reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৬ এপ্রিল, ২০২০

ব্যাংক কর্মকর্তার শুভ উদ্যোগ

মাত্র ১০ টাকায় শত মানুষের মুখে ফুটবে হাসি!

দেশজুড়ে করোনাভাইরাস সংকটের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পোহাতে হচ্ছে নিম্নআয়ের মানুষদের। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের অসহায়-দুস্থ, গরিব-দিনমজুর শ্রেণির মানুষ ও তাদের পরিবারগুলো পড়ছে খাদ্য সংকটে। মহামারি করোনার এই সংকটপূর্ণ সময়ে সাধারণ মানুষদের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন খাদ্য সহায়তা। যাতে কেউ যেন একবেলা অভুক্ত না থাকে।

যদিও করোনা পরিস্থিতিতে আমাদের সামর্থ ও শক্তি প্রত্যেকেরই ভিন্ন ভিন্ন। এক্ষেত্রে সাধারণ মানুষকে খাদ্য সহায়তায় অভিনব এক উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন রুপালী ব্যাংক লি.মাগুরা কর্পোরেট শাখার এক ব্যাংক কর্মকর্তা।

‘১০ টাকা বিকাশ করুন, পারলে বেশি, অসহায়ের মুখে আহার দিয়ে আকাশ সমান মিলবে খুশি’। এই শ্লোগানকে উপজীব্য করে মাগুরায় সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন ‘করোনায় অসহায় মাগুরাবাসীর জন্য খাদ্যসহায়তা’ শিরোনামে একটি ফেসবুক গ্রুপ।

গ্রুপের এ্যাডমিন ব্যাংক কর্মকর্তা সন্দিপন বিশ্বাস জানান, ১০ টাকার শক্তি অনেক! আপনার আমার মতো ১ হাজার মানুষ যদি ১০টি করে টাকা কিংবা সামর্থ অনুযায়ী এর চেয়ে বেশি কিছু টাকা দেয়। আমার অশপাশের একটি মানুষও অভুক্ত থাকবে না। সরকারের উপরও চাপ বাড়বে না। করোনার এই ক্রান্তিকাল অতিক্রম করতে আমাদের খেটে খাওয়া মানুষকে পেটের জ্বালায় বাইরে বেরিয়ে করোনা কারণে ক্ষতিবৃদ্ধির সম্ভাবনাও থাকবে না।

তিনি বলেন, ‘ছোট ছোট সহায়তাই বড় বড় মানবিক প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম। ১০টি টাকারও অনেক শক্তি।’

এমনই আবেদন নিয়ে সন্দিপন ফেসবুকে ‘করোনায় অসহায় মাগুরাবাসীর জন্য খাদ্যসহায়তা’ শিরোনামে একটি ফেসবুক গ্রুপ খুলে অসহায় মানুষের পাশে থাকার জন্য বন্ধুদের আহবান জানিয়েছেন। এরইমধ্যে তার এই আহবানে সাড়া দিয়ে তার বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধু, অফিস কলিগ, সিনিয়র অফিসার, ছোটবেলার বন্ধুসহ অনেকেই ইতোমধ্যে টাকা পএঠিয়েছেন।

তিনি জানান, নিজের জন্মদিনে বড়বোন সঙ্গীতা বিশ্বাসের পাঠানো উপহারে ৫০টি পরিবারকে সহায়তা দিতে গিয়ে তিনি অনুভব করেছেন মানুষের ক্ষুধা কোনো নিয়ম মানে না। ক্ষুধা কোনো আইনও মানে না। এ অবস্থায় বন্ধুদের অনেকেরই কিছু করার ইচ্ছা আছে। কিন্তু তারা বিশ্বাসযোগ্য মানুষের অভাবে টাকা পাঠাতে পারেন না বা মানুষের সেবায় কিছু করা থেকে বঞ্চিত থাকেন।

এ অবস্থায় তিনি সিদ্ধান্ত নেন দীর্ঘমেয়াদী এই সংকটে ফেসবুক বন্ধুদের মাধ্যমে হলেও কিছু কিছু কাজ করার। সে থেকেই একটি পার্সনাল বিকাশ একাউন্ড ও ফেসবুক পেজ খুলে সেখানেই অনুদানের অনুদান পাঠানো আবেদন জানিয়েছেন। অর্থ সহায়তা পাঠানোর নম্বর (বিকাশ নং 01710565860 Personal)

ব্যাংক কর্মকর্তা সন্দিপন জানান, অভিনব উদ্যোগের এই আহবানে সাড়া দিয়ে বেশকিছু টাকা এসেছে তার বিকাশ একাউন্টে। যা দিয়ে ৩৩টি পরিবারকে চাল ৩ কেজি , আলু ১ কেজি, তেল ৫০০ গ্রাম, ডাল ২৫০ গ্রাম, লবন ৫০০ গ্রাম, মরিচ ২০০ গ্রাম করে প্যাকেট সম্পন্ন হয়েছে। পরে রাতের আধারে নিজে ও স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেয়া হবে খাদ্যসামগ্রী।

তিনি বলেন, করোনার কারণে অনেকেই ঘরবন্দি। অন্যকে সাহায্য করার ইচ্ছা থাকলেও বাইরে বের হতে পারছেন না। কিংবা এলাকায় আসতে পারছেন না। এ অবস্থায় আমরা দায়িত্ব নিতে পারি। প্রত্যন্ত এলাকার অসহায় মানুষকে খাদ্য পৌছে দিতে আমরা বদ্ধপরিকর।

তিনি সবাইকে আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, যে কেউ চাইলে এই কনসেপ্টাকে কাজে লাগিয়ে মাগুরা জেলার নিজ নিজ এলাকার অসহায় মানুষের জন্য কিছু করতে পারেন। আর দশে মিলে করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ এ কথাতো সেই পুরাতন প্রবাদ। সুতরাং মানুষের জন্য কিছু করতে পারাটাই আমাদের জন্য বড় সার্থকতা।

ফেসবুকে গ্রুেপের লিঙ্ক : করোনায় অসহায় মাগুরাবাসীর জন্য খাদ্যসহায়তা

পিডিএসও/তাজ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
মাগুরা,ফেসবুক গ্রুপ,করোনা সংকট
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close