিএসও/ইউসুফ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
নওগাঁ,৯ নং তেঁতুলিয়া,ইউপি মেম্বার,ভাতাকার্ড,ঘুষ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close