চট্টগ্রাম ব্যুরো

  ০৮ আগস্ট, ২০২৪

বড় সংকটের পথে জাহাজ ভাঙাশিল্প

ব্যবসায়ীদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ইয়ার্ডের নিরাপত্তা জোরদার

সাম্প্রতিক কোটা সংস্কার আন্দোলন ও অন্য সংকটের জেরে জাহাজ ভাঙাশিল্পে বেশ কিছুদিন ধরে অস্থিরতা চলছিল। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর ইয়ার্ডের নিরাপত্তা নিয়ে বড় ধরনের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশেষত বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের জেরে ইয়ার্ডের নিরাপত্তা জোরদারের জন্য মালিকদের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যান্ড রিসাইক্লার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএসবিআরএ)। এদিকে এক মাসের বেশি সময় ধরে পরিবহন বন্ধ, ব্যবসা না থাকা, শ্রমিক সংকটের কারণে বিশাল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন এ খাতের শিল্প উদ্যোক্তারা।

বিএসবিআরএর দেওয়া সর্বশেষ তথ্যমতে, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিভিন্ন ইয়ার্ডে অন্তত ৩০টি স্ক্র্যাপ জাহাজ কাটিং অবস্থায় পড়ে আছে। কোটা সংস্কার আন্দোলন, সরকারের ঘোষিত সাধারণ ছুটি ও কারফিউ জারির কারণে শিপইয়ার্ডগুলোয় শ্রমিক সংকট দেখা দেয়।

এ কারণে স্ক্র্যাপ জাহাজ কাটা সম্ভব হয়নি। তাছাড়া ব্যাংকের লেনদেনের সময়সীমা কমিয়ে আনায় ও ডলারের দাম ওঠানামার কারণে ব্যবসায়ীরা ইয়ার্ডে থাকা পুরোনো জাহাজ নিয়ে সংকটের মধ্যে পড়েছেন। অন্যদিকে প্রায় ২০টি জাহাজ নতুন করে শিপ ইয়ার্ডে এলেও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র জটিলতায় কাটার অনুমতি মেলেনি। ফলে প্রতিদিনই বড় অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।

চলমান অস্থিরতার জেরে ইয়ার্ডগুলোয় ইস্পাতের কোনো ক্রেতা আসেনি। পাশাপাশি পরিবহন ব্যবস্থা বন্ধ থাকায় ইয়ার্ডগুলোয় মজুদ করে রাখা স্ক্র্যাপও বিক্রি করা যায়নি।

বিএসবিআরএর সহকারী সচিব মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনের পর যতটুকু ব্যবসা ছিল, এখন সেটিও বন্ধের পথে। সবচেয়ে বড় কথা হলো ব্যাংকের সুদ প্রতিদিনই বাড়ছে। পাশাপাশি গতকাল সরকারের পদত্যাগের ঘোষণায় নিরাপত্তাহীনতায় পড়েছে জাহাজ ভাঙাশিল্প। এজন্য ইয়ার্ডে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট ঠেকাতে মালিকদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের পরামর্শ দিয়েছি।’ আরেফিন এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী হোসাইনুন আরেফিন বলেন, ‘দেশে কোনো পুলিশ-প্রশাসন এখন নেই। আমাদের আসলে কী করা উচিত সেটাই বুঝতে পারছি না। তাই যারাই দেশের ক্ষমতা গ্রহণ করুক না কেন, তাদের কাছে আমরা সার্বিক নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করার অনুরোধ করছি।’

শ্রমিকরা জানান, জাহাজ ভাঙাশিল্পের আগের জৌলুস এখন আর নেই। শ্রমিকের সংখ্যাও কমে গেছে। তবে যারা এ পেশায় এখন যুক্ত আছেন, তারাও সংকটের মধ্যে রয়েছেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close