রাকিবুল ইসলাম রাকিব, গৌরীপুর (ময়মনসিংহ)

  ২৭ অক্টোবর, ২০২১

শখের বসে সফল উদ্যোক্তা হলেন নিপা

লুৎফুন্নাহার নিপা (৩৭) একজন উদ্যোক্তা। তার উদ্যোক্তা হওয়ার গল্পটা একটু অন্যরকম। তিনি স্বচ্ছল পরিবারের একজন বউ। অনেকটা শখের বসে শিখেন কেক বানানো। তবে করোনায় ঘরবন্দি সময় কাজে লাগাতে কেক বানিয়ে অনলাইনে বিক্রি শুরু করেন। সাড়াও পান ভালো। এখন ঘরে বসে কেক বিক্রি করে আয় করছেন তিনি।

নিপার বাড়ি ময়মনসিংহের গৌরীপুর পৌর শহরের স্টেশন রোড এলাকায়। তার স্বামী পলাশ মাজহার স্থানীয় পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। দুই মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে আদৃতা উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ছে। ছোট মেয়ে রুপকথার বয়স চার বছর।

২০০৯ সালে আনন্দ মোহন কলেজ থেকে সমাজকর্ম বিষয়ে মাস্টার্স পাশ করা নিপার স্বপ্ন ছিল শিক্ষকতা করার। স্বপ্ন পূরণে তিনি স্থানীয় নুরুল আমিন খান উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগ দিয়েছিলেন খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে। কিন্ত পারিবারিক ব্যস্ততার কারণে দেড় বছরের বেশি এই পেশায় স্থায়ী হতে পারেননি। উদ্যোক্তা হবেন শুরুতে এমনটা ইচ্ছেও ছিলনা তার।

তিনি বলেন, কেক ও সুস্বাদু খাবারের প্রতি ছোটবেলা থেকেই আকর্ষণ ছিল আমার। এর জন্য কোন প্রশিক্ষণ নেইনি। বই পড়ে ও ইউটিউব দেখে পরিবারের জন্য খাবার তৈরি করতাম। করোনাকালীন সময়ে একদিন শখ থেকেই তিনটি কেক তৈরি করে ফেসবুকে ছবি দেই। সাড়া পেয়ে পরিবারের অনুপ্রেরণায় এই পেশায় আসা।

চলতি বছরের ৫ জুন নিজের জমানো ২৫ হাজার টাকা দিয়ে কেকের ব্যবসা শুরু করেন নিপা। ফেসবুকে নিপার পেজ এর নাম - Mamma`s Cake Shop & Bakery. এখানে ভ্যানিলা, চকলেট, লেমন, অরেঞ্জ, ম্যাংগো, রেড ভেলভেট, মিরর গ্লেইজসহ কাস্টমাইজ কেক পাওয়া যায়। এছাড়াও পিৎজা, চিকেন বান ও পুডিং বিক্রি করেন তিনি।।

পেজে অর্ডার আসা কেকগুলোর বেশির ভাগ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য তৈরি করা। ক্রেতা অনলাইনে যোগাযোগ করলে প্রথমে কেকের নকশা দেখানো হয়। আবার ক্রেতা যেকোন নকশা দিলে সেটি হুবহু কেকে ফুটিয়ে তুলেন তিনি। আর দামও নির্ভর করে আকার ও কাস্টমাইজেশনের ওপর। তবে কেক পেতে হলে দুই থেকে তিন দিন আগে অর্ডার করতে হয়।

রাজধানী ঢাকা ও অনলাইন থেকে কেক তৈরির উপকরণ সংগ্রহ করেন নিপা। গত চার মাসে বিক্রি করেছেন প্রায় দেড় শতাধিক কেক। প্রতিদিন অনলাইনে কেকের অর্ডার পান। কেক তৈরির কাজে তাকে সহায়তা করেন বড় মেয়ে আদৃতা। সংসারের কাজের ফাঁকে অনলাইনে কেকের ছবি দেন মা ও মেয়ে। পরে যেগুলো অর্ডার পান সেগুলো ডেলিভারি ম্যান দিয়ে ক্রেতার কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়।

নিপা বলেন, শুধু আয়ের জন্য কেক বানাইনা। কেক বানানো আমার কাছে একটা শিল্প। মানুষ কেক খেয়ে খুশি হলে আমি খুশি। ভবিষ্যতে ব্যবসার পরিধি বাড়ানো ও একটি বেকারি খোলার পরিকল্পনা রয়েছে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
সফল উদ্যোক্তা,শখ
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close