সাজাদুল ইসলাম, উলিপুর (কুড়িগ্রাম)

  ২২ জুন, ২০২১

পানি বৃদ্ধি অব্যাহত

তিস্তার ভাঙনে বিলীন বসতভিটাসহ নানা স্থাপনা

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

তীব্র ভাঙনে দিশেহারা কুড়িগ্রামের উলিপুরের তিস্তা পাড়ের মানুষ। গত এক মাসের ব্যবধানে তিস্তা নদী বেষ্টিত উপজেলার গোড়াইপিয়ার, থেতরাই পাঁকার মাথা, নাগড়াকুড়া টি-বাঁধ, চর বজরা, পূর্ব বজরা, পশ্চিম বজরা, কাশিম বাজার, লকিয়ার পাড় এলাকায় তিস্তা গর্ভে বিলীন হয়েছে ৫ শতাধিক পরিবাবের বসতভিটা, মসজিদ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাজারঘাট, পাঁকা রাস্তা ও ফসলি জমি। ভাঙনের হুমকির মুখে রয়েছে মসজিদ,মাদরাসা, কমিউনিটি ক্লিনিকসহ আরো নানান স্থাপনা।

চলতি মাসে ভারী বর্ষণ ও উজানি ঢলে তিস্তার পানি বৃদ্ধিতে তীব্র স্রোতে ভাঙন তীব্র থেকে তীব্র আকার ধারণ করছে। তিস্তার ভাঙনে চোখের সামনে প্রতিনিয়ত বিলীন হচ্ছে বাপদাদার বসতভিটা, বিভিন্ন স্মৃতিবিজড়িত প্রতিষ্ঠানসহ নানা স্থাপনা।

উপজলায় নদী ভাঙন দেখা দিলেও কয়েক দিন ধরে ভাঙনের মুখে পড়েছে থেতরাই গোড়াইপিয়ার এলাকা।ভাঙনের হুমকির কবলে ওই এলাকার গোড়াইপিয়ার মুলাধোয়া জামে মসজিদ, গোড়াইপিয়ার পিয়ারি দাখিল মাদরাসা, গোড়াইপিয়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোড়াইপিয়ার জামে মসজিদসহ গোড়াইপিয়ার কমিউনিটি ক্লিনিক। এমন ভাঙন অব্যাহত থাকলে দুয়েকদিনের মধ্যে গোড়াইপিয়ার মুলাধোয়া জামে মসজিদটি ভেঙে যাবে বলে শঙ্কিত এলাকাবাসী। প্রিয় বসতভিটা, ফসলি জমিসহ ওই সব প্রতিষ্ঠান ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা করতে এলাকার শিশু, নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ, বণিতা গাছের গুল, ডালপালা ফেলে স্রোতের দিক পরিবর্তন করতে সর্বশ দিয়ে চেষ্টা করতে দেখা গেছে।

তিস্তা পাড়ের আলহাজ্ব আব্দুস সালাম, চাঁদ মিয়া, আজিজ মন্ডল, আবু বক্কর, আকরাম মিয়ার সাথে কথা বলে জানা যায়, গত বছর ভাঙন রোধে ৩'শ ৯০ মিটার এলাকায় প্রায় ১৫/১৬ হাজার জিও ব্যাগ ডাম্পিং করেছিল কুড়িগ্রাম পাউবো। সেগুলো এখন অধিকাংশই নদীগর্ভে বিলীন। এলাকাবাসী অতিদ্রুত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট ভাঙনরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

থেতরাই ইউনিয়নের ১নং ওর্য়াডের সাবেক ইউপি সদস্য ও চারটি প্রতিষ্ঠানের দাতা সদস্য নূরন্নবী সরকার (৭০) অশ্রুসিক্ত নয়নে সাংবাদিকের বলেন, কষ্টে গড়া সম্পদে গোড়াইপিয়ার মসজিদ, মাদরাসা, প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কমিউনিটি ক্লিনিক আমার জীবদ্দশাতেই নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে তা ভাবতেই কষ্টে বুক ফেটে যায়। দ্রুত ভাঙন রোধে ব্যর্থ হলে ইতিহাস-ঐতিহ্যর গোড়াইপিয়ার নাম থেতরাই মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে। সেই সঙ্গে আমার স্বপ্নের প্রতিষ্ঠানগুলো নদীগর্ভে বিলীন হবে।

তিস্তা নদী রক্ষা কমিটির কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম সরদার বলেন, কিভাবে প্রতিষ্ঠানগুলো ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা করা যায় তার উপায় খুঁজে বের করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এগিয়ে আসার অনুরোধ করেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ-জান্নাত রুমি বলেন, বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে এবং তারা এলাকাটি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। খুব শীঘ্রই ভাঙন রোধে কাজ আরম্ভ করবেন বলে আশ্বাস প্রদান করেন।

এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, এলাকাটি পরিদর্শন করা হয়েছে। অতিদ্রুত ভাঙন রোধে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

পিডিএসও/ইউসুফ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
উলিপুর,তিস্তা,তীব্র ভাঙন,নদীগর্ভে বিলীন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close