আজহার মাহমুদ
বিশ্লেষণ
ভুলে যেতে চাই এমন বিপিএল

এবারের বিপিএল সত্যি বলতে ভিন্ন একটি বিপিএল হিসেবে ইতিহাসে লেখা থাকবে। এমন বিপিএল কেউ আগে কখনো দেখেনি। বিসিবি যেমনটা বলেছেন, কার্যত তেমনি হয়েছে, এটা নতুন এক বিপিএল। তবে সমস্যা একটাই, এ বিপিএল বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তরা, খেলোয়াড়রা এবং স্বয়ং বিসিবিও ভুলে যেতে চাইবে। সমর্থকরা এবারের বিপিএল নিয়ে এতটাই বিরক্ত যে, বিপিএলকে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের বদলে বিনোদন প্রিমিয়ার লিগ, বিতর্ক প্রিমিয়িার লিগ হিসেবে আখ্যায়িত করছে। এর কারণও আছে, সেসব কারণ নিয়েই এ লেখাটি।
বিতর্ক দিয়ে বিপিএল শুরু : এ বিপিএলের শুরুটা হয়েছে ভাঙচুর আর আগুন দিয়ে। এরপরেও টিকিট কালোবাজারি থেমে ছিল না। বরং ঢাকা থেকে সিলেট, সিলেট থেকে চট্টগ্রাম এবং চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা সবখানেই এ কালোবাজারিদের প্রভাব ছিল শতভাগ। সরেজমিনে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দেখা গেছে, একেকজন কালোবাজারির হাতে ২০-২৫টা টিকিট রয়েছে। তারা অনলাইনে এবং অফলাইনে নানা সিন্ডিকেট মেন্টেইন করে এসব টিকিট সংগ্রহ করে। এরপর ২০০ টাকার টিকিট ৫০০ টাকা, ৩০০ টাকার টিকিট ৬০০-৭০০ টাকায় বিক্রি করছে। সাধারণ ক্রিকেটপ্রেমীরা বাধ্য হয়ে সেসব টিকিট কিনছেন। যে কারণে মূলত বিপিএলের প্রথমদিন গেট ভাঙচুর হয়েছিল এবং অন্যদিন আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল ক্ষুব্ধ দর্শকরা।
বিপিএলের লজ্জা রাজশাহী : এবারের বিপিএলের সর্বপ্রথম নাটকীয় মুহূর্ত তৈরি করে দুর্বার রাজশাহী। রাজশাহীর খেলোয়াড়দের অনুশীলন বয়কট গণমাধ্যমে আগুনের ফুলকির মতো ছড়িয়ে যায়। এর কারণটাও পরিষ্কার, বিপিএলের প্রায় অর্ধেক খেলা হয়ে গেলেও ১ টাকাও পায়নি খেলোয়াড়রা। এমনকি টিএ-ডিএ পর্যন্ত পায়নি কিছু কিছু খেলোয়াড়। খেলোয়াড়দের রাজশাহীর মালিক চেক দিলেও সেই চেক বাউন্স করে। এ দলের মালিকপক্ষের এমন কার্যক্রম পুরো বিপিএলকে করেছে কলঙ্কিত। যদিও পরে আশ্বাস আর বিশ্বাস দিয়ে কোনোমতে খেলোয়াড়দের ম্যাচ খেলিয়েছে রাজশাহীর মালিক। কিন্তু তখনো বাকি ছিল আসল নাটক। টানা ১০টা ম্যাচ খেলার পরও যখন খেলোয়াড়রা টাকার মুখ দেখেনি। এমন সময় এ দলের বিদেশি ক্রিকেটাররা হলেন একজোট। তারা সবাই মিলে রাজশাহীর ১১তম ম্যাচটা বয়কট করলেন। ঘটনা এমন পর্যায়ে গেছে শেষ পর্যন্ত মালিকপক্ষ টাকা নিয়ে বিদেশি খেলোয়াড়দের দরজায় কড়া নাড়লেও সাড়া দেয়নি খেলোয়াড়রা। বিসিবিও অনেক চেষ্টা করেছে, তবে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। আর এতেই রচিত হলো বিপিএলের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় লজ্জ্বার রেকর্ড। বিপিএলের ইতিহাসে প্রথম কোনো দল ১১ জন দেশি খেলোয়াড় নিয়ে ম্যাচ খেললো। যদিও সেই ম্যাচে ঘটেছে আসরের সবচেয়ে বড় অঘটন। টেবিলের শীর্ষে থাকা রংপুরকে ১১ দেশি খেলোয়াড় নিয়ে, পাওনা টাকা না পাওয়া মানসিকভাবে বিপর্যস্ত খেলোয়াড়রা হারিয়ে দিল।
রাজশাহী অবশ্য সবার আগে ১২টা ম্যাচ খেলে ফেলেছে। তারা ১২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ৪ নম্বরে অবস্থান করছে। এর মধ্যে আরো একবার বাউন্স করে ক্রিকেটারদের চেক। মোটকথা একটা নাট্যমঞ্চ তৈরি করে ফেলেছেন রাজশাহীর মালিকপক্ষ। এতেই শেষ নয়, রাজশাহীর মালিকপক্ষ পরতে পরতে রেখেছে সাসপেন্স। সবার আগে ১২টা ম্যাচ শেষ করায়, প্লে-অফের সমীকরণে ঝুলছিল দলটির ভাগ্য। তাই এ দলটার হোটেলে থাকার কথা। তখন আরো একটা বিতর্ক ছড়িয়ে দিল এ দলের মালিকপক্ষ। তারা ঘোষণা দিল ঢাকায় বসবাসরত খেলোয়াড়দের হোটেল ছাড়তে। একটা দলের মালিক কতটা নিচে নামলে এমনটা করতে পারে! অনেকেই তখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ দল নিয়ে করেছে ট্রল। প্লে-অফে জায়গা করে নিলে এ মালিকের খরচ বেড়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন নেটিজেনরা।
দলগুলোর রঙ্গ-তামাশা : এবারের বিপিএলকে শুধু রাজশাহী একাই কলঙ্কিত করেছে বিষয়টা এমন নয়। সম্মিলিতভাবে এটা করা হয়েছে। এর মধ্যে চিটাগং কিংসও অন্যতম। এ দলের বিরুদ্ধেও আছে খেলোয়াড়দের টাকা পরিশোধ না করার অভিযোগ। গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, টুর্নামেন্টের প্রায় শেষদিকে চলে আসলেও লংকান ক্রিকেটার বিনোরা ফার্নান্দোকেও কোনো টাকা দেওয়া হয়নি। পরবর্তীতে গণমাধ্যমে সেটি প্রকাশ হলে তড়িঘড়ি করে কিছু অর্থ তাকে দিয়ে সেই আলোচনা বন্ধ করা হয়। তবে পারভেজ হোসেন ইমনের বেলায় দলের মালিক নিজেই স্বীকার করেছেন তাকে কোনো টাকা পরিশোধ করেননি। সেটার কারণ হিসেবে তিনি গণমাধ্যমকে জানান, পারভেজ তাকে ব্যক্তিগতভাবে সেটিসফেকশন করতে পারেনি। একটা দলের মালিক যখন টুর্নামেন্টের প্রায় শেষদিকে এসে একটা খেলোয়াড়কে টাকা না দিয়ে উল্টো এমন কথা গণমাধ্যমে গলা উঁচিয়ে বলে তখন চোখ কপালে উঠে যে কারো। অথচ এ দল আবার ব্রান্ড অ্যাম্বাসেডর ও কানাডিয়ান হোস্ট রেখেছে। মজার বিষয় হচ্ছে সেই ব্যান্ড অ্যাম্বাসেডর শহীদ আফ্রিদিও নাকি টুর্নামেন্টের শেষ সময় পর্যন্ত টাকা পাননি। এ নিয়ে আফ্রিদির এজেন্ট গণমাধ্যমে করেছেন অভিযোগ।
সময়মতো পারিশ্রমিক না দেওয়া, কিংবা পারিশ্রমিক নিয়ে গড়িমাসির কারণটা খুব সহজ। বিপিএল শুরুর আগে বিসিবিকে গ্যারান্টি মানি দিতে হয়। এত বছর ধরে যা ৮ কোটি টাকা করে দিতে হত। এ বছর নানা সমস্যার কারণে সেটা ৩ কোটি করেছে বিসিবি সভাপতি। অথচ সেই ৩ কোটি টাকা দিয়েছে শুধু ফরচুন বরিশাল। বাকি একটা দলও সেই টাকা পুরোটা দেয়নি। কোনো দল তো এক টাকাও দেয়নি! অবস্থা যখন এমন, তখন খেলোয়াড়দের টাকা দেবে কীভাবে? এ দায় তো দলগুলোর একার নয়, দায় এড়াবার কোনো সুযোগ বিসিবিরও নেই। বিসিবি বস কি এ দায় স্বীকার করে কোনো নজির স্থাপন করবেন?
এছাড়াও এ রঙ্গভরা বিপিএলে রঙ্গ দেখানোর জন্য ঢাকা ক্যাপিটালস শেষ দুই ম্যাচের আগে এনেছে অস্ট্রেলিয়ান হোস্ট। অথচ এ দলটা জানে তারা টুর্নামেন্ট থেকে বাদ পড়েছে। শেষ দুই ম্যাচের আগে তারা এ হোস্ট এনে টুর্নামেন্টে মশকরা করেছে। যেটা তারা চাইলে শুরুতেই আনতে পারত। একই কাজ সিলেটেরও। মানসম্মত খেলোয়াড় না এনে হোস্ট রেখে তারা বিপিএলের আলোচনায় আসতে চেয়েছে। চট্টগ্রাম এদিকে এককাঠি সরেস। তারা কানাডিয়ান হোস্টের পাশাপাশি পাকিস্তানি ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডরও নিয়ে এসেছেন। অথচ শহীদ আফ্রিদিকে ১০০ ডলার দিয়ে না কিনে সেই টাকায় ভালো কয়েকটা বিদেশি খেলোয়াড় আনা যেত। এগুলো স্রেফ মশকরা করা দর্শকদের সঙ্গে। আগে নিজের ঘরে চেরাগ না প্রতিবেশীর ঘরে চেরাগ জ্বালানোর মতো কাণ্ড।
ফিক্সিং গুঞ্জন : নানা কারণে সমালোচিত বিপিএলের অন্যতম বড় কলঙ্ক হচ্ছে ফিক্সিং গুঞ্জনের বিষয়টি। বিপিএলে অন্তত ৮টি ম্যাচে অস্বাভাবিক আচরণ এসেছে সন্দেহের তালিকায়। অস্বাভাবিক কিছু নো বল, ওভার দ্য স্টেপে প্রায় এক হাত বাইরে পড়েছে কোনো কোনো বোলারের পা। এমনকি পিচের বাইরে বল পড়েছে একাধিক। বিসিবির দুর্নীতিবিরোধী ইউনিট এ ব্যাপারে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। অন্তত ১২ জন ক্রিকেটারকে লাল তালিকাভুক্ত করেছে তারা। এর মধ্যে একাধিক ক্রিকেটারকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে। এখন দেখার বিষয় তদন্তে শেষ পর্যন্ত কোনো সত্য প্রকাশ হবে কিনা।
চট্টগ্রামের স্টেডিয়ামের নাজুক অবস্থা : বিপিএলে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় দর্শকদের জন্য টয়লেটের ব্যবস্থা খুবই শোচনীয়। বলা যায়, এমন টয়লেট থাকার চেয়ে না থাকা ভালো। একইসঙ্গে নারীদের জন্য আলাদা টয়লেট নেই, এ বিষয়টা আরো দুঃখের। প্রায় প্রতিটি টুর্নামেন্ট কিংবা আন্তর্জাতিক সিরিজে দর্শকরা মাঠে খেলা দেখতে যায়। কিন্তু দর্শকদের পকেট কাটার জন্য খাবারের দোকানগুলো যেন তৈরি হয়ে থাকে। প্রতিটি খাবারের দাম দিগুণ। যদিও এতে বিসিবির দায়টা বড়। কারণ বিসিবি এসব খাবারের দোকানের জন্য বড় অংকের টাকা নিয়ে থাকে। যার জন্য তাদের এত দামে খাবার বিক্রি করতে হয়।
শুধু তা-ই নয়, গ্যালারিতে ময়লা ফেলার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। যার কারণে গ্যালারি অতিরিক্ত অপরিষ্কার এবং ময়লায় ভর্তি হয়ে থাকে। একইসঙ্গে এ বিষয়ে বিসিবি এবং দর্শক উভয়ের আরো সদয় হতে হবে। সেইসঙ্গে চট্টগ্রামের স্টেডিয়ামে সাধারণ দর্শকদের গাড়ি পার্কিং করার কোনো সুযোগ নেই। দর্শকদের কল্যাণে বিসিবির এ দিকটাও নজরে আনা উচিত। সবচেয়ে বড় যে অভিযোগ দর্শকরা করেছেন সেটা হচ্ছে- স্টেডিয়ামে প্রবেশের সময় দর্শকদের কাছ থেকে নেওয়া জিনিসপত্র খেলা শেষে আর ফেরত না পাওয়া। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে এসে মেহেদি হাসান অনিক নামের এক দর্শক লেখককে জানান, আমাদের পকেটে কয়েন থাকে, হেডফোন থাকে, চার্জার থাকে অনেক সময় পাওয়ার ব্যাংকও থাকে। এসব ঢোকার সময় নিয়ে নেয়, কিন্তু পরে আর পাওয়া যায় না। এটা আমাদের সঙ্গে মারাত্মকভাবে অন্যায় করা হয়। বিসিবির উচিত এ বিষয়গুলো দেখা।
আলোচনায় ছিলেন তামিমও : এবারের বিপিএলে আলোচনার অন্যতম নাম ছিলেন তামিম ইকবাল। শুরু থেকে বিপিএল নিয়ে নানা মন্তব্য এবং মাঠে তর্ক-বিতর্ক করে সবসময় শিরোনামে ছিলেন। তামিমই সবার প্রথম এ বিপিএলকে নতুন বিপিএল মনে করতে নারাজ ছিলেন এবং সেটিই বাস্তবে পরিণত হয়েছে। এরপর অবশ্য তামিম আলোচনায় এসেছেন বিপিএলের বাউন্ডারি লাইন ছোট বলা নিয়ে। এর মাঝে আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার ঘটনায় তামিম আরো একবার বিশ্ব মিডিয়ার শিরোনামে পরিণত হয়েছেন। তবে তামিম যেন নিজেকে আলোচনা থেকে দূরেই রাখতে চান না। একবার অ্যালেক্স হেলস আরেকবার সাব্বির, মাঠে আগ্রাসন দেখিয়ে আলোচনায় এসেছেন। সবশেষে ডেভিড মালানকে নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি নিয়েও ফেসবুকে বড় করে স্ট্যাটাস দিয়েছেন তামিম। বলা যায়, এ যেন তামিমময় এক বিপিএল!
গোবরে পদ্মফুল : বিপিএলে এত ভুল, অনিয়ম, অব্যবস্থাপনার মাঝেও কিছুটা ভালো বিষয় ছিল। যাকে গোবরে পদ্মফুল ফোটার সঙ্গে মেলানো যায়। এবারের বিপিএলে মাঠের খেলা তেমন খারাপ ছিল না। বিশেষ করে পিচের কথা বলা যায়। ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম প্রতিটি মাঠের পিচ ছিল চমৎকার। খেলোয়াড় থেকে শুরু করে সবাই এ বিষয়টির প্রশংসা করেছে। আশা করা যায় ভবিষ্যতেও এ ধরনের পিচ থাকবে বিপিএলে। বিগত সময় ঢাকার পিচ এতটা ভালো হতে দেখা যায়নি, এবার এটি নিঃসন্দেহে দারুণ কাজ বলা যায়। এছাড়াও স্টেডিয়ামে বিনামূল্যে পানি পাওয়াটা সত্যি সপ্নের মতো। এ স্টেডিয়ামেই এক গ্লাস পানি খেতে হত ১০ টাকায় কিনে। তৃষ্ণা না মিটলে আবারও ১০ টাকায় পানি কিনতে হত। একটা ৩০ টাকার পানির বোতল কিনতে হত ১০০ টাকায়। সেই পানি বিনামূল্যে খেতে পারাটা অবশ্যই দর্শকদের জন্য বেশ উপকারের। এ ত্যাগ শহীদ মুগ্ধের ত্যাগ, এটা বাংলাদেশের মানুষ আজীবন মনে রাখবে।
এছাড়া বিগত কয়েকটি বিপিএলে কনসার্ট তো দূরের কথা একটা সুন্দর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানও হত না। এবারের বিপিএলে সেই ধারাবাহিকতা ভেঙেছে। দারুণ তিনটা কনসার্ট হয়েছে। এতে দর্শকরা বেশ ভালো বিনোদিত হয়েছেন।
ছোটমুখে বড় কথা : বিসিবিকে পরামর্শ দেওয়া মানে ছোটমুখে বড় কথা বলার মতো। তবুও কিছু পরামর্শ বিসিবিকে দেওয়া উচিত। টিকিট কালোবাজারির দায়টা বিসিবির কাঁধে এবারই প্রথম নয়, প্রায় প্রতি বছরই এ দায় বিসিবিকে নিতে হয়। এটা নিয়ে বিসিবিকে আমি ব্যক্তিগতভাবে একটা পরামর্শ দিতে পারি। টিকিট অগ্রিম কাটার কোনো সুযোগ দেওয়া যাবে না, টিকিট কেটে সঙ্গে সঙ্গে মাঠে প্রবেশ করার ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে কালোবাজারিরা আর টিকিট সংগ্রহ করতে না পারে। এমনিতেই তো টিকিট দিয়ে গেটে প্রবেশ করতে হয়। তখন টাকা দিয়ে টিকিট কিনে তারপর গেটে প্রবেশ করবে সঙ্গে সঙ্গে। এভাবে হলে গ্যালারিতে দর্শক থাকবে শতভাগ। এতে প্রকৃত ক্রিকেটপ্রেমীরাও খেলা দেখা থেকে বঞ্চিত হবে না। কালোবাজারিরা আর সুযোগ পাবে না।
এছাড়া বিসিবির উচিত স্টেডিয়ামের বাইরে লকার সিস্টেম রাখা। যাতে দর্শকরা জিনিসপত্র নিয়ে আসলেও সেগুলো তারা লকার ভাড়া নিয়ে রাখতে পারে। এতে অনেক দর্শক উপকৃত হবে। অনেক দর্শক দূরদূরান্ত থেকে আসেন, তাদের কাছে নানা প্রয়োজনীয় জিনিস থাকবে এটাই স্বাভাবিক। গ্যালারিতে নিরাপত্তার স্বার্থে সেসব নিয়ে যেতে না দেওয়াটাও স্বাভাবিক, কিন্তু বিকল্প ব্যবস্থা তো রাখতে হবে। তারা তো তাদের প্রয়োজনীয় শখের জিনিস এজন্য খুইয়ে দিতে পারবে না।
শুধু তাই নয়, বিসিবির উচিত নিজস্ব লোক দিয়ে খাবারের স্টল করা। ভালো এবং মানসম্পন্ন খাবার যেমন থাকবে তেমনি দামও থাকবে কম। তাহলে দর্শকরা আরো বেশি মাঠে আসার আগ্রহ খুঁজে পাবে এবং এ কাজটি বিসিবির জন্য কঠিন নয়। একইসঙ্গে পার্কিং ব্যবস্থা করা, স্টেডিয়ামের চারপাশে ভলেন্টিয়ার দ্বারা নিরাপত্তা বেষ্টনী আরো জোরদার করার পরামর্শ রইল বিসিবির প্রতি।
লেখক : সাংবাদিক (রিপোর্টার, চট্টগ্রাম সময়)
Azharmahmud705@gmail com
"