নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৪ আগস্ট, ২০২২

ইনোভেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠায় ১০০ কোটি টাকা চায় এফবিসিসিআই

২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশ ও ২০৪১ সালে উন্নত দেশে পরিণত হবে বাংলাদেশ। তাই স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও উন্নত দেশে পরিণত হতে উদ্ভাবনকেন্দ্রিক শিল্পোন্নয়নের ওপর বাড়তি মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। এজন্যই ইনোভেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)। আর এটি বাস্তবায়নে দুই ধাপে সরকারের কাছ থেকে ১০০ কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা চেয়েছে সংগঠনটি। সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে এ-সংক্রান্ত একটি চিঠি দেয় এফবিসিসিআই। এরপর তাদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের সুপারিশ জানিয়ে গত ৩১ জুলাই অর্থ বিভাগে চিঠি দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গিয়েছে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, শুধু সরকারি অর্থায়নে এ ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ না করে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব (পিপিপি) ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করাই ভালো। এ প্রসঙ্গে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা ‘সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং’-এর (সানেম) নির্বাহী পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান বলেন, সরকারি-বেসরকারিভাবে এ ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত। শুধু সরকারের টাকায় এ উদ্যোগ গ্রহণ করা ঠিক হবে না। এ উদ্যোগে এফবিসিসিআইকেও বিনিয়োগ করতে হবে। ইনোভেশনের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী প্রশিক্ষণ গ্রহণের উদ্যোগ নিতে হবে। তাহলে এর সুফল পাওয়া যাবে।

এফবিসিসিআই নিজেই বড় ব্যবসায়ীদের সংগঠন হলেও অনেক সময় এত বড় তহবিল গঠনে অনেকেই আগ্রহী হন না বলেও উল্লেখ করেন তিনি। কারণ যারা এ ধরনের প্রকল্প হাতে নেয় তারা মনে করেন সুবিধা হয়তো অন্যরা নেবে। কিন্তু সরকার যদি যুক্ত থাকে তাহলে সবাই মনে করে এ সুবিধা সবাই পাবে। তাই তিনি মনে করেন এ ক্ষেত্রে শুধু সরকারি অর্থ নয় এফবিসিসিআইয়েরও অর্থায়ন করা উচিত।

এফবিসিসিআই চিঠিতে বলেছে, একুশ শতকে বিশ্ব অর্থনীতির নতুন শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে এশিয়া। অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে এশিয়ার এ আত্মপ্রকাশে বাংলাদেশও একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। এ অঞ্চলের অন্যান্য উন্নত দেশের মতোই অর্থনৈতিক পাওয়ার হাউস হিসেবে রূপান্তরের পর্যায়ে পৌঁছেছে। ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশ এবং ২০৪১ সালে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার যাত্রা করেছে বাংলাদেশ। যেহেতু প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াতে উদ্ভাবন একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, তাই সরকারি ও বেসরকারি উভয় ক্ষেত্রে সঠিক উদ্ভাবন কৌশলের প্রয়োগ অপরিহার্য। একই সঙ্গে উদ্ভাবনকেন্দ্রিক শিল্পোন্নয়নের ওপর বাড়তি মনোযোগ দেয়া প্রয়োজন। কেননা উদ্ভাবনই হবে উন্নয়ন মডেলের কেন্দ্রবিন্দু, যা আমাদের নতুন নতুন সুযোগ তৈরি করবে। উদ্ভাবন ও গবেষণার মাধ্যমেই স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ এবং চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও শিল্পোন্নয়নের জন্য অ্যাকাডেমিয়ার সঙ্গে ইন্ডাস্ট্রির সেতুবন্ধনও জরুরি। এ সেতুবন্ধনই সৃজনশীল চিন্তাগুলোকে উদ্ভাবনে রূপান্তরের জন্য কৌশলগত দিকনির্দেশনা দেবে। এসব লক্ষ্য সামনে রেখেই ইনোভেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছে এফবিসিসিআই। এ ইনোভেশন সেন্টারের উদ্দেশ্য হচ্ছে ‘কানেকটিং আইডিয়া’; যার মাধ্যমে তরুণদের সৃষ্টিশীল ধারণাগুলোকে বাস্তব রূপদানে সহায়তা করবে। এ উদ্যোগটি সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য সরকারের আর্থিক সহায়তা ও অংশীদারত্ব প্রয়োজন বলে মনে করছে এফবিসিসিআই। এজন্য ইনোভেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠায় প্রথম পর্যায়ে ৫০ কোটি টাকা এবং পরবর্তী পর্যায়ে ৫০ কোটি টাকা মোট ১০০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে সংগঠনটি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close