নিজস্ব প্রতিবেদক
এলডিসি উত্তরণের পরও বাণিজ্য সুবিধা চায় সরকার
২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের পরবর্তীতে আরো কয়েক বছর বাংলাদেশ বিশ্ব বাজারে বাণিজ্য সুবিধা পাবে বলে আশা করছে সরকার। গত ১২ থেকে ১৬ জুন সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অনুষ্ঠিত বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) মন্ত্রী পর্যায়ের দ্বাদশ সম্মেলনের (এমসি১২) মাধ্যমে চলমান বাণিজ্য সুবিধা অব্যাহত রাখার ব্যাপারে সুযোগ তৈরি হয়েছে বলে সরকার মনে করছে।
ডব্লিউটিওর মন্ত্রী পর্যায়ের ১২তম সম্মেলনের বিষয়ে রবিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ এসব কথা বলেন। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্শি কোভিড আক্রান্ত হওয়ায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হননি। তার অনুপস্থিতিতে পূর্বনির্ধারিত সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য সচিব সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তপন কান্তি ঘোষ বলেন, সম্মেলনে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এলডিসি উত্তরণের পর আরো কয়েক বছর বাজার সুবিধা অব্যাহত রাখার বিষয়ে জোরালো প্রস্তাব দেওয়া হয়।
অন্তত ৬ থেকে ৯ বছর বাজার সুবিধা বৃদ্ধি করার জোরালো দাবি জানায় বাংলাদেশ। তিনি বলেন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার আওতায় প্রাপ্ত সুবিধাগুলো আরো কিছু সময় পর্যন্ত বৃদ্ধির যৌক্তিকতা আছে মর্মে সম্মেলনে অভিমত প্রকাশ করা হয়েছে। এর ফলে পরে এ বিষয়ে আরো আলোচনার পথ সুগম হলো। আশা করছি, আগামী বছর ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য ১৩তম সম্মেলনে ভালো কিছু ফল পাওয়া যাবে।
বাণিজ্য সচিব আরো বলেন, এমসি ১২ সম্মেলনে মৎস্য খাতে ভর্তুকির বিষয়ে একটি চুক্তি অনুমোদিত হয়েছে। এর ফলে অবৈধ ফিশিং ভেসেলে কোনো ভর্তুকি প্রদান করা যাবে না এবং প্রয়োজনের অতিরিক্ত মৎস্য আহরণ করা যাবে না। এলডিসিভুক্ত কোনো দেশ এ সিদ্ধান্ত অমান্য করলে সে দেশের বিরুদ্ধে মামলা করা যাবে। এছাড়া কোভিড-১৯ এবং ভবিষ্যৎ মহামারি মোকাবিলা করার জন্য সংশ্লিষ্ট খাতের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে প্রযুক্তি হস্তান্তরের বিষয়ে গুরুত্ব প্রদান করে ট্রিপস চুক্তি মোতাবেক বাণিজ্য সহজ করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে খাদ্যদ্রব্য রপ্তানির ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপ না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
তপন কান্তি ঘোষণ জানান, সম্মেলন চলাকালীন বাণিজ্যমন্ত্রী সিঙ্গাপুর, নেপাল, ইউরোপিয়ন ইউনিয়ন এবং ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাদা দ্বিপক্ষীয় সভা করেন। দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং এলডিসি উত্তরণের পরও বাংলাদেশের জন্য বাজার সুবিধা অব্যাহত রাখার দাবি জানানো হয়। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্য সচিব বলেন, নেপালের সঙ্গে পিটিএ স্বাক্ষর নিয়ে আলোচনা করা হয় এবং সিঙ্গাপুর বাংলাদেশের সঙ্গে এফটিএ স্বাক্ষরের আগ্রহ প্রকাশ করে।
উল্লেখ্য, জেনেভায় অনুষ্ঠিত ডব্লিউটিওর মন্ত্রী পর্যায়ের দ্বাদশ সম্মেলনের আউটকাম ডকুমেন্টসহ ৭টি সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং জেনারেল কাউন্সিলের ৩টি সিদ্ধান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্শির নেতৃত্বে ৬ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
"