আলী আজীম, মোংলা (বাগেরহাট)

  ৩০ জুন, ২০২২

রেকর্ড গড়ল মোংলা বন্দর

গাড়ি আমদানি চালু হওয়ার ১৪ বছর পর এই প্রথম চট্টগ্রাম বন্দরকে পিছনে ফেলে সর্বোচ্চ গাড়ি আমদানির রেকর্ড গড়ল মোংলা বন্দর। বিগত বছরের তুলনায় সব রেকর্ড ভেঙে মোংলা বন্দর চট্টগ্রামকেও ছাড়িয়ে গেল। চলতি অর্থবছরে (২০২১-২২) এ বন্দরে গাড়ি আমদানি হয়েছে ২০ হাজার ৮০৮টি, যা এ যাবত কালের সর্বোচ্চ। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। ২০০৯ সালে আট হাজার ৯০৯টি গাড়ি দিয়ে মোংলা বন্দরে গাড়ি আমদানি শুরু হয়। এরপর ধারাবাহিকভাবে গাড়ি আমদানি বাড়তে থাকে।

পদ্মা সেতু উদ্বোধন হওয়ায় এখন মোংলা বন্দর থেকে ঢাকায় যেকোনো পণ্য পরিবহনে সময় লাগবে মাত্র ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা। ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের দূরত্ব ২৬০ কিমি., সেখানে ঢাকা থেকে মোংলা বন্দরের দূরত্ব ১৭০ কিমি.। ফলে তুলনামূলক একটি গাড়ি বন্দর থেকে খালাসের পর খুবই কম সময়ে ও স্বল্প খরচে ঢাকাসহ দেশের বহু জায়গায় পৌঁছাতে সক্ষম হবে বিধায় মোংলা বন্দর ব্যবহার করে গাড়ি আমদানি উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (ট্রাফিক) মোস্তফা কামাল বলেন, চলতি অর্থবছরে মোংলা বন্দর দিয়ে গাড়ি আমদানি হয়েছে ৬০ শতাংশ। আর চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি হয়েছে ৪০ শতাংশ। ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশের দুই বন্দরে গাড়ি আমদানি হয়েছে ৩৪ হাজার ৭৮৩টি। এর মধ্যে মোংলা বন্দরের মাধ্যমে ২০ হাজার ৮০৮ এবং চট্টগ্রাম বন্দরের আমদানি হয়েছে ১৩ হাজার ৯১৩টি গাড়ি। বিগত অর্থবছরের তুলনায় এটাই সর্বোচ্চ রেকর্ড বলেও জানান তিনি।

মোস্তফা কামাল আরো বলেন, মোংলা বন্দরে গাড়ি আমদানি বৃদ্ধির কারণগুলো হলো:-১) আমদানিকারকদের কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা। ২) বন্দর থেকে আমদানি গাড়ি স্বল্পসময়ের মধ্যে খালাসকরণ। ৩) আমদানি গাড়ি রাখার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষের উন্নতমানের শেড ও ইয়ার্ড নির্মাণ। ৪) আমদানি গাড়ির নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে সার্বক্ষণিক টহল ও সিসিক্যামেরা মনিটরিং ব্যবস্থা।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়াল অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মুসা বলেন, মোংলা বন্দরে গাড়ি আমদানি ক্রমেই বেড়ে চলেছে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, আমদানিকারকদের বন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা, স্বল্প সময়ের মধ্যে এই বন্দর থেকে গাড়ি খালাস, আমদানি গাড়ি রাখার জন্য উন্নতমানের শেড ও ইয়ার্ড নির্মাণ এবং আমদানি গাড়ির নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে সার্বক্ষণিক টহল ও সিসিক্যামেরায় মনিটরিং ব্যবস্থা রাখা।

তিনি আরো বলেন, সময় এবং অর্থ সেভ হওয়ার কারণে আমদানিকারকরা এই বন্দরকে বেছে নিয়েছেন। এখন পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় ব্যবসায়ীদের আরো সুযোগ তৈরি হলো। ব্যবসায়ীরা গাড়ি আমদানি করে দ্রুতই এখান থেকে সড়ক পথে মাত্র সাড়ে তিন ঘণ্টায় গাড়ি নিয়ে ঢাকায় পৌঁছাতে পারবেন। এতে করে ব্যাপক লাভবান হবেন। সড়ক ব্যবস্থায় উন্নতি হওয়ায় গাড়ি আমদানি বৃদ্ধিসহ এ বন্দরে ব্যাপক কর্মযজ্ঞের সৃষ্টি হবে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বারবিডা) সভাপতি মো. হাবিবুল্লাহ ডন বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার ফলে আমাদের ব্যবসায়ীদের আমদানি করা শতাধিক গাড়ি মোংলা বন্দর দিয়ে সাড়ে তিন ঘণ্টায় ঢাকায় পৌঁছে গেছে। সেতু চালু হওয়ায় এই বন্দর দিয়ে গাড়ি আমদানির আগ্রহ বেড়েছে বলেও জানান তিনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close