নিজস্ব প্রতিবেদক
যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি বেড়েছে

দেড় বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ভালো করছে বাংলাদেশ। চলতি বছরের প্রথম ৭ মাসে (জানুয়ারি-জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের ব্র্যান্ড ও ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে ৫৭১ কোটি ডলারের পোশাক রফতানি করা হয়েছে বাংলাদেশ থেকে। ২০২১ সালের একই সময়ের তুলনায় দেশটিতে এ বছর পোশাক রফতানি বেড়েছে ৫৪.৪৩ শতাংশ। ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলের (অটেক্সা) হালনাগাদ পরিসংখ্যান থেকে এমন তথ্য মিলেছে। সাভারের রানা প্লাজা ধসের পর বাংলাদেশের পোশাক কারখানার কর্মপরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন উঠলে বাজারটিতে রফতানি কমে যায়। চীন-যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে ২০১৯ সালে বাজারটি আবারও বাংলাদেশকে বেছে নেয়। করোনার কারণে রফতানি নিম্নমুখী হলেও গত বছরের মে মাস থেকে বাজারটিতে বাংলাদেশের পোশাক রফতানি আবার বাড়াতে শুরু করে। অটেক্সার মতে, ২০২১ সালের একই সময়ের তুলনায় বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রফতানি ৫৪.৪৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যেখানে সমগ্র বিশ্ব থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানি ৩৯.০৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। উল্লিখিত সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে ৫.৭১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পোশাক আমদানি করেছে।
এদিকে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে গত দুই মাসে (জুলাই ও আগস্ট) ১ দশমিক ৪১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পোশাক রফতানি হয়েছে। যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২০ দশমিক ৫২ শতাংশ বেশি।
পোশাক খাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দেশটিতে মূল্যস্ফীতি ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। এ কারণে ব্র্যান্ডগুলোর বিক্রয়কেন্দ্রে পোশাকের বিক্রি কিছুটা কমে গেছে। সাম্প্রতিক সময়ে ওয়ালমার্ট, গ্যাপের মতো বড় ক্রেতা প্রতিষ্ঠান পোশাক তৈরির ক্রয়াদেশ কমিয়ে দিচ্ছে। চলমান ক্রয়াদেশও বিলম্বে জাহাজীকরণ করতে বলছে।
এ প্রসঙ্গে তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ পরিচালক মো. মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, মূলত করোনা মহামারি থেকে ঘুরে দাঁড়ানো এবং ভোক্তাদের কেনাকাটা বৃদ্ধির ফলে খুচরা বিক্রয় স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বৃদ্ধি পায়। তবে মূল্যস্ফীতি, ফেডের হার বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে মন্দার কারণে ২০২২ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধির এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা কতটা টিকে থাকবে, সেটি ভাবনার বিষয়। অস্বাভাবিক দীর্ঘ গ্রীষ্মের কারণে শীতের পোশাকের চাহিদাও তুলনামূলক কম বলে উল্লেখ করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের বড় বাজার। সাড়ে ৯ বছর আগে সাভারের রানা প্লাজা ধসের পর বাংলাদেশের পোশাক কারখানার কর্মপরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন উঠলে বাজারটিতে রফতানি কমে যায়। তারপর কারখানার কর্মপরিবেশ উন্নয়নে ব্যাপক সংস্কার করেন উদ্যোক্তারা। ফলে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে বাংলাদেশের পোশাক রফতানি।
"