reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

দ্রুতই বন্যাদুর্গত এলাকার সড়ক সংস্কার করা হোক

প্রতিবছরই কমবেশি বন্যা হয়। তবে এবার সবকিছু ছাপিয়ে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখি হয়েছে মানুষ। বন্যার পানিতে নিমজ্জিত ছিল ১১টি জেলার ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, মাছের ঘের ও ফসলি জমি। বন্যা-পরবর্তী বেশির ভাগ উপজেলার গ্রামীণ সড়কগুলো চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বন্যার পানি কমতে শুরু হওয়ায় সড়কগুলোতে দেখা দিচ্ছে ক্ষতচিহ্ন ও ধ্বংসস্তূপ।

প্রতিদিনের সংবাদে গতকাল প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কুমিল্লা জুড়ে সড়কের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ৩০৯ কোটি টাকার। এ ছাড়া ৬৫ হাজার হেক্টর ফসলি জমি প্লাবিত হয়ে যায়। ফলে ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অন্যদিকে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ফেনীর ক্ষয়ক্ষতি আগের ইতিহাসকে ছাপিয়ে গেছে। এক সপ্তাহের বেশি সময় পানিতে নিমজ্জিত ছিল ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, মাছের ঘের ও ফসলি জমি। বন্যা-পরবর্তী সময়ে পানি সরে যাওয়ার পর বেশির ভাগ উপজেলার গ্রামীণ সড়কের বেহাল দশা দৃশ্যমান হচ্ছে। তেমনি একটি সড়ক জেলার ফুলগাজী উপজেলার দরবারপুর ইউনিয়নের জগতপুর গ্রামের প্রধান সড়ক। শুধু একটি সড়কেই ১৭টি স্থানে ভাঙনের চিত্র দেখা গেছে। এতে যোগাযোগব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে স্থানীয় মানুষজন। এটি দরবারপুর থেকে শ্রীচন্দ্রপুর যাওয়ার অন্যতম সড়ক হিসেবে পরিচিত। এক-একটি ইউনিয়নের গ্রামীণ জনপদ ভেঙে ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম অংশের ৪৫ কিলোমিটারেও দেখা দিয়েছে স্থানে স্থানে খানাখন্দ। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন পরিবহনচালক ও যাত্রীরা।

দেশের অর্থনীতির ‘লাইফলাইন’খ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রামের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়। কোথাও কোথাও হাঁটুসমান পানি হয়। টানা দুদিন মহাসড়কে পানি থাকার কারণে বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে গিয়ে অসংখ্য ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এখন একটু বৃষ্টি হলেই সেগুলো ভরে যায় পানিতে। সড়কে প্রচুর খানাখন্দ। যাত্রীবাহী বাসসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচলে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটছে। ভাঙা রাস্তার কারণেই এই মহাসড়কে প্রতিদিন কোথাও না কোথাও দুর্ঘটনা ঘটছে। বড় গর্তগুলোয় আটকে পড়ার কারণে অনেক সময় গাড়ি বিকল হয়ে যায়। একই কারণে গাড়ির গতি অনেক ধীর হওয়ায় সময় অপচয় হয়, তৈরি হয় যানজট। একই চিত্র দেখা গেছে ফেনীর পরশুরাম উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকায়। উজানের পানির তোড়ে মুহুরী নদীর বড়ইয়া ও জগতপুর গ্রামের বাঁধের বিভিন্ন স্থান ভেঙে সড়কের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। ফলে সড়কের পাশে থাকা দোকানপাট ও বাড়িঘর ভেঙে যোগাযোগ পুরোপুরি ব্যাহত হয়। যানচলাচল ব্যাহত হওয়ায় বেশি দুর্ভোগে পড়েছে শিশু, নারী ও বৃদ্ধরা। জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, বন্যায় জেলায় এলজিইডি ও সড়ক বিভাগের আওতাধীন সড়কের আনুমানিক ১৪০ কোটি ৪৮ লাখ ৪৭ হাজার টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ২১ আগস্ট বন্যা শুরু হলে পরশুরাম বাজার থেকে মির্জানগর ইউনিয়নের উত্তর কাউকে গ্রামে যাওয়ার সড়কটি ভেঙে একেবারে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পরে স্থানীয় শিক্ষার্থীরা স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে কিছু মাটি ও কংকর দিয়ে সড়কটিতে ছোট যানবাহন চলাচলের ব্যবস্থা করেছে।

বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর বেরিয়ে আসছে ভাঙা সড়ক। পানির তীব্র স্রোতে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের কয়েকটি জেলার সড়ক ভেঙে তছনছ হয়ে গেছে। জনজীবন স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। তাই বন্যাদুর্গত এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো দ্রুতই মেরামত করা জরুরি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close