চট্টগ্রাম ব্যুরো

  ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১

সৎ থাকার আদর্শ পেয়েছি বাবার কাছ থেকে : স্থানীয় সরকারমন্ত্রী

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, আমি যে মন্ত্রণালয়ে আছি সেখানে বিলিয়ন, মিলিয়ন টাকা অবৈধ পথে আয়ের সুযোগ আছে। কিন্তু আমি এখনো চেষ্টা করি নিজেকে সৎ ও স্বচ্ছ রাখতে। আমার সৎ থাকার এ আদর্শ আমি পেয়েছি বাবার কাছ থেকে। যত দিন বেচেঁ থাকবো মানুষের পাশে থাকবো। সৎ ও স্বচ্ছতার সাথে বাকি জীবন কাটাতে চাই।

শুক্রবার রাতে রেডিসন ব্লু চট্টগ্রাম বে ভিউতে জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল (জেসিআই) চট্টগ্রাম কসমোপলিটনের ‘চেইন হ্যান্ডওভার সিরোমনি ২০২১’অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তরুণ ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, আমি সাধারণ পরিবার থেকে বড় হয়েছি। অনেকবার সংসদ সদস্য হয়েছি। সংসদ সদস্য হিসেবে মানুষের জন্য করেছি। এখন বড় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে। সরকারের সবচেয়ে বড় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেও সততার সাথে কাজ করে যাচ্ছি। তিনি বলেন, সফলতা ও সততার পেছনে অণুপ্রেরণা পেয়েছি পিতার আদর্শ থেকে।

মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ধনী পরিবারের সন্তান নই। পারিবারিকভাবে তেমন কোন কোনো ধন-সম্পদ পাইনি। তবে আমি গরীব মানুষ নই। আমার বাবা অত্যন্ত আল্লাহওয়ালা মানুষ ছিলেন। বাবা-মা গ্রামে থাকতেন, গ্রামে আমার জন্ম হয়েছে। আমি যখন স্কুলে পড়ছি, তিনি অবসর নিয়েছেন। কৃষি আয়ের উপর নির্ভরশীল ছিল আমার পরিবার। সংসার কোনমতে চলতো কৃষির আয় দিয়ে।’

তিনি বলেন, আমার প্রথম রোজগার ছিল ১০০ টাকা। বাবার হাতে এ টাকা তুলে দেয়ার পর তিনি খুশি হলেন। কিন্ত একটু পরে মুখটা কালো করে বললেন, বাবা তোমরা বড় হয়েছো, রোজগার করবা, তোমার এ টাকার উপর কোন সন্দেহ থাকলে আমাকে দিও না। আমার জমি-জমা যা আছে তার কিছু অংশ বিক্রি করে খেয়ে গেলেও আমার বাকি জীবন চলে যাবে। আমি সারাজীবন ভালো ও সৎ রোজগারের উপর নির্ভরশীল ছিলাম। বাকি জীবন আমি কোন প্রকার অসৎ রোজগার থেকে মুক্ত থাকতে চাই।

তাজুল ইসলাম বলেন, ‘তখন বাবা ছাড়া আমার আর কেউ নেই যে টাকা দিতে হবে। শুধু বাবাকে দেয়ার জন্য আমার টাকা রোজগার করা। বাবার প্রতি আমার সর্বোচ্চ ইমোশন ও শ্রদ্ধা কাজ করতো। ১০ টাকাও যদি রোজগার করতে পারি সেটা বাবাকে দিতে পারলে তিনি খুশি হবেন-এটা আমার কাছে ছিল আবেগের বিষয়। আর এই টাকাটা যদি অসৎ পথে রোজগার হয় তাহলে বাবাকে দিলে তিনি মনে কষ্ট পাবেন। কারণ তিনি আমাকে নিষেধ করেছেন। ’

মন্ত্রী বলেন, ‘আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম, তখন আমি বিশ্বাস করতাম না যে লেখার মধ্যে কোনো মিথ্যা থাকতে পারে। বলার মধ্যে মিথ্যা থাকতে পারে- এটা আমি বিশ্বাস করতাম। বিশ্বাস করতাম যে কথার মধ্যে মিথ্যা বলে মানুষ। কিন্তু মিথ্যা কথা লেখে এটা কিন্তু তখন পর্যন্ত আমি বিশ্বাস করতাম না, আমি তখন এতটা বোকা ছিলাম। সে সময় বাবা সৎ পথে রোজগার নিয়ে যে কথাগুলো বলেছেন সেগুলো আমি মেনে চলার চেষ্টা করে আসছি সত্যিকার অর্থে। আমি জানি না এটা আপনারা বিশ্বাস করবেন কিনা, কিন্তু এটা সত্য। সিরিয়াসলি আমি চেষ্টা করে আসছি। যতটুকু সততার সাথে টাকা রোজগার করার সুযোগ ছিল, শতভাগ পারা যায়নি আমাদের সমাজের কারণে। কিন্তু এক ইঞ্চিও এদিক সেদিক হইনি যতটুকু পারা গেছে।’

জেসিআই চট্টগ্রাম কসমোপলিটনের সভাপতি টিপু সুলতান সিকদারের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী। কি নোট স্পিকার ছিলেন জেসিআই বাংলাদেশের সভাপতি নিয়াজ মোর্শেদ এলিট। আরও বক্তব্য রাখেন জেসিআই বাংলাদেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহমুদ উন নবী প্রিন্স ও চট্টগ্রামের সদ্য বিদায়ী সভাপতি শহীদুল মোস্তফা চৌধুরী মিজান।

অনুষ্ঠানে জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল চিটাগাং কসমোপলিটনের নতুন পরিচালনা পর্ষদের কাছে পুরনো পর্ষদ দায়িত্ব হস্তান্তর করে।

পিডিএসও/ জিজাক

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী,বাবা,তাজুল ইসলাম
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close