এম এ মাসুদ, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা)
সুন্দরগঞ্জে সবজিতে স্বস্তি, চাষির মনে অস্বস্তি
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে বিভিন্ন প্রকার শাক-সবজির দাম কমে যাওয়ায় ভোক্তারা স্বস্তিতে থাকলেও দাম না পেয়ে উৎপাদনকারী চাষিদের মনে দেখা দিয়েছে অস্বস্তি।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৬৪০ হেক্টর জমিতে আলু, বেগুন, টমেটো, ফুলকপি, বাধাকপি, মিষ্টি কুমড়া, লাউ, করলাসহ বিভিন্ন শাক-সবজির চাষ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১১ হাজার ৫২০ মেঃটন।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় ধারণা করা হচ্ছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে সবজি বেশি উৎপাদিত হয়েছে। এছাড়া পার্শ্ববর্তী মিঠাপুকুর ও পীরগাছা এলাকা থেকে সবজি আসায় বাজারে যথেষ্ট সরবরাহ রয়েছে উপজেলার হাট, বাজারগুলোতে। ফলে বাজারে এখন শাক-সবজি দামে বেশ সস্তা। ১০০ টাকায় ব্যাগ ভর্তি বাজার করতে পেরে খুশি স্থানীয় ভোক্তারা।
সুন্দরগঞ্জ পৌরবাজার, মীরগঞ্জ হাট পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিকেজি আলু পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১২-১৩ টাকা খুচরা বাজারে ১৫ টাকা, বড় বাধা কপি প্রতিটি পাইকারি ৩ টাকা খুচরা বাজের ৫ টাকা, প্রতিটি বড় সাইজের ফুলকপি পাইকারি ৩ টাকা খুচরা ৫ টাকা, টমেটো প্রতি কেজি পাইকারি ৮ টাকা খুচরা ১০ টাকা, প্রতি কেজি গাজর পাইকারি ৮ টাকা খুচরা ১০ টাকা, প্রতিকেজি মূলা পাইকারি ৩ টাকা খুচরা ৫ টাকা, প্রতি কেজি কাঁচামরিচ পাইকারি ২৫-৩০ টাকা খুচরা ৪০ টাকা, পেঁয়াজ প্রতিকেজি পাইকারি ২০ টাকা খুচরা ২৫-৩০ টাকা, আদা, রসুন প্রতি কেজি পাইকারি ৬০ টাকা খুচরা ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
তবে এর আগে বেগুনের দাম কমলেও বর্তমানে তা বৃদ্ধি পেয়ে প্রতি কেজি বেগুন পাইকারি ৭ টাকা খুচরা ১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি মিষ্টি কুমড়া, লাউ আকার ভেদে পাইকারি ৮ -২০ টাকা খুচরা বাজারে ১৫-৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। করলা প্রতিকেজি পাইকারি ৬০ টাকা এবং খুচরা বাজারে তা ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া শাকের দামও বেশ কমে গেছে।
শাক-সবজির দাম কম হওয়ায় ব্যাগ ভর্তি বাজার করতে পেরে খুশিতে রয়েছেন ভোক্তারা। এদিকে, ভোক্তারা স্বস্তিতে থাকলেও দাম কমে যাওয়ায় শাক-সবজি উৎপাদনকারী কৃষকরা পড়েছেন অস্বস্তিতে।
মিষ্টি কুমড়া চাষী ও স্থানীয় শিক্ষক কামরুজ্জামান বাবু বাজারে মিষ্টিকুমড়া বিক্রি করতে এলে পাইকারি বাজারে কথা হয় এ প্রতিবেদকের সাথে। তিনি বলেন, মিষ্টি কুমড়া চাষে খরচ করেছি প্রায় ৮ হাজার টাকা। প্রতিটি কুমড়া পাইকারি ৮ টাকা ও ১৫ টাকা দরে বিক্রি করে উৎপাদন খরচও তুলতে পারছি না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ রেজা ই মাহমুদ বলেন, কৃষক যাতে ফসলের ন্যায্য মূল্য পায় সে জন্য গতবছর আমি মরিচ ও তরমুজ বাইরে বিক্রির ব্যবস্থা করেছিলাম। এ মৌসুমে ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করার জন্য 'সুন্দরগঞ্জ কৃষি বাজার নামে একটি পেইজ খোলা হয়েছে। কৃষকের কাছ থেকে সবজি ক্রয় করে তা 'কৃষি ভ্যান'র মাধ্যমে বিক্রির ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া করা হবে সবজি দোকান ঘর এবং বিষমুক্ত সবজি চাষের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
পিডিএসও/এসএম শামীম