মৃনাল সরকার মিলু (তাড়াশ) সিরাজগঞ্জ

  ০৪ মে, ২০২১

আশ্বাসে কেটেছে যুগের পর যুগ

ব্রিজের অপেক্ষায় ৫০ বছর

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার সগুনা ইউনিয়নের কাটাবাড়ি গ্রামের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদী উপর ৫০ বছরেও তৈরি হয়নি একটি ব্রিজ। একটি ব্রিজের অভাবে কাটাবাড়ি গ্রামের পুর্ব ও পশ্চিম পাড়ের গ্রামের হাজারো মানুষের ভাগ্য বদলায়নি যুগ যুগ ধরে। বর্ষাকালে স্রোতের টানে ডিঙ্গি নৌকায় পার হয়ে বিভিন্ন স্থানে যেতে হয়। অন্যদিকে শুষ্ক মৌসুমে ওই গ্রামের মানুষের পায়ে হেঁটে নদী পার হয়ে যেতে হয় বিভিন্ন এলাকার প্রান্তে।

গ্রামবাসী জানায়, কাটাবাড়ি গ্রামের মাঝদিয়ে বয়ে গেছে গোমানী নদী আর এই নদীই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে স্থানীয় সাধারণ মানুষের যাতায়াত সহ কোমলমতি স্কুল শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে। এই নদীর উপর ব্রিজ না থাকায় ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে নিজ উদ্যোগে বর্ষাকালে ঝুঁকি নিয়ে নৌকাতে পারাপার হতে হয় গ্রামের হাজার হাজার সাধারণ মানুষসহ কোমলমতি বিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থীদের। এছাড়াও কোন মহিলার প্রসব বেদনা অথবা মুমূর্ষু রোগী হাসপাতালে নিতে হলে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

স্থানীয় গ্রামের কৃষকেরা ধান আলু খিরা সহ বিভিন্ন সবজি প্রচুর পরিমাণে উৎপাদন করে থাকেন। কিন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থা নড়বড়ে থাকায় ওইসব পণ্য বাজারজাতকরণে নানা বিড়ম্বনার কারণে ন্যায্যমূল্য হতে বঞ্চিত হতে হয়।

স্থানীয় আফসার প্রামানিক, মহসীন আলী, সোলেমান আলী ও খোদাবক্স দাবি ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়ে বলেন, এখানে একটি ব্রিজ নির্মিত হলে একদিকে এলাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাচঁ শতাধিক শিক্ষার্থী নিরাপদে আসা-যাওয়া করতে পারবে অপরদিকে গ্রামের মানুষসহ আশেপাশের ১০টি গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা, হাটবাজার, অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও গ্রামীণ ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে।

তারা ক্ষোভের সাথে বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পার হয়েছে, ক্ষমতার পালা বদল হয়েছে বেশ কয়েকবার, উন্নয়ন হয়েছে আশেপাশের আনেক রাস্তাঘাট, জনপ্রতিনিধিরা যারাই এখানে এসেছেন দুর্ভোগের কথা শুনেছেন, মিলেছে আশ্বাস। আর এই আশ্বাস নিয়েই কাটছে যুগের পর যুগ অমানবিক দুর্দশার জীবনযাত্রা আমাদের এগিয়ে আসেনি কেউ?

কাটাবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা ও স্কুল শিক্ষক সিরাজুল হক বলেন, আমাদের গ্রামের হাজারো মানুষ বিভিন্ন শাক-সবজিসহ বিভিন্ন চাষাবাদ করে। দীর্ঘদিন ধরে একই গ্রাম কিন্ত মাঝখানে নদী থাকায় দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে আছি আমরা।

গ্রামবাসীরও একটাই দাবি, আফসার আলীর বাড়ি থেকে হায়দারের সরকারের বাড়ি পযর্ন্ত বয়ে যাওয়া নদীতে একটা ব্রিজ আর দুই কিলোমিটার পাকা সড়ক।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো: মনি জানান, উপজেলার একমাত্র অবহেলিত গ্রাম এটি। অথচ এই গ্রামের ফসলি মাঠ থেকে প্রচুর পরিমাণে শাক-সবজি উৎপাদিত হয়। যা দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি হয়। অথচ একটি ব্রিজ হলে এলাকার কৃষকেরা সঠিক দাম পাবেন ফসলাদির। এছাড়া অল্প সময়ের মধ্যে উপজেলা সদরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করা যাবে।

তাড়াশ উপজেলা এলজিইডির সহকারী প্রকৌশলী মো: আনোয়ার হোসেন জানান, রাস্তা পাকাকরণের জন্য ও একটা ব্রিজের বিষয়ে আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

সিরাজগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা: মো. আব্দুল আজিজ বলেন, কাটাবাড়ি গ্রামের রাস্তা পাকারকরণ ও নদীতে একটা ব্রিজ দরকার। এ বিষয়ে আমি মন্ত্রণালয়ে কথা বলেছি, যেন দ্রুততম সময়ে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা যায়।

পিডিএসও/ইউসুফ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
সিরাজগঞ্জ-৩,তাড়াশ,ব্রিজের দাবি,ক্ষোভ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close