reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১৮ অক্টোবর, ২০২৪

ডিম নিয়ে ব্যবসায়ীদের কারসাজি বন্ধ হোক

‘ডিম গরিবের প্রোটিন’- এ কথা বহুল প্রচলিত। কিন্তু সম্প্রতি ‘আকাশচুম্বী’ দামে ডিম যেন উঠছে না গরিবের পাতে! ‘সিন্ডিকেট’ কারসাজি করে দফায় দফায় বাড়িয়ে দেওয়ায় ডিমের দাম নির্ধারণ করে দেয় সরকার। তা সত্ত্বেও কোনো কোনো বাজারে সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে না বলেও অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রতিদিনের সংবাদে আগের দিনের বাজারদর উল্লেখ করে বলা হয়, রাজধানীর বিভিন্ন পাইকারি বাজারে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা দরে। এতে প্রতি পিসের দাম পড়ছে ১৩ টাকা ৩৫ পয়সা। অথচ অন্তর্বর্তী সরকার খুচরাপর্যায়ে দাম বেঁধে দিয়েছিল ১১ টাকা ৮৭ পয়সা।

সংবাদমাধ্যম থেকে জানা যায়, সরবরাহ বাড়ানো ও দর নিয়ন্ত্রণে ঢাকায় ডিমের প্রধান দুই পাইকারি বাজার তেজগাঁও ও কাপ্তান বাজারে প্রতিদিন ২০ লাখ ডিম সরবরাহ করবে বলে জানিয়েছে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো। গতকাল থেকে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো ডিম সরবরাহ শুরু করে কাপ্তান বাজারে। এ কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়ক বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি)। সংগঠনটি বলছে, প্রাথমিকভাবে ঢাকায় এ কার্যক্রম শুরু হলেও সারা দেশেই এর প্রভাব পড়বে। এতে ডিমের দাম কমবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।

উল্লেখ্য, ডিমের অন্যতম বড় আড়ত তেজগাঁওয়ে গত রবি ও সোমবার রাতে ডিম বিক্রি বন্ধ রেখেছিলেন ব্যবসায়ীরা। তাদের অভিযোগ, সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দরে তাদের ডিম ক্রয় ও বিক্রয় করতে হচ্ছে। এর ফলে তারা সরকারি সংস্থার জরিমানা ও শাস্তির মুখে পড়ছেন। পরে গত মঙ্গলবার ডিমের উৎপাদক, পাইকারি বিক্রেতা ও সরবরাহে যুক্ত অংশীজনদের নিয়ে বৈঠক করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এতে সিদ্ধান্ত হয়, আগামী দুই সপ্তাহ পরীক্ষামূলকভাবে ডিম উৎপাদক বড় কোম্পানি ও ছোট খামারিরা সরকার নির্ধারিত দামেই সরাসরি পাইকারি আড়তে ডিম পাঠাবে। এর মধ্যে মধ্যস্বত্বভোগী থাকবে না। এর মাধ্যমে পাইকারি বিক্রেতারা সরকার নির্ধারিত দামে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে ডিম বিক্রি করবেন। বিক্রেতারা বলছেন, বড় কোম্পানিগুলোর কারণেই ডিমের বাজারে নৈরাজ্য চলছে। তাই তারা কঠোর নজরদারির তাগিদ দিয়েছেন। পাইকারদের দাবি, পিসপ্রতি প্রায় দেড় টাকা বেশি দরে কেনার কারণে খুচরাতেও দাম পড়ছে বেশি। উৎপাদকপর্যায়ে বড় কোম্পানিগুলোর কারণেই ডিমের বাজারে এই নৈরাজ্য দেখা দিয়েছে বলে দাবি খুচরা ব্যবসায়ীদের। এদিকে ক্রেতারা বলছেন, শুধু দাম বেঁধে দিলে হবে না। সরকার নির্ধারিত দরে বিক্রি হচ্ছে কি না- সে বিষয়ে কঠোর নজরদারি থাকতে হবে। অন্যদিকে দোকানিদের দাবি, সরকারের কঠোর অবস্থানের কারণে খুচরাপর্যায়ে দাম কমে আসতে শুরু করেছে। তাদের মতে, মধ্যস্বত্বভোগীদের তদারকির আওতায় আনতে পারলে বাজার স্থিতিশীল হয়ে আসবে।

ডিমের উপকারিতা সম্পর্কে কারো অজানা নয়। একসময় সুলভমূল্যে পাওয়া যেত বলে নিম্ন আয়ের মানুষ পুষ্টির চাহিদা মেটাতে ডিম খেত। কিন্তু সেই ডিমের দাম ক্রমেই বাড়তে থাকায় তা চলে যাচ্ছে নিম্ন ও মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে। এ অবস্থায় ডিমের দাম কমাতে অন্তর্বর্তী সরকার যে কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছে তা প্রশংসাযোগ্য। তবে সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নে বাজারে তদারকি বাড়াতে হবে সংশ্লিষ্টদের। তা না হলে ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে ডিম নাগালের বাইরে থেকে যাবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close