রাজশাহী ব্যুরো

  ১৮ মে, ২০২১

সাংবাদিক রোজিনার মুক্তির দাবিতে রাজশাহীতে বিক্ষোভ

সচিবালয়ে প্রথম আলোর সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে নির্যাতনের পর মামলা দিয়ে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এবং তার মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন (আরইউজে)।

মঙ্গলবার বেলা ১১টায় মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। সমাবেশ থেকে দ্রুত রোজিনা ইসলামের মুক্তি ও তার বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার এবং দাবিসহ রোজিনার নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।

আরইউজে সভাপতি রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ-সমাবেশে বক্তব্য দেন, আরইউজের সাবেক সভাপতি মুস্তাফিজুর রহমান খান আলম, কাজী শাহেদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মামুন-অর-রশীদ, রাজশাহী টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মেহেদী হাসান শ্যামল, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) কার্যনির্বাহী সদস্য জাবীদ অপু, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক মশিহুর রহমান, রাজশাহী সাংবাদিক কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী, প্রথম আলোর রাজশাহী অফিসের নিজস্ব প্রতিবেদক আবুল কালাম মুহম্মদ আজাদ, সিনিয়র সাংবাদিক কাজী গিয়াস, ফটোসাংবাদিক সেলিম জাহাঙ্গীর, আরইউজের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈয়বুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান টুকু প্রমুখ।

আরইউজে সাধারণ সম্পাদক তানজিমুল হকের পরিচালনায় সমাবেশ থেকে বক্তারা দ্রুত রোজিনা ইসলামের মুক্তি দাবি করেন। একই সাথে তার বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারেরও দাবি জানানো হয়। এছাড়া রোজিনা ইসলামকে নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি করেন সাংবাদিকরা।

সচিবালয়ের মতো স্থানে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে পাঁচ ঘণ্টা আটকে রেখে হেনস্থার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তারা বলেন, রোজিনা আন্তর্জাতিক এবং জাতীয়ভাবে পুরস্কারপ্রাপ্ত একজন সাংবাদিক। সচিবালয়ে ঢোকার জন্য তার পাস আছে।

তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নানা অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা আর দুর্নীতি নিয়ে ধারাবাহিকভাবে লিখে যাচ্ছিলেন। এ কারণে তাকে আটকে নির্যাতন করা হয়েছে। নির্যাতনের একপর্যায়ে তার গলা চেপে একজন নারী কর্মকর্তা তাকে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন। এই কর্মকর্তাকে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।

বক্তারা বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় খুবই দুর্নীতিগ্রস্ত একটি জায়গা। সেখানে একজন সাংবাদিকের সঙ্গে এমন ব্যবহারের কারণে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। সাধারণ মানুষও আতঙ্কিত। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেই চিত্রই দেখা যাচ্ছে। রোজিনার মুক্তির দাবি শুধু সাংবাদিকদের দাবি নয়, গণমানুষের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে। গণমানুষের দাবি কখনও বৃথা যায় না। মামলা প্রত্যাহারসহ রোজিনার মুক্তি যতদিন না হচ্ছে, ততদিন সাংবাদিকরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

সাংবাদিকরা নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, রোজিনা ইসলামকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানো হয়েছে। তার ব্যাগে জোর করে নথিপত্র ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। তাও রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে যে মামলা করা হয়েছে তা ভুয়া। কারণ, যুগ যুগ ধরেই সাংবাদিকরা এভাবে তথ্য সংগ্রহ করে থাকেন। আমরা চাই, এমন ঘটনা যেন আর কখনও না ঘটে। নইলে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ ভেঙে পড়বে। দেশের গণতন্ত্র হারিয়ে যাবে।

এদিকে রোজিনা ইসলামকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা রাজশাহী জেলা শাখা ও আরইউজে। জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা রাজশাহী জেলা শাখার সভাপতি রফিক আলম ও সাধারণ সম্পাদক এস এইচ এম তরিকুল এবং আরইউজে’র সভাপতি রফিকুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক তানজিমুল হকের প্রেরিত পৃথক বিবৃতিতে প্রতিবাদ জানিয়ে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।

পিডিএসও/এসএম শামীম

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
রাজশাহী,বিক্ষোভ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close