লালমনিরহাট প্রতিনিধি
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বইয়ের আদলে দৃষ্টিনন্দন ফটক
কলেজ গেটে বইয়ের আদলে ব্যতিক্রম এবং অসাধারণ একটি ফটক নির্মাণ করায় যেন আনন্দে উদ্বেলিত লালমনিরহাট জেলার বইপ্রেমী মানুষগুলো। তাই দৃষ্টিনন্দন এই ফটক দেখতে শুধু লালমনিরহাট জেলার নয়, বিভিন্ন জেলার দূর-দূরান্ত থেকে প্রতিদিন আসছেন দর্শনার্থীরা।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা দইখাওয়া আদর্শ কলেজের সামনে তৈরি করা হয় এই ফটকটি। দেশ-বিদেশের কথাসাহিত্যিক ও লেখকদের ৫০টি বই দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান ফটক। শুক্রবার বিকেলে সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোতাহার হোসেন এমপি ফটকটির উম্মোচনা করেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, হাতীবান্ধা-চাপারহাট আঞ্চলিক সড়কের পাশেই চোখে পড়বে বইয়ের আদলে গড়ে তোলা দইখাওয়া আদর্শ কলেজের প্রধান ফটকটি। দেশ-বিদেশের কথাসাহিত্যিক ও লেখকদের ৫০টি বই দিয়ে দুই সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে রয়েছে ফটকটি। ঠিক ওপরে রয়েছে হাতের মুঠোয় গ্লোব। যে কারণে বইয়ের কারুকাজে মন কাড়ছে দর্শনার্থীদের। বইয়ের আদলে তৈরি করা ফটকটি একনজর দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে আসছেন তারা। অনেকেই দাঁড়িয়ে কথাসাহিত্যিকদের নামগুলো পড়ছেন। আবার এসব বই গুলো লাইব্রেরিতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা পড়ছেন।
এছাড়াও কলেজের ভিতরে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন এক শহীদ মিনার। শহীদ মিনারটিকে আগলে ধরে রেখেছে একটি বই। বইয়ের মলাটে রয়েছে বর্ণ, রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের গল্প।
সীমান্তবর্তী এলাকায় কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হওয়াতে এখানকার বেশির ভাগ শিক্ষার্থী নিম্নবিত্ত পরিবারের। অনেকেই বাড়ি থেকে খাবার নিয়ে আসতে পারেন না। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে কলেজ কর্তৃপক্ষ দুপুরে অল্প টাকায় খাবার পরিবেশনের সিদ্ধান্ত নেয়। ১০ টাকায় খাওয়া যাবে ক্যান্টিনে।
কলেজের সৌন্দর্য বাড়াতে দৃষ্টিনন্দন ফটক তৈরি করতে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা কাজ করছেন বলে জানালেন শিক্ষকরা। চারুকলার শিক্ষার্থীরা ফটক নির্মাণের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। কলেজের অধ্যক্ষ কলেজ ফান্ড থেকে কিছু টাকা বরাদ্দ দিয়ে নির্মাণ কাজ শুরু করেন। টানা ১ বছর কাজ করে তৈরি করা হয়েছে ৫০টি বই দিয়ে ফটকটি।
মূলত স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে এই দৃষ্টিনন্দন ফটকটি নির্মাণ করা হয়েছে। তাই বাংলা ও ইংরেজি সাহিত্যের ৫০টি বই দিয়ে তৈরি করা হয় এটি। শুক্রবার ফটকের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেন।
কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মমতাজ সাথি বলেন, শিক্ষকদের পরিকল্পিত চিন্তাভাবনার কারণে এ ধরণের একটি ফটক তৈরি হয়েছে। বই হচ্ছে জ্ঞানের ভাণ্ডার, যা বইয়ের আদলে নির্মিত ফটকের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বুঝানো হয়েছে।
রাজশাহী ইউনিভার্সিটির আল-আমিন ইসলাম নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, মূলত শিক্ষার্থীদের বইয়ের প্রতি আগ্রহ বাড়াতে এই ফটকটি তৈরি করা হয়।
কলেজের অধ্যক্ষ মো. মোফাজ্জল হোসেন বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ফটকটি তৈরি করা হয়েছে । সে কারণে দেশ-বিদেশের কথাসাহিত্যিক ও লেখকদের ৫০টি বই দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। এটি নির্মাণ করতে পেরে আমার খুব ভালো লাগছে। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানে অনেক কিছু করার পরিকল্পনা রয়েছে।