মৃণাল সরকার মিলু, তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ)
চলনবিলের আদিবাসীদের আগাম শ্রম বিক্রি
চলনবিলে আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় বর্তমান সময়ে কাজ না থাকায় আদিবাসী নারী-পুরুষ কৃষি শ্রমিকরা আগাম শ্রম বিক্রি শুরু করেছেন। আবার অনেকে কাজ না থাকা এই সময়টায় বসে না থেকে মাঠ থেকে বিন্নার ফুলকি, খেজুরের পাতা সংগ্রহ করে ঝাড়– ও খেজুর পাতার পাটি তৈরি করে আয় রোজগার করার চেষ্টা করছেন।
জানা গেছে, চলনবিলের সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, রায়গঞ্জ, উল্লাপাড়া পাবনার ভাঙ্গুড়া, চাটমোহর ও নাটোরের সিংড়া এলাকায় প্রায় ৪০-৪৫ হাজার আদিবাসী নারী-পুরুষ বসবাস করেন। তারা কঠোর পরিশ্রমী বটে। আর আদিবাসীদের এ অঞ্চলে শ্রমের চাহিদা থাকলেও এই সময়টায় কাজ না থাকায় তাদের সংসার চালাতে গিয়ে হিমশিম হয়ে পড়েছেন। এদের মধ্যে উড়াঁও, মাহাতো, রাজবংশী, রবিদাস, কনকদাস, মুরারী, বসাক, সাঁওতালসহ অনেক সম্প্রদায়ের আদিবাসী নারী-পুরুষ মাঠে ঘাটে ও বিভিন্ন বাড়ীতে, ইটের ভাটায় কাজ করে থাকেন।
করোনা অভিঘাত ও বর্ষা মৌসুমে বর্তমান সময়ে আদিবাসীদের এলাকায় তেমন কাজ নেই বললেই চলে। এ সময় মাঠে পাকা ধান কিংবা ইট ভাটায় ইট তৈরির কাজ বা কৃষকের বাড়িতে শ্রমিকের কাজও থাকে না।
এদিকে এ অঞ্চলের ৮০-৮৫ ভাগ আদিবাসী শ্রমজীবি। শ্রম বিক্রি করেই তাদের সংসার পরিচালনা করতে হয়। তাই তারা বোরো ও রোপা আমণের আবাদে কাজ করার জন্য আগাম ২০০-২৫০টাকায় দিন হাজিরা চুক্তিতে শ্রম বিক্রি শুরু করেছেন এমনটি জানিয়েছেন বোয়াইল গ্রামের আদিবাসী কৃষি শ্রমিক কমলেশ মাহাতো।
আবার চলনবিলের আদিবাসী পল্লীতে বিশেষ করে নারীরা সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলনবিলের মাঠ ঘাট থেকে বিন্নার ফুলকা, খেজুরের পাতা সংগ্রহ করে বাড়িতে বয়স্কদের সহায়তায় আকর্ষণীয় নকসায় ঝাড়– ও খেজুর পাতার পাটি তৈরি করছেন।
সিরাজগঞ্জ জেলা আদিবাসী ফোরামের সভাপতি সুশীল মাহাতো জানান, বছরের এই সমটায় কাজ না থাকায় শ্রমজীবি আদিবাসী পরিবার গুলো সংসার চালাতে গিয়ে হিমশিম খান। তাই তাদের মধ্যে অল্প দামে আগাম শ্রম বিক্রির পাশাপাশি ঝাড় পাটি তৈরি করে জীবিকা নির্বাহের চেষ্টা করেন।
পিডিএসও/এসএম শামীম