প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মোকাবিলায় দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করলেও তামাক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই ছুটির আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, শিল্প মন্ত্রণালয়ের বিরাষ্ট্রীয়করণ দফতর থেকে এসব তামাক কোম্পানিকে তামাক পাতা সংগ্রহ, পণ্য উৎপাদন ও বিপণনে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার জন্য দেশের সকল বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসককে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অথচ তামাক সেবনের ফলে করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অধূমপায়ীদের তুলনায় ১৪ গুণ বেশি রয়েছে বলে জানা গেছে।

ফলে করোনার সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তাই এমন পরিস্থিতিতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সেই আদেশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে জনস্বাস্থ্য রক্ষায় তামাক কোম্পানিগুলোর কার্যক্রম বন্ধের দাবি জানিয়েছে উন্নয়ন ও মানবাধিকার সংস্থা ‘এ্যাসোসিয়েশন ফর কম্যুনিটি ডেভেলপমেন্ট-এসিডি’।

এ বিষয়ে এসিডির মিডিয়া ম্যানেজার আমজাদ হোসেন শিমুল স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সিগারেটসহ তামাকজাত দ্রব্য কোনো নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য নয়। বরং যারা ধূমপায়ী তাদের করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার বেশি বলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গবেষণায় উঠে এসেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক করোনার ভয়াবহতা থেকে বাঁচতে ধূমপায়ীদের ধূমপান পরিত্যাগ করার আহ্বানও জানিয়েছেন।

সম্প্রতি শিল্প মন্ত্রণালয় জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনায় না নিয়ে তামাকের দুই বহুজাতিক কোম্পানি ‘ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো-বিএটি’ ও ‘জাপান টোব্যাকো ইন্টারন্যাশনাল-জেটিআই’-কে সিগারেট উৎপাদন ও বিপণনসহ সবধরনের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের বিরাষ্ট্রীয়করণ অধিশাখার উপ-সচিব মোখলেসুর রহমান আকন্দ স্বাক্ষরিত ৩ এপ্রিলের একটি চিঠিতে দেশের সকল বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসককে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর তামাক পাতা সংগ্রহ, পণ্য উৎপাদন ও বিপণনে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে বলা হয়। একইভাবে ৫ এপ্রিলের একটি চিঠিতে ‘জেটিআই’ কোম্পানিকেও একই সহায়তা দিতে বলা হয়েছে।

যে কারণে এসিডির ওই বিজ্ঞপ্তিতে দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে শিল্প মন্ত্রণালয়কে এমন নোটিশ প্রত্যাহার করে অবিলম্বে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, জাপান টোব্যাকোসহ সকল তামাক কোম্পানির কার্যক্রম বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।

পিডিএসও/হেলাল