চট্টগ্রামের হাটহাজারী পৌরসভার ফটিকা গ্রামের হিন্দুপাড়ার বৃদ্ধ রনজিতের জীর্ণ কুড়েঘরকে নতুন ঘরে রূপ দিলেন ইউএনও।

বৃহস্পতিবার সকালে বৃদ্ধ রনজিত ও তার স্ত্রীর হাতে নতুন ঘরের চাবি তুলে দেন হাটহাজারীর ইউএনও রুহুল আমিন।

রনজিত একসময় রং মিস্ত্রির কাজ করতেন। স্ত্রী পুত্র কন্যা নিয়ে ছিল সুখের সংসার। ছেলে বাসু চৌধুরী পল্লী চিকিৎসক হিসেবে গ্রামে গ্রামে চিকিৎসা সেবা দিতেন। মেয়েকে বিয়ে দিয়েছিলেন সম্ভ্রান্ত এক পরিবারে। ধনী না হলেও রনজিতের ঘরে অভাব ছিলনা।

একসময় ভাগ্যের বিড়ম্বনায় পড়ে রনজিতের পরিবার। কোন এক অজানা ব্যাধিতে রনজিতের পুত্র কন্যা দুজনই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। স্বাভাবিক বোধ বুদ্ধি হারিয়ে পাগল প্রায় হয়ে তারা মানবেতর জীবন যাপন শুরু করেন।

ছেলে মেয়ের এমন পরিণতিতে মুষড়ে পড়েন সত্তরোর্ধ রনজিত। অসুস্থ হয়ে পড়ে থাকেন ঘরে। তার ষাটোর্ধ স্ত্রী মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে অসুস্থ স্বামী ও মানসিক ভারসাম্যহীন দুই ছেলে-মেয়ের মুখে আহার তুলে দিতে প্রাণান্তকর চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

এমন অবস্থায় বছরের পর বছর মেরামতের অভাবে রনজিতের একমাত্র ঘরটি জরাজীর্ণ হয়ে মাটি ছুঁইছুঁই করে কোনমতে টিকে ছিল।

অসহায় রনজিতের এই দুরবস্থার খবর পেয়ে নিশ্চুপ বসে থাকেননি ইউএনও রুহুল আমিন। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে তড়িৎ নির্দেশ দেন অসহায় রনজিতকে ঘর তৈরি করে দেয়ার জন্য। ইউএনওর তত্ত্বাবধানে অসহায় বৃদ্ধ রনজিতের জন্য তৈরি করা হয় নতুন বাড়ি।

নতুন ঘর পেয়ে খুব খুশি রনজিত। তিনি বলেন, গত দশ বছর ধরে এই জীর্ণ ঘরে বসবাস করে আসছি। ইউএনও রুহুল আমিনকে ধন্যবাদ। তিনি আমাকে একটি নতুন ঘর দিয়েছেন। তিনি নিজের ও সন্তানদের চিকিৎসা খরচের জন্য ইউএনও সহ সমাজের বিত্তবানদের নিকট অনুরোধ জানিয়েছেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রুহুল আমিন জানান, স্থানীয় এক সাংবাদিকের মাধ্যমে ঘটনা জানার পর তড়িৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেই। এই পরিবারের ঘরটি দিতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছি।

পিডিএসও/ জিজাক