নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি

  ২০ জুন, ২০২১

সীমান্তে ফের হাতির আক্রমণ

শেরপুরের নালিতাবাড়ী রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের পানিহাটা চার্চ অব বাংলাদেশ সাধু আন্দ্রিয়ের মিশন ও শান্তিধামে রোববার বন্য হাতি আক্রমণ করেছে। মিশনের সীমানার খুঁটি উপড়িয়ে কাঁটাতার ধূমড়ে মুচরে প্রায় লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান মিশন কর্তৃপক্ষ।

মিশন কর্তৃপক্ষ ও এলাকাবাসী জানায়, মিশনের উত্তর ও পূর্ব দিক দিয়ে সীমানার খুঁটি উপড়িয়ে কাঁটাতার ধূমড়ে মুচরে পা দিয়ে পিষিয়ে, পিছনের গেইট ভেঙে বাচ্চাসহ ১৭টি হাতির একটি দল মিশনের ভিতর প্রবেশ করে। এতে মিশন সীমানার পিছনের গেইট সহ ৫০ ফুট কাঁটাতার বিনষ্ট হয়। এতে মিশনের প্রায় লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান মিশন কর্তৃপক্ষ।

হাতির দল মিশনে প্রবেশ করে গাছপালা ভেঙে ফেলে। কাঁঠাল গাছের কাঁঠাল খেয়ে সাবাড় করে দেয়। মিশনের ভিতর কয়েক ঘন্টা অবস্থান করে হাতির দল। মিশনের পুরোহিত ফাদার ডেভিড মৃধার বসবাসের ঘর ও কেয়ারটেকার বিহার দফু এর ঘর চারদিক থেকে ঘিরে রাখে হাতির দল। এতে তারা ঘরের ভিতরেই ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে বসে থাকেন। ঘরবন্দি অবস্থায় থেকে ডেভিড মৃধা মোবাইল ফোনে খবর দেন রামচন্দ্রকুড়া বিজিবি ক্যাম্পে, ফাঁড়ি পুলিশকে ও তার পরিচিত ব্যক্তিদের। প্রশাসনের লোকজন ছুটে আসেন ঘটনাস্থলে। সেই সাথে স্থানীয়রা সবাই মিলে ধাওয়া করেন হাতির দলকে। তবুও যায় না হাতির দল।

এক সময় মিশনারি স্কুলের হোস্টেল ইনচার্জ মৃদুল চাম্বুগং হাতির অদূরে দাঁড়িয়ে বিনয়ের সাথে অনুরোধ করে গারো ভাষায় বলেন-‘মামা যেটা খেয়েছো খেয়েছোই, যদি খাওয়া হয়ে থাকে তবে চলে যাও’। তখন হাতির দল চলে যায়। হাতির দল মিশনের টিলায় ওঠার নতুন রাস্তা আবিষ্কার করে। মিশনের উত্তরে কাটাতার না থাকায় ওই জায়গা অরক্ষিত। সেই রাস্তা দিয়ে হাতি ওঠা নামা করার কারণে সামান্য বৃষ্টিতে টিলা ধসে যেতে বসেছে। হাতি আতংক দূর হচ্ছে না পাহাড়িবাসীর। দিন রাত হাতি আতংকে রয়েছেন পাহাড়িবাসী।

পানিহাটা মিশনের ফাদার ডেভিড মৃধা বলেন, রাত তিনটায় হঠাৎ আমাকে ফোনে জানানো হলো যে, আমার ঘরের পাশের্^ হাতি। আমি তাড়াহুরো করে ওঠে জানালা দিয়ে দেখি আমার ঘরের চারদিক ঘিরে রেখেছে হাতির দল। বাকীরা দাঁড়িয়ে কাঁঠাল খাচ্ছে।

এই দৃশ্য দেখে ভয়ে আমার শরীর কাঁপতে থাকে। তবুও চুপি চুপি করে মোবাইল করে বিভিন্ন জায়গায় খবর দেই। ঘটনাস্থলে সবাই ছুটে আসে। আমাদের সহযোগিতা করে। দীর্ঘক্ষণ কাঁঠাল খেয়ে হোস্টেল ইনচার্জ অনুরোধ করে হাতির দলকে। সবাই হাতিকে ধাওয়া করে পরে তারা চলে যায়। হাতি প্রাকৃতিক তারা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত তারা সব দেশের। আমরাও বাঁচতে চাই হাতিকেও বাঁচাতে চাই। কেউ কারো ক্ষতি করে নয়। তিনি তার মিশনের নিরাপত্তা দাবি করে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।

পিডিএসও/এসএম শামীম

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
সীমান্ত,হাতির আক্রমণ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close