নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীতে শুরু হলো সুতা বস্ত্র ও আনুষঙ্গিক পণ্যের প্রদর্শনী
বিভিন্ন ধরনের সুতা, ফেব্রিক ও আনুষঙ্গিক পণ্য নিয়ে এক বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে এএসকে ট্রেড অ্যান্ড এক্সিবিশনস প্রাইভেট লিমিটেড। রাজধানীর বসুন্ধরা ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটির মেজ্জানিন ফ্লোরের ২নং হলে শুরু হয়েছে ‘১০ম ইয়ার্ন, ফেব্রিক্স অ্যান্ড অ্যাক্সেসরিজ শো-২০২৪’ নামের ৪ দিনব্যাপী বিশেষ এ প্রদর্শনী।
প্রদর্শনীতে একই ছাদের নিচে ১৫০-এরও বেশি আন্তর্জাতিক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের তৈরি বিভিন্ন সুতা, ফেব্রিক এবং রাসায়নিক ও স্ক্রিন প্রিন্টিংয়ের যন্ত্রপাতিসহ তাদের উদ্ভাবনী নানান আনুষঙ্গিক পণ্য প্রদর্শন করছে। প্রদর্শনীটি চলবে আগামী ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বিজিএমইর প্রশাসক আনোয়ার হোসেন এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী সদস্য শাহ মোহাম্মদ মাহবুব এবং খাত সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
মূলত বায়িং অফিস, বায়িং এজেন্ট, আরএমজি রপ্তানিকারক, নিট কম্পোজিট ইউনিট, লেবেল প্রস্তুতকারক, আমদানিকারক এবং মার্চেন্ডাইজারদের উদ্দেশ্য করেই এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। এতে করে নতুন কালেকশনের পাশাপাশি নতুন সরবরাহকারী খুঁজে পাওয়ার এক দারুণ সুযোগ মিলবে এসব প্রতিষ্ঠানের। ফলে সুতা, কাপড় ও আনুষঙ্গিক উৎসের প্রধান গেটওয়ে হিসেবে কাজ করবে এ প্রদর্শনী যেখানে সহজেই সর্বশেষ উদ্ভাবন ও আন্তর্জাতিক পরিসরে নতুন সরবরাহকারীদের খুঁজে পেতে সক্ষম হবেন অংশগ্রহণকারীরা।
প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী সব প্রতিষ্ঠানকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিজিএমইএর প্রশাসক আনোয়ার হোসেন বলেন, পোশাক খাত আমাদের অর্থনীতির মেরুদণ্ড যা দেশের প্রায় ৮০ শতাংশ রপ্তানি আয়ের উৎস। এর মধ্য দিয়ে দেশের লাখো মানুষ তাদের জীবনমান উন্নত করে চলেছে। এ ধরনের আয়োজন তৈরি পোশাক খাতের অগ্রগতিকে আরো বেগবান করবে। একইসঙ্গে এ প্রদর্শনী আমাদের উদ্ভাবন, সহযোগিতা ও স্থায়িত্বের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। এর মাধ্যমে দেশের অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের কাঁচামালের কাঙ্ক্ষিত উৎস দেশ খুঁজে পেতে সক্ষম হবেন।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী সদস্য শাহ মোহাম্মদ মাহবুব বলেন, বিনিয়োগকারী ও বাণিজ্য অংশীদারদের জন্য একটি ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ উদ্যোগ পারস্পরিক প্রবৃদ্ধি অর্জন ও দেশের পোশাক খাতের বিশাল সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সহযোগিতা করবে।
এ প্রদর্শনীর আয়োজক এএসকে ট্রেড এন্ড এক্সিবিশনস প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক টিপু সুলতান ভূঁইয়া বলেন, সুতা, কাপড় ও আনুষঙ্গিক পণ্যের আন্তর্জাতিক সরবরাহকারীদের নিয়ে একটি বিশেষ আয়োজন এটি। আগামী মৌসুমে এ খাতের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও উৎস খুঁজে বের করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এ প্রদর্শনী।
এছাড়াও নিজ সদস্যদের সুবিধা দিতে আয়োজনে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছে বাংলাদেশ গার্মেন্ট বায়িং হাউস অ্যাসোসিয়েশন (বিজিবিএ), মার্চেন্ডাইজিং ব্রাদারহুড অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (এমবিএবিডি), বাংলাদেশ মার্চেন্ডাইজার্স অ্যান্ড সাপ্লাইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএসএ) এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলো। অন্যদিকে নতুন আন্তর্জাতিক বাজার তৈরি হওয়ায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি ২০২৪ সালের জুলাই-এপ্রিল মাসে ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে মোট ৭ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলার বেশি। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা রাজনৈতিক পরিবর্তন এবং পরবর্তীতে প্রধান শিল্প অঞ্চলে শ্রমিক আন্দোলনে সৃষ্ট নানান সংকট ও বিপর্যয়ের পর আন্তর্জাতিক খুচরা পোশাক বিক্রেতা ও ব্র্যান্ডগুলো আবারো বাংলাদেশে ফিরতে শুরু করেছে। এরই মধ্যে নতুন মৌসুমের কাজের অর্ডারও পেতে শুরু করেছে পোশাক খাত। স্থানীয় পোশাক সরবরাহকারীরা জানিয়েছেন, ধীরে ধীরে এ খাতে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসায় আরো বেশি পশ্চিমা বিশ্বের খুচরা বিক্রেতা ও ব্র্যান্ডগুলো কারখানা পরিদর্শন করছে, উৎপাদন নিয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছে।
পোশাক সরবরাহকারীরা বলেন, পশ্চিমা ক্রেতারা পরবর্তী শরৎ ও শীত মৌসুমের জন্য অর্ডার দিচ্ছেন। এতে করে রাজধানীসহ সাভার, আশুলিয়া এবং গাজীপুরের মতো প্রধান শিল্প এলাকার তৈরি পোশাক (আরএমজি) কারখানাগুলোতে উৎপাদন কার্যক্রম প্রক্রিয়া স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে।
"