reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৩ নভেম্বর, ২০২৪

‘শহীদ পরিবারের পাশে বাংলাদেশ’

সহায়তার পাশাপাশি পুনর্বাসনও করতে হবে

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ৩৬ দিনের মধ্যে আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটাতে অসংখ্য প্রাণ ঝরে গেছে। ওই সময়ে ৮৭১ জনের মৃত্যুর তথ্য এ পর্যন্ত সংকলিত করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এমআইএস)। প্রাথমিকভাবে তালিকাভুক্ত করা হয় জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ১ হাজার ৬০০ জনের বেশি শহীদ এবং ২৪ হাজার আহত ব্যক্তির পরিচয়। এই তালিকা বারবার যাচাই করা হচ্ছে। আহত ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের কাজও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের পক্ষে করা হচ্ছে।

জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে নিহত ও আহতদের পরিবারকে গতকাল শনিবার থেকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া শুরু করে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন। ‘শহীদ পরিবারের পাশে বাংলাদেশ’ শিরোনামে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এ ফাউন্ডেশন থেকে গত মঙ্গলবার আন্দোলনে আহত ২৪৫ জনকে চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হয়। আন্দোলনে শহীদ হওয়া প্রতিটি পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা করে দেওয়া হবে ঘোষণা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম। গত শুক্রবার দুপুরে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ের সামনে প্রেস ব্রিফিংয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম জানান, প্রতি সপ্তাহে ২০০ পরিবারকে এ সহায়তা দেওয়া হবে। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চারটি ধাপে সপ্তাহে ২০০ জনকে সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হবে। আপাতত ঢাকা থেকে এ কার্যক্রম শুরু হবে। পর্যায়ক্রমে আট বিভাগেই শহীদদের পরিবারকে সহযোগিতার কাজ করা হবে।

সারজিস আলম বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে প্রতি শহীদ পরিবার ৫ লাখ ও আহতরা ১ লাখ করে পাবেন। শহীদ পরিবারের মধ্যে সমস্যা না থাকলে যৌথ লগ্নি করে টাকা দেওয়া হবে। পরিবারের মধ্যে কোনো সমস্যা থাকলে যারা লিগ্যাল উইং রয়েছেন, তাদের মাধ্যমে ডিল করা হবে। সহায়তার ক্ষেত্রে বড় ফান্ডগুলো চেকের মাধ্যমে ও ছোটগুলো বিকাশে দেওয়া হবে।’

১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট- ৩৬টি দিন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে এটাই ছিল সবচেয়ে বড় গণ-অভ্যুত্থান। ছাত্র-জনতার প্রতিরোধের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন দলটির সভানেত্রী শেখ হাসিনা। ৩৬ দিনের এ ঘটনাপ্রবাহে ঝরে গেছে অনেক অমূল্য প্রাণ। আহত হয়ে এখনো হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছেন অনেকেই। জীবনের মূল্য কখনো শোধ করা যায় না। যে জীবন চলে গেছে; যে প্রাণ দেশের জন্য শহীদ হয়েছে সেই জীবন অমূল্য। শহীদের রক্তের ঋণ কখনো শোধ করা যায় না। সরকার যে জলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবার এবং আহতদের পাশে দাঁড়িয়েছে এটা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। আমাদের প্রত্যাশা থাকবে, শহীদদের তালিকা সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে সব পরিবারকে আর্থিক সহায়তায় আনা হবে। একই সঙ্গে আহতদের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করার পাশাপাশি তাদের পুনর্বাসনের বিষয়টি নিয়েও সরকারকে ভাবতে হবে। বহু মানুষের রক্তের ত্যাগের বিনিময়ে আমরা ‘নতুন বাংলাদেশ’ পেয়েছি। আজ আমরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে মুক্তভাবে কথা বলতে পারছি। যারা এই স্বৈরাচারমুক্ত জীবনবাজি রেখে রাজপথে নেমে এসেছে, তাদের অবদানকে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close