reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১

অজানা রোগে পচে যাচ্ছে মাছ, হতাশায় মৎস্যচাষি

অজানা এক রোগে আক্রান্ত হয়ে মাছ মরে যাওয়ায় হতাশায় পড়েছেন ঠাকুরগাঁও জেলার কিছু মৎস্যচাষি। হঠাৎ করেই পরিবর্তন হচ্ছে মাছের লেজের রং। ধীরে ধীরে মাছটির শরীরের রং যেন পাল্টে ঘায়ে পরিণত হচ্ছে। অবশেষে পচন ধরে ভেসে উঠছে মাছগুলো।

বুধবার সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের মৎস্যচাষি আসাদুজ্জামান পুলকের পুকুরে গেলে এমন চিত্র চোখে পড়ে। শুধু পুলক একাই নন, আশপাশের কয়েকজন মৎস্যচাষিও যেন পড়েছেন হতাশায়।

সরেজমিনে জানা যায়, কিছুদিন ধরেই মৎস্যচাষিদের পুকুরে মাছ পচে ভেসে উঠতে শুরু করে। প্রথম দিকে বিষয়টি সেভাবে গুরুত্ব দেয়নি তারা। পর্যায়ক্রমে প্রতিদিন একইভাবে পুকুরগুলোতে ভেসে উঠে পচা মাছ। বিভিন্ন ধরনের ওষুধ প্রয়োগের পরেও যেন কোনো ভালো ফলাফল পাননি চাষিরা।

তবে চাষিদের অভিযোগ, জেলার মৎস্য কর্মকর্তারা কখনো মাঠপর্যায়ে এসে এসব নিয়ে কোনো পরামর্শ দেন না। সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাদের তথ্য মতে, সদর উপজেলায় ৪ হাজার ৫০০ মৎস্যচাষি রয়েছে।

মৎস্যচাষি আসাদুজ্জামান পুলক বলেন, মাছটির যখন একটা পোনা সাইজ আসে হঠাৎ করেই তখন একটি রোগ দেখা যায়। কেউ জানে না, কোন রোগের কারণে এই সমস্যা হচ্ছে। রোগটা হওয়ার পর থেকে যতোই খাবার দেই, যতোই পরিচর্যা করি না কেন, মাছের কোনো বৃদ্ধি হয় না। যার কারণে ধীরে ধীরে মাছের রং পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। একপর্যায়ে মাছটি মরে পানির নিচে পড়ে যাচ্ছে। এরপর সেটি পচে ভেসে উঠে।

তিনি আরও বলেন, আমার ২০টি পুকুরে আমি এখন পর্যন্ত ৯ লাখ টাকার মতো খরচ করেছি। আমরা যে মাছ চাষ করছি সে রকম মাছ আমরা পাচ্ছি না। এভাবে যদি মাছ মরতে থাকে তাহলে লাভের আশা তো দূরের কথা আসলটাই উঠবে না। এদিকে মৎস্য কর্মকর্তারা কখনো মাঠপর্যায়ে এসে দেখে না এসব সমস্যা।

আরেক মৎস্যচাষি খাদেমুল ইসলাম বলেন, কিছুদিন ধরেই পুকুরে হঠাৎ করেই মাছগুলো মরে ভেসে উঠতে শুরু করেছে। বিভিন্ন ধরনের ওষুধ দেওয়ার পরেও কোনো লাভ হচ্ছে না। লাখ টাকার উপরে খরচ করে এই মাছ চাষ করতে হয়। যেভাবে প্রতিদিন মাছ মরতে শুরু করতে টিকে থাকা মুশকিল।

পাশেই কথা হয় আরেক মৎস্যচাষির ম্যানেজার ননীর সাথে। তিনি ঢাকা পোস্টকে জানান, মাছের শরীরে ঘা হচ্ছে, রং পাল্টে যাচ্ছে ও পচে যাচ্ছে। যার কারণে মাছ বড় হওয়ার আগেই মারা যাচ্ছে। প্রতিদিন ১০-১২টা মাছ ভেসে উঠে।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আয়েশা আক্তার বলেন, মাছের শরীরে এ ধরনের রোগের বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো চাষি অভিযোগ করেনি। তবে বিষয়টি একেবারেই নতুন। এর আগে কখনো এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। আমি নিজে মাঠপর্যায়ে গিয়ে সকল বিষয় পরিদর্শন করে থাকি।

তিনি আরও বলেন, অভিযোগ হাতে পেলেই সেই মৎস্যচাষিদের পুকুরে গিয়ে স্যাম্পল কালেক্ট করে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য পাঠাব।

পিডিএসও/এসএম শামীম

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
অজানা রোগে,পচে যাচ্ছে মাছ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close