নোয়াখালীতে এবার ছাত্রীকে গণধর্ষণের চেষ্টা, বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ
নোয়াখালী সদর উপজেলার কাদিরহানিফ এলাকায় সহপাঠীর সাথে কথা বলা অবস্থায় এক কলেজছাত্রীকে (১৯) আটকের পর বিবস্ত্র করে ছবি-ভিডিও ধারণ ও গণধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পর নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্রী বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করলেও এখনো ধরা-ছোঁয়ার বাইরে আসামিরা।
প্রতিনিয়ত আসামিরা বিভিন্ন মাধ্যমে নির্যাতিতার পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এদিকে মামলার ৩নং আসামি রায়হান বিদেশ গমনের চেষ্টা করার খবর পেয়ে ইমিগ্রেশন পুলিশের মাধ্যমে তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি রাতে ওই ছাত্রী তাদের বাড়ির গেটের সামনে এক সহপাঠীর সাথে কথা বলছিলো। এসময় বাড়িতে তার ছোট ভাই থাকলেও মা-বাবা আত্মীয়ের বাড়িতে ছিলেন। এশার নামাজের আজান হওয়ায় তার ছোট ভাই মসজিদে নামাজ পড়েতে যায়।
এর কিছুক্ষণ পর অভিযুক্ত পুলক মজুমদার, আকবর হোসেন ও রায়হান উদ্দিন এসে ওই ছাত্র-ছাত্রীর সাথে টানা-হেঁচড়া শুরু করে। এক পর্যায়ে ওই তিনজন তাদের ঘরের ভিতরে নিয়ে যায়।
নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্রীর অভিযোগ, ঘরের ভিতরে নিয়ে যাওয়ার পর রায়হান তার সহপাঠিকে তাদের রান্নার কক্ষে ও পুলক এবং আকবর ঘরের ভিতরের কক্ষে তাকে নিয়ে যায়। ওই কক্ষে গিয়ে প্রথমে তাকে এলোপাতাড়ি মারধর ও পরে জামা কাপড় খুলে বিবস্ত্র করে তাদের সাথে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গিতে ছবি ও ভিডিও ধারণ করে।
এ সময় পুলক ও আকবর তার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে অন্যথায় তার এসব ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেবে বলে হুমকি দেয়। কিন্তু ওই ছাত্রী টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে পুলক ও আকবর তাকে গণধর্ষণের চেষ্টা চালায়।
এরইমধ্যে ছাত্রীর সঙ্গে ধ্বস্তাধ্বস্তির শব্দ শুনে পাশের সড়ক দিয়ে যাওয়া লোকজন এগিয়ে আসলে অভিযুক্ত তিনজন পালিয়ে যায়। পরে এ ঘটনায় ওই ছাত্রী বাদী হয়ে গতকাল শনিবার রাতে পুলক, আকবর ও রায়হানকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে সুধারাম মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
ওই ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ, ঘটনার পর পুলক মজুমদারের বড় ভাই সুজন মজুমদার রাত ১২টার দিকে তাদের বাড়িতে এসে জোর পূর্বক নির্যাতিতা ছাত্র-ছাত্রীকে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। এরপর থেকে আসামিরা বিভিন্নভাবে ওই ছাত্রী ও তার পরিবারের লোকজনকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে।
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাহেদ উদ্দিন বলেন, ওই ছাত্রীর দায়ের করা মামলায় অভিযুক্ত তিন আসামিকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে। অপরদিকে মামলার তিন নং আসামি বিদেশ গমনের সংবাদ পেয়ে ইমিগ্রেশন পুলিশের সহযোগিতায় তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।