অর্থনৈতিক প্রতিবেদক
বিকল্প বাজেট প্রস্তাবনায় ড. আবুল বারকাত
‘ঋণ নিয়ে রিজার্ভ বাড়িয়ে আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই’

বৈদেশিক ঋণের অর্থ দিয়ে রিজার্ভ বেশি দেখিয়ে সরকারের আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির (বিইএ) সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত। দেশি-বিদেশি উৎস থেকে নেওয়া রাষ্ট্রীয় ঋণ পরিশোধে স্বস্তিদায়ক অবস্থায় পৌঁছতে কর-জিডিপির অনুপাত কমপক্ষে ১৩ শতাংশ হতে হবে।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) রাজধনীর ইস্কাটনে সংস্থাটির কার্যালয়ে আয়োজিত ‘বিকল্প বাজেট প্রস্তাবনা ২০২৩-২৪ : বৈষম্য নিরসনে জনগণতান্ত্রিক বাজেট’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সব কথা বলেন।
অধ্যাপক ড. আবুল বারাকাত বলেন, আমাদের বৈদেশিক ঋণের বোঝা বাড়ছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে এই ঋণের পরিমাণ ছিল ৫১.১৩ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২০-২১ অর্থবছরে ৬০.১৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। চলতি বছরের শেষ নাগাদ বৈদেশিক মুদ্রার ঋণের পরিমাণ দাঁড়াবে ১১৫ বিলিয়ন ডলার। ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে এই ঋণ পরিশোধে চাপ বাড়বে।
এদিকে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক মিলিয়ে সরকারের মোট ঋণ এখন ১৬৭ বিলিয়ন ডলার বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি। এর মধ্যে বৈদেশিক ঋণ ৪৩ শতাংশ এবং অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে নেয়া ৫৭ শতাংশ। বিইএ সভাপতি বলেন, আমাদের মাথাপিছু ঋণভার ১ লাখ টাকারও বেশি। আবার ঋণের সুদ পরিশোধের খাতটাও এখন বাজেটের অন্যতম বড় ব্যয় খাত, কিন্তু ঋণ পরিশোধের মাধ্যম হিসেবে বাজেটে কর-রাজস্ব খাতে আশানুরূপ অগ্রগতি নেই। বিগত ১০ বছরে ধরে কর-জিডিপি অনুপাত ৮.৮ শতাংশ, তুলনামূলক একই অবস্থানে রয়েছে।
ঋণ পরিশোধে স্বস্তিদায়ক অবস্থায় পৌঁছতে কর-জিডিপির অনুপাত কমপক্ষে ১৩ শতাংশ হতে হবে জানিয়ে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা বাড়াতে রপ্তানি আয় বৃদ্ধির ও রপ্তানি পণ্যে আমদানির অংশ কমাতে হবে। এছাড়াও বাড়াতে হবে রেমিট্যান্স প্রবাহ। না হলে অর্থনীতিতে মারাত্মক ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি হবে বলে হুঁশিয়ারি করেছেন তিনি।
সামাজিক সুরক্ষাকে সর্বাগ্রাধিকার দিয়ে এবারের ‘বিকল্প বাজেট প্রস্তাবনায়’ ২০ লাখ ৯৪ হাজার ১১২ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি। অবশ্য এই বাজেট প্রস্তাবনায় আয় ও ব্যয়ের ক্ষেত্রগুলোও সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করেছে সংস্থাটি।
সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি অধ্যাপক হান্নানা বেগম, অধ্যাপক ড. মো. সাইদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম ও কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ড. জামালউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।
পিডিএসও/এমএ