ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

  ০৪ মে, ২০২১

হেফাজত নেতা আবদুর রহিম কাশেমীসহ গ্রেপ্তার ৭

ফাইল ছবি

হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বড় মাদ্রাসা জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়ার সাবেক শিক্ষা সচিব মুফতি আব্দুর রহিম কাসেমীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে জেলা শহরের ভাদুঘর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে গত ২৪ ঘন্টায় ক্বওমী ছাত্র ঐক্য পরিষদের সেক্রেটারী এবং জামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা বেলাল হোসেনসহ আরো ৬ কর্মী সমর্থককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মো. রইছ উদ্দিন জানান, হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থকদের চালানো তান্ডবের ঘটনা তদন্ত করে আব্দুর রহিম কাসেমীর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। এছাড়া ২০১৬ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চালানো তান্ডবেও তাঁর সংশ্লিষ্টতা ছিল।

এর আগে হোফাজতে ইসলামের চালানো তাণ্ডবের ঘটনার প্রতিবাদ এবং জড়িতদের বিচার চেয়ে গত ২৩ এপ্রিল হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং জেলা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে পদত্যাগ করেন আব্দুর রহিম কাসেমী।

ওইদিন সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো লিখিত বক্তব্যে আব্দুর রহিম কাসেমী বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী হেফাজতে ইসলামের ডাকে যে চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়, তা নজিরবিহীন ও অমানবিক। দেশ ও জনগণের জানমালের ক্ষতি কোনোভাবেই ইসলামসম্মত হতে পারেনা। যাদের প্ররোচনায় দেশ ও জনগণের জানমালের এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান কাসেমী।

এদিকে গত ২৪ ঘন্টার অভিযানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ক্বওমী ছাত্র ঐক্য পরিষদের সেক্রেটারিসহ আরো ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গত ২৬, ২৭ ও ২৮ শে মার্চ হেফাজতের বিক্ষোভ চলাকালে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত পুলিশ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে হেফাজতের ব্রাহ্মণবাড়িয়া ক্বওমী ছাত্র ঐক্য পরিষদের সেক্রেটারী এবং জামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা বেলাল হোসেনসহ ৬ কর্মী সমর্থককে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ জানায়, সহিংস ঘটনাসমূহের প্রাপ্ত স্থির চিত্র ও ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে অভিযুক্তদের সনাক্ত করা হয়। বাকীদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তারকৃত মাওলানা বেলাল হোসেন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে গত ২৬, ২৭ ও ২৮ শে মার্চ হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের নির্দেশে সরকার উতখাতের সূদুরপ্রসারি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে জামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসাসহ আশেপাশের বিভিন্ন মাদ্রাসার ছাত্র শিক্ষককে নিয়ে ব্যাপক তাণ্ডবলীলা চালায়।

এসময় সিনিয়র মুরুব্বিদের প্রত্যক্ষ নির্দেশে হেফাজতের ছাত্র শিক্ষকগণ জেলার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায় ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া তাণ্ডবের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় ৪৯ টি, আশুগঞ্জ থানায় ৪ টি ও সরাইল থানায় ২ টি ও রেলওয়ে থানায় ১ টিসহ মোট ৫৬ টি মামলা হয়েছে।

এসকল মামলায় ৪১৪ জন এজাহারনামীয় আসামিসহ অজ্ঞাতনামা ৩০-৩৫ হাজার মানুষকে আসামি করা হয়েছে। তাদেরমধ্যে ৪১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

পিডিএসও/এসএম শামীম

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
হেফাজত নেতা,আবদুর রহিম কাশেমী,গ্রেপ্তার
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close