মো. শাহ আলম, খুলনা

  ১৬ অক্টোবর, ২০২১

ভারত থেকে খুলনায় আসতে লাগে ২৮ দিন

পথেই বাড়ছে চালের দাম!

ট্রাকযোগে ভারত থেকে খুলনায় চাল আমদানিতে পথেই কেটে যাচ্ছে ২৮ দিন। বেনাপোল, ভোমরা ও দর্শনা বন্দরে দীর্ঘ যানজট এবং পশ্চিমবঙ্গের পেট্রাপোল, ঘোজাডাঙ্গা বন্দরেও একই অবস্থা থাকায় দীর্ঘ সময় লাগে। ফলে বেসরকারি পর্যায়ে আমদানিতে পরিবহন খরচ বেড়ে যাচ্ছে কয়েকগুণ। পাশাপাশি আমদানি শুল্ক কমলেও ভোক্তা কোন সুবিধা পাচ্ছে না। ভোক্তাকে মোটা চাল কেজি প্রতি ৪৬ টাকা ও চিকন ৬২ টাকা দরে কিনতে হচ্ছে।

পশ্চিমবঙ্গের বশিরহাট শ্রমিক এসোসিয়েশনের নির্বাচনের কারণে চালক সংকট, দুর্গোৎসবের চার দিন ছুটি এবং সয়াবিনের খৈল রপ্তানির কারণে উল্লিখিত তিন বন্দরে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। ২৪ পরগনা জেলার যে কোন মোকাম থেকে খুলনা পর্যন্ত চাল বোঝাই ট্রাক আসতে দীর্ঘ যানজট মোকাবেলা করতে হচ্ছে।

খাদ্য অধিদপ্তরের মনিটরিং ইউনিট এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ভারতে গত মাসের তুলনায় এ মাসে চালের দাম কমেছে। সেপ্টেম্বরে প্রতি টন ৩৭৪ ডলারে বিক্রি হয়, যা এ মাসে কমেছে প্রতি টনে ১৪ ডলার।

খুলনার অটো রাইস মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুর রশিদ বলেছেন, আমদানিকৃত চালের মূল্য কম হওয়ার কথা থাকলেও তা কমেনি। আমদানি না হলে পরিস্থিতি ভিন্ন হতো।

তিনি জানান, পাইকারী ব্যবসায়ীরা কারসাজি করে দাম বাড়াচ্ছে। অভ্যন্তরীণ বাজারে ধানের মূল্য বাড়লেও আমদানিকৃত চালে তার প্রভাব পড়ার কথা নয়। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জন্য চাল উৎপাদনে বিঘ্ন হচ্ছে।

এদিকে, চাল আমদানিতে উৎসাহিত এবং অভ্যন্তরীণ বাজারে মূল্য কমাতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড গত ১২ আগস্ট চালের আমদানি শুল্ক ৫৯ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করেছে। খাদ্য মন্ত্রণালয় ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভারত থেকে আমদানি সময়সীমা বেঁধে দিয়ে গত ১৭ আগস্ট খুলনা তিন প্রতিষ্ঠানকে ৪২ হাজার মেট্রিকটন চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছে।

নগরীর লবণচোরার কাজী এন্টারপ্রাইজ, ইয়ান ইন্টারন্যাশনাল ও কাজী সোবহান ট্রেডিং কর্পোরেশন অনুমতি পাওয়ার পর এ পর্যন্ত ১০ হাজার মেট্রিকটন আমদানি করেছে।

আমদানিকারক কাজী সোবাহান ট্রেডিং এর স্বত্ত্বাধিকারী কাজী নিজাম উদ্দিন জানান, পরিস্থিতির কারণে সরকার ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত আমদানির সময়সীমা বাড়িয়েছে।

তিনি জানান, পশ্চিমবঙ্গের যেকোনো মোকাম থেকে চাল বোঝাই করে খুলনা পর্যন্ত আসতে ২৮ দিন সময় লাগে। ক্ষেত্র বিশেষ ৩০ দিনও লেগে যাচ্ছে। ফলে ভারতে চালের মূল্য কমলেও স্থানীয় বাজারে চালের দাম কমছে না।

তিনি আরও বলেন, মোকাম থেকে বন্দর পর্যন্ত মিনিকেট প্রতি কেজি ৫১ দশমিক ৫০ টাকা এবং স্বর্ণা ৪০ থেকে ৪১ টাকা দাম পড়ে। আমদানিকারক প্রতি কেজিতে এক টাকা লাভে বিক্রি করছে। কিন্তু খুলনার বাজারে মোটা চাল ৪৬ টাকা ও মিনিকেট ৬২ টাকা দরে ভোক্তা কিনছে।

প্রসঙ্গত, চালের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে সরকার সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত প্রতি কেজি ১০ টাকা মূল্যে চাল বিক্রি করছে। এছাড়া খুলনা নগরীতে ৩০ টাকা দরে ওএমএসের চাল বিক্রি হচ্ছে। সরকারি খাদ্য গুদামে ৬০ হাজার মেট্রিকটন এবং বেসরকারি পর্যায়ে ৩০ হাজার মেট্রিকটন চাল মজুদ রয়েছে। মূল্য কমানোর লক্ষ্যে সরকার গত বছরের শুরুতেই জানুয়ারিতে ১৪ জন এবং পরের মাসে ৮ জন আমদানিকারক ভারত থেকে ৪৯ হাজার ৫শ’মেট্রিক টন চাল আমদানির অনুমতি পায়।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
চালের দাম,চাল,খুলনা
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close