নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৫ মার্চ, ২০২৩

রোজায় ব্যবসায়ীদের সংযমী, ক্রেতাদের সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান বাণিজ্যমন্ত্রীর

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। ছবি : সংগৃহীত

রমজান মাসে অতিরিক্ত লাভ না করে ব্যবসায়ীদের সংযমী হওয়ার পাশাপাশি ক্রেতাদেরও প্রয়োজনের অতিরিক্ত পণ্য না কেনার আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস উপলক্ষে বুধবার এক অনুষ্ঠানে তিনি এ আহবান জানান।

তিনি আরো বলেন, ‘আমি বারবার অনুরোধ করি, মানুষের কষ্ট হয় এমন কিছু করা যাবে না, মানবিক দায়িত্ব আছে। আমরা সেন্সেবল ব্যবসায়ী চাই। পৃথিবীর সব জায়গায় উৎসবের সময়ে মানুষকে একটু ছাড় দেওয়ার চেষ্টা করে, কিন্তু আমাদের দেশে তার ব্যতিক্রম। রমজান এসেছে ব্যবসায়ীদের বলব আপনারা একটু সংযমী হোন। যা ন্যায্য মূল্য সেটাই নেবেন, আমরা সারাদিন পাহারা দিতে পারব না। আপনাদের বিবেকের কাছে প্রশ্ন রেখে গেলাম, আপনারা দায়িত্ব নেবেন কি না।’

ক্রেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘রমজান সামনে রেখে হুমড়ি খেয়ে কেনার কিছু নেই। একটু সাশ্রয়ী হোন। বাজারে একটা সরবরাহ ব্যবস্থা আছে। পাঁচ কেজি পেঁয়াজের জায়গায় আপনারা ২০ কেজি কেনা শুরু করলে বাজারে হুট করে সরবরাহ চলে আসবে না।’ কোনো কোম্পানির চটকদার বিজ্ঞাপন দেখে ভোক্তাদের আগ্রহী না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, একটা মোটরসাইকেলের উৎপাদন মূল্যের কমে কেউ আপনাকে মোটরসাইকেল দিয়ে দেবে, এসব দেখে আকৃষ্ট হবেন না। এরা দিনশেষে ঠকাবে। একটা সময় আমাদের দেশের মানুষ জানতেন না ভোক্তা হিসেবে তাদের একটি অধিকার আছে, এখন মানুষ জেনেছে, ভোক্তা অধিকার তার কাজ করে যাচ্ছে, মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তার ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে। আমাদের অর্ধেক কাজ হয়ে যাবে যদি আমরা মানুষকে সচেতন করতে পারি।

রমজানে টিসিবির কার্যক্রম নিয়ে টিপু মুনশি বলেন, টিসিবি আগে একবার দিত, এখন দুবার দেবে। ডাল, তেল, চিনি, চাল, খেজুর দেবে, ছোলা-বুট দেবে। এক কোটি মানুষকে দেবে, এক কোটি মানুষকে দেওয়া মানে এক কোটি পরিবারকে দেওয়া।

সম্প্রতি কাতারে এলডিসি বা স্বল্পোন্নত দেশগুলোর সম্মেলেনের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমি কাতারে পঞ্চম এলডিসি সম্মেলনে ছিলাম। আমরা এখনো এলডিসিতে আছি। তবে এবারই আমাদের এলডিসিতে শেষ যোগ দেওয়া; কারণ ২০২৬ সালে আমরা মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়ে যাব।

কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান অনুষ্ঠানে বলেন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বা নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, এসব প্রতিষ্ঠান যেমন শক্তিশালী ও বেগবান হওয়া দরকার তা তারা এখনো হয়ে উঠতে পারেনি। জনগণ তাদের কাজে সন্তুষ্ট; কিন্তু তাদের সক্ষমতা যথেষ্ট নয়। দুই তিনজন কর্মকর্তা দিয়ে একটা জেলায় ভোক্তার অধিকার সংরক্ষণ সম্ভব নয়। তাই দপ্তরটিকে শক্তিশালী করার দাবি জানাই।

এফবিসিসিআই সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সাথে তাল মিলিয়ে আমরাও বাজার ঠিক রাখতে কাজ করছি। বৈশ্বিক সংকটে বাজারে সংকটের প্রভাব আমাদের দেশেও পড়েছে। তবু আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস উপলক্ষে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও গণমাধ্যমকর্মীদের কাছ থেকে রচনা আহ্বান করেছিল ভোক্তা অধিদপ্তর। অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামানও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে দ্রুত সময়ের মধ্যে ভোক্তার অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করা হয় ডিজিটাল প্ল্যাটফরম ‘কনজ্যুমার কমপ্লেইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ বা সিসিএমএস।

‘কনজ্যুমার কমপ্লেইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে’র মাধ্যমে ভোক্তার অভিযোগ গ্রহণ থেকে শুরু করে নিষ্পত্তি পর্যন্ত প্রতিটি ধাপ প্রযুক্তির মাধ্যমে সম্পন্ন হবে। ফলে অভিযোগের বিষয়ে শুনানি ছাড়া অন্যান্য প্রক্রিয়ায় ভোক্তার সশরীরে উপস্থিত হওয়ার প্রয়োজন হবে না।

পাশাপাশি ভোক্তার অভিযোগের বিপরীতে জরিমানা করা অর্থের ২৫ শতাংশ প্রণোদনা নগদের পরিবর্তে ডিজিটাল বা ই-পেমেন্টে পরিশোধ করা হবে।

পিডিএসও/এমএ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
রোজা,ব্যবসায়ীদের সংযমী,ক্রেতাদের সাশ্রয়ী,বাণিজ্যমন্ত্রী
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close