দেশি চামড়া যথাযথভাবে সংরক্ষণের মাধ্যমে চামড়া খাতের উন্নয়নে আন্তর্জাতিক মানের কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার বা সিইটিপি জরুরি বলে উল্লেখ করেছেন ব্যবসায়ীরা। রবিবার এফবিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যবিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির এক সভায় এ কথা বলেন তারা। এ সময় পণ্যটির রপ্তানি সম্ভাবনাকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে শিগগির এটি বাস্তবায়নের আহ্বান জানানো হয়েছে।

সভায় এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, চামড়া বাংলাদেশের অন্যতম সম্ভাবনাময় একটি খাত। শতভাগ মূল্য সংযোজন হচ্ছে এ খাতে। চামড়াজাত পণ্য তৈরির জন্য কাঁচা চামড়া আমদানি করতে হয়। অথচ উন্নত ব্যবস্থাপনার অভাবে পচে নষ্ট হচ্ছে দেশীয় কাঁচা চামড়া। দ্বিতীয় বৃহত্তম এ রপ্তানি খাতের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সাভারের হেমায়েতপুরে অবস্থিত কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগারের (সিইটিপি) আন্তর্জাতিক মান দ্রুত বাস্তবায়ন জরুরি। বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের বিকাশ ঘটাতে কমপ্লায়েন্স ও সার্টিফিকেশন প্রয়োজন বলেও মনে করেন এফবিসিসিআই সভাপতি। এ খাতে আধুনিকায়নে তরুণদের অন্তর্ভুক্তি দরকার বলেও জানান তিনি। দেশীয় চামড়া সংরক্ষণে প্রতিটি জেলায় একটি করে হিমাগার ও আধুনিক পশু জবাইখানা নির্মাণ করা যেতে পারে বলে মত দেন এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী যথাযথভাবে পশু জবাই পরিচালনা করা গেলে এটিও একটি ভালো ব্যবসার উৎস হতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি। এফবিসিসিআইয়ের সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী বলেন, চামড়া সংরক্ষণে হিমাগারের ব্যবহার বাড়ানো গেলে চাহিদা অনুযায়ী বছরের যেকোনো সময় কাঁচা চামড়ার জোগান দেওয়া সম্ভব। সভায় স্ট্যান্ডিং কমিটির ডিরেক্টর ইনচার্জ শাহীন আহমেদ বলেন, চামড়া একটি সম্ভাবনাময় খাত। মোট চাহিদার প্রায় ৬০ ভাগ কাঁচা চামড়াই আসে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে। কিন্তু উন্নত ব্যবস্থাপনার অভাবে সেগুলো যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা হয় না। দেশি কাঁচা চামড়া সংরক্ষণের মাধ্যমে আমদানি কমাতে আধুনিক সøটার হাউস বা পশু জবাইখানার ব্যবস্থা ও পর্যাপ্ত হিমাগার নির্মাণ অত্যন্ত জরুরি। সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিটির চেয়ারম্যান ও লেদারেক্স ফুটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ নাজমুল হাসান সোহেল। চামড়া খাতের উন্নয়নে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সার্টিফিকেশন ব্যবস্থা ও পশু জবাই স্থানগুলোর বাণিজ্যিকীকরণ করার আহ্বান জানান তিনি। বৈঠকে আরো বক্তব্য দেন নাসিব সভাপতি মির্জা নুরুল গণি শোভন, কমিটির কো-চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিন মজুমদার, অনিরুদ্ধ কুমার রয়সহ কমিটির অন্য সদস্যরা। চামড়াশিল্পকে বাঁচাতে লবণের মূল্য কমানো, স্থানীয়ভাবে রাসায়নিকের কারখানা নির্মাণ, বন্ড লাইসেন্স প্রক্রিয়া সহজীকরণ করার দাবি জানান বক্তারা। এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক হাফেজ হারুন, মো. নাসের, মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হক প্রমুখ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

"