reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১

মুরগির সরবরাহ কম লাফাচ্ছে দাম

রাজধানীর বাজারে যে সোনালিকা মুরগির কেজি ২০০ টাকায় নেমেছিল, সেটা এখন ৩০০ টাকায় উঠেছে। একই অবস্থা ব্রয়লার ও দেশি মুরগির দামেও। কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। হঠাৎ করে লাফিয়ে লাফিয়ে মূল্যবৃদ্ধির কারণ সরবরাহ সংকট। এদিকে বেড়েছে চালের দামও। এক সপ্তাহ ব্যবধানে সরু চালের দাম কেজিপ্রতি দুই টাকা বেড়েছে তবে স্বস্তি রয়েছে সবজি বাজারে।

শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ানবাজার ও রামপুরাবাজার ঘুরে দেখা যায়, মুরগি বিক্রি হয়েছে বাড়তি দামে। সীমিত আয়ের মানুষের আমিষের বড় উৎস ব্রয়লার ও সোনালিকা মুরগির দাম নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। গত সপ্তাহে সোনালিকা মুরগি ২০০ টাকা কেজিতে কেনা গেলেও গতকাল বিক্রি হয়েছে ৩০০ টাকা। কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার মুরগি মিলছে ১৬০ টাকায়। আর দেশি মুরগির বিক্রি হয়েছে ৪৫০ থেকে ৪৮০ টাকা কেজিতে। যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০০ টাকা। বিক্রেতারা নানা অজুহাত দিলেও ক্রেতারা তা মানতে নারাজ।

এ দাম বৃদ্ধির বিষয়ে রামপুরার ব্যবসায়ী জহিরুল ইসলাম বলেন, মাসখানেক ধরে বাজারে ব্রয়লার মুরগির চাহিদা বেড়ে গেছে। কিন্তু সরবরাহ তুলনামূলক কম। এ কারণেই দাম বেড়েছে। তিনি বলেন, সরবরাহ বেশি থাকায় কিছুদিন আগেও কেজিপ্রতি ১২০ থেকে ১৩০ টাকায় ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করেছি। এখন সেই মুরগি ১৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে হচ্ছে।

আরেক ব্যবসায়ী মো. রবিউল বলেন, এখন অনেক অনুষ্ঠান হচ্ছে। এসব অনুষ্ঠানের জন্য ব্রয়লার মুরগি কেনা হচ্ছে। তা ছাড়া চাইনিজ রেস্টুরেন্টগুলোতে প্রচুর মুরগি কেনা হচ্ছে। আমাদের ধারণা এসব কারণে দাম বেড়েছে।

এদিকে চালের দাম আরো বেড়েছে। গত সপ্তাহের তুলনায় এই সপ্তাহে নাজিরশাইল ও মিনিকেট দুই ধরনের চিকন চালের দামই বেড়েছে। যে চালের দাম ছিল ৬৪ টাকা কেজি, আজ সেই চাল ৬৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহের তুলনায় চিকন চালের দাম বেড়েছে কেজিতে দুই টাকা। এ ছাড়ার রাজধানীর বাজারে গত সপ্তাহে যে চালের দাম ছিল ৫৮ টাকা কেজি, গতকাল সেই চাল বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকা কেজিতে। ব্যবসায়ীরা বলেছেন, বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক হলে তবেই চালের দাম কমবে।

এ প্রসঙ্গে কারওয়ানবাজারের চাল ব্যবসায়ী আবদুল হাকিম বলেন, মোকাম থেকেই চালের দাম বাড়তি। সে কারণে খুচরা বাজারে চালের দাম কমছে না। তারা প্রতি কেজিতে ২০ থেকে ৩০ পয়সা লাভে চাল বিক্রি করছেন। বেশ কিছু তিন ধরে বাড়ছে এই চালের দাম।

চাল ও মুরগির দামে অস্বস্তি দেখা দিলেও স্বস্তি বিরাজ করছে সবজির দামে। শীতের সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় রাজধানীর বাজারগুলো পাকা টমেটো, গাজর, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি তুলনামূলক কম দামেই কিনতে পারছেন ক্রেতারা। তবে গত সপ্তাহের মতো এখনো বাজারে সবচেয়ে দামি সবজির তালিকায় রয়েছে পটল ও ঢ্যাঁড়স। এ দুটি সবজির কেজি এখনো কোনো কোনো বাজারে ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকায়। শসার কেজি বিক্রি হয়েছে ২০ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে। শিমের কেজি বিক্রি হয়েছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়।

এ ছাড়া মুলার প্রতি কেজি ১৫ থেকে ২৫ টাকা, বেগুন ২০ থেকে ৩০ টাকা, পেঁপে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, গাজর ১৫ থেকে ২৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ফুলকপি, বাঁধাকপির ও লাউয়ের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে। গত সপ্তাহের মতো ফুলকপি ও বাঁধাকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। লাউ বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা পিস।

সবজির মতো সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে পেঁয়াজ, আলু ও ডিমের দাম। খুচরা পর্যায়ে দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা। আলু বিক্রি হয়েছে ১৫ টাকা। এক ডজন ডিম পাওয়া যাচ্ছে ৯৫ টাকায়।

কারওয়ানবাজারের ব্যবসায়ী নূর আলম বলেন, শীতের সবজির সরবরাহ এখনো ভালো আছে। তাই তুলনামূলক কম দামেই সবজি কিনতে পারছেন ক্রেতারা। তবে আর খুব বেশিদিন এই দামে সবজি পাওয়া যাবে না। টমেটো, কপির সরবরাহ কমে আসলেই সব ধরনের সবজির দাম বেড়ে যাবে।

পিডিএসও/ জিজাক

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
মুরগি,দাম,ডিম
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close