নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৫ মার্চ, ২০২৩

অর্থনৈতিক অঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস ও বিদ্যুতের দাবি

শিল্পপ্রতিষ্ঠানে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ কঠিন হয়ে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীদের দাবি, দেশের অন্যান্য স্থানে গ্যাস-বিদ্যুৎ থাকুক বা না থাকুক, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোয় সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখতে হবে। সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এফবিসিসিআই আয়োজিত বাংলাদেশ বিজনেস সামিটের শেষ দিন ‘ইনভেস্টিং ইন ইকোনমিক জোনস : প্রগ্রেস অ্যান্ড প্রায়োরিটি অপরচুনিটিজ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে ব্যবসায়ীরা এ দাবি জানান।

অনুষ্ঠানে মডারেটর ছিলেন আনোয়ার গ্রুপের এমডি হোসেন খালেদ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আবদুল মোনেম ইকোনমিক জোনের এমডি এ এস এম মঈনউদ্দীন মোনেম ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন।

মঈনউদ্দীন মোনেম বলেন, ইকোনমিক জোনে গ্যাস-বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ রাখার নীতি গ্রহণ করতে হবে। এখানে স্বল্পমেয়াদি নয়, দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের ব্যবস্থা থাকতে হবে। অনেক প্রতিষ্ঠান ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে নানা জটিলতায় পড়ে, এটি দূর করতে হবে। এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন বলেন, ‘?অর্থনৈতিক অঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস-বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। অর্থনৈতিক অঞ্চল বা ইপিজেডকে অন্য অঞ্চলের সঙ্গে তুলনা করলে চলবে না। অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর বড় বড় শিল্প-কারখানায় বিনিয়োগ আসছে। ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ ও সাপ্লাই চেইনে বিনিয়োগ বাড়ানো এখন বড় চ্যালেঞ্জ। ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ প্রডাক্টে বিনিয়োগ আনতে হবে।’ ডান অ্যান্ড ব্রাডস্ট্রিট সামের প্রধান নির্বাহী (সিইও) রাজেশ মিরচান্দানি বলেন, ‘?বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে ইজ অব ডুয়িং বিজনেসে বাংলাদেশের অবস্থান ভালো নয়।

বাংলাদেশকে অবশ্যই অবস্থার উন্নতি করতে হবে। যদিও এ সূচক পরিমাপের প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।’ বাংলাদেশ সাপ্লাই চেইন সোসাইটির সিইও নকিব খান বলেন, ‘?১০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হবে ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চলে। আমাদের জন্য সাপ্লাই চেইন এখন বড় চ্যালেঞ্জ। এ খাত ছাড়াও লজিস্টিক সাপোর্টেও বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।’

আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশের (অ্যামচেম) সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ বলেন, ‘?ইকোনমিক জোন আছে। কিন্তু এর বাইরেও উন্নতি করতে হবে। বিমানবন্দরের উন্নতি করতে হবে। ওয়্যারহাউসের নিয়ম অনেক পুরোনো। কাস্টমস এবং ওয়্যারহাউসের আইন অন্যান্য দেশের মতো সংস্কার করে আধুনিক করতে হবে। এতে রাজস্ব আয়ও বাড়বে। রেল বাংলাদেশের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। কার্গো পরিবহনে রেলকে কাজে লাগাতে হবে। ১৫ বছর ধরে এয়ারপোর্টে প্রফেশনাল স্ক্যানার নেই। এটা নিয়ে আমরা বলে আসছি। তারপরও কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ নেই।’ এদিকে বিজনেস সামিটে ‘সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব : বেসরকারি খাতের ভূমিকা এবং বিনিয়োগ সুযোগ’ শিরোনামে একটি কর্ম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন ঢাকা ইস্টার্ন বাইপাস এক্সপ্রেসওয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম আকন, পিপিপি কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মুশফিকুর রহমান, এমসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ব্যারিস্টার নিহাদ কবির, বাংলাদেশে পিডব্লিউসির ম্যানেজিং পার্টনার মামুন রশিদ, বাংলাদেশে নিযুক্ত কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জং কিউন, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের পরিচালক তাকিও কোইকি এবং পিপিপি কর্তৃপক্ষের মহাপরিচালক আবুল বাশার প্রমুখ। অধিবেশন সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক মো. নাফিউল হাসান।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে সরকারি- বেসরকারি অংশীদারত্ব (পিপিপি) প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রধান বাধা হলো জমি অধিগ্রহণ এবং আমলাতান্ত্রিক জটিলতা। সরকারি কর্মকর্তারা মনে করেন, পিপিপিতে বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা অংশীদার নয়, এমন মানসিকতা বদলাতে হবে।

মূল প্রবন্ধে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নাসের এজাজ বিজয় বলেন, ‘সব পিপিপি প্রকল্পের জন্য আগে থেকে সম্ভাব্যতা যাচাই করা খুব জরুরি। এছাড়া প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র প্রক্রিয়ার এবং প্রকল্প থেকে মুনাফা আসবে কিনা তা যাচাই করা উচিত।’ তিনি ক্রয় প্রক্রিয়ায় সুশাসন নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন।

ঢাকা ইস্টার্ন বাইপাস এক্সপ্রেসওয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম আকন বলেন, ‘বাংলাদেশে পিপিপি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রতা একটি বড় বাধা। অন্যদিকে জমি অধিগ্রহণ করতে দীর্ঘ সময় লেগে যায় এবং নানা জটিল পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। অন্তত ৮০ শতাংশ জমি অধিগ্রহণের পর পিপিপি চুক্তির বিধান করা উচিত।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close