reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ১২ আগস্ট, ২০২৪

এটিএম বুথের সেবা স্বাভাবিক করতে ব্যবস্থা নেওয়া হোক

নিরাপত্তা-সংকটে সেবা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় বেশির ভাগ ব্যাংকের এটিএম বুথ বন্ধ রয়েছে। কিছু বুথ খোলা থাকলেও দেখা গেছে বুথে টাকা নেই। অন্যদিকে বেশির ভাগ ব্যাংকে বৈষম্যের শিকার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনে ব্যাংকিং খাতে চলছে অস্থিরতা। এসবের কারণে পুরোদমে ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু না হওয়ায় ব্যাংকের কার্যালয় বা এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলতে পারছেন না গ্রাহকরা। ফলে নিত্যজীবনে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে জনসাধারণকে। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ফলে দেশ জুড়ে সহিংসতার ঘটনায় এই জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন ব্যাংকিং খাত-সংশ্লিষ্টরা।

সংবাদমাধ্যম থেকে জানা যাচ্ছে, অনেক এটিএম বুথেই লেখা ‘আউট অব সার্ভিস’। কোথাও কোথাও যান্ত্রিক ত্রুটি বা কারিগরি ত্রুটির সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে রেখেছে ব্যাংক। খাত-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো তৃতীয়পক্ষের মাধ্যমে এটিএমে টাকা পৌঁছে থাকে। দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তৃতীয়পক্ষের এই সেবা বন্ধ রয়েছে। এ কারণে এটিএমে টাকার সংকট দেখা দিয়েছে। তাই দেশ জুড়ে বেশির ভাগ ব্যাংকের এটিএম সেবা বন্ধ। যতটা না টাকার সংকট, তার চেয়ে বেশি নিরাপত্তার আশঙ্কায় ব্যাংকগুলো তাদের এটিএম কার্যক্রম কমিয়ে দিয়েছে। চলমান পরিস্থিতিতে টাকা পরিবহনের ঝুঁঁকি নিতে চাচ্ছে না অনেক ব্যাংক ও এটিএমে অর্থ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। আবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকেও চাহিদা অনুযায়ী নগদ টাকা পাওয়া যাচ্ছে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশে গত মে মাস শেষে এটিএম বুথের সংখ্যা ছিল ১৩ হাজার ৪২৮। এর মধ্যে শহরাঞ্চলে ৯ হাজার ৪০৯টি, আর গ্রামাঞ্চলে ৪ হাজার ১৯টি। এটিএম ছাড়া সিআরএমের (ক্যাশ রিস্লাইকিং মেশিন) মাধ্যমেও নগদ টাকা উত্তোলন করা যায়। দেশের বেসরকারি খাতের ব্র্যাক, সিটি, ঢাকা ব্যাংকসহ অনেক ব্যাংক এখন এটিএমের বদলে সিআরএমের প্রতি ঝুঁকছে। সিআরএমে টাকা উত্তোলনের পাশাপাশি নগদ জমারও সুযোগ রয়েছে। এ কারণে ধীরে ধীরে সিআরএমের সংখ্যা বাড়ছে। মে মাস শেষে দেশে সিআরএমের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৪৫০টি। এসব সিআরএমের সিংহভাগই শহরাঞ্চলে ৩ হাজার ৯৮৫টি।

গত সপ্তাহের শেষ কার্যবিদবস বৃহস্পতিবার ব্যাংকের অনেক শাখা বন্ধ রাখতে দেখা গেছে। নিরাপত্তার স্বার্থে প্রধান দরজা বন্ধ রাখতে দেখা গেছে রাজধানীর কোনো কোনো ব্যাংকের। বিকল্প দরজা দিয়ে যাওয়া-আসা করেছেন ব্যাংক কর্মকর্তা ও গ্রাহকরা। ব্যাংকাররা বলছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছেন তারা। যদি কোনো শাখায় নিরাপত্তাঝুঁকি অনুভূত হয়, তাহলে ব্যাংক চাইলে সেসব এলাকার শাখা ও এটিএম বুথ বন্ধ রাখতে পারবে। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসেনি। বিভিন্ন দিকে বিভিন্ন দুর্ঘটনার কথা শোনা যাচ্ছে। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যদি কোনো ব্যাংক কোনো শাখা বা কোনো এটিএম বুথের নিরাপত্তার ঝুঁকি মনে করে, তাহলে সেটি বন্ধ রাখতে পারবে।

দেশের চলমান রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ফলে সাম্প্রতিক সময়ে সংঘটিত সহিংসতায় জনমনে নিরাপত্তা শঙ্কা তৈরি হয়। ফলে দেশে একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়। শিগগিরই আমরা এই সংকট কাটিয়ে উঠতে পারব- এটাই আমাদের বিশ্বাস। দেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নিয়েছে। ব্যাংক ও এটিএম বুথগুলোয় খুব দ্রুতই লেনদেন স্বাভাবিক করতে সরকার প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেবে- এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close